বিশ্বব্যাংকের স্বীকৃতিতে সুরঞ্জিতের বিস্ময়

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় উন্নীত হয়েছে, বিশ্বব্যাংকের এমন স্বীকৃতিতে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

 

‘নিম্ন আয়ের দেশ থেকে বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশ। আমরা এখন মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায়’ বিশ্বব্যাংকের এই তালিকা প্রকাশ করা নিয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি। প্রতিবছর ১ জুলাই বিশ্বব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে মাথাপিছু মোট জাতীয় আয় অনুসারে দেশগুলোকে চারটি আয় গ্রুপে ভাগ করে।

 

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীতে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ (আইইবি)’-এ আওয়ামী তরুণ লীগ কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত চলমান রাজনীতি বিষয়ে আলোচনা সভায় একথা বলেন তিনি।

 

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘আমরা জানতাম না যে, ওরা (বিশ্বব্যাংক) একথা বলতে পারবে। যারা পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে টাকা ফেরত নিল তারাই এই স্বীকৃতি দিল। আসলে কেউ কিছু অর্জন করলে অর্জন স্বীকার করতে হয়।

 

এর পেছনে যিনি রয়েছেন, যিনি নিরলস-অবিচলভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি আর কেউ না, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর একক কৃতিত্ব তার বলে উল্লেখ করেন তিনি।’

 

সুরঞ্জিত আরো বলেন,‘গতকাল আমরা যে সুখবর পেলাম, তা দেশের জন্য গৌরবের, মর্যাদার এবং উজ্জ্বল ভাবমূর্তির লক্ষণ। এটি দেশের দল, মত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য গৌরবের।

 

‘এই অর্জন নতুন কিছু চমক নয়’ এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এটি বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগে নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি। যে ভিশন আওয়ামী লীগ দেখিয়েছে, এই অর্জন আমাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস সঞ্চার করেছে। যা আগামী দিনে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ থেকে বেরিয়ে এসে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে আত্মবিশ্বাসে শক্তি জোগাবে।

 

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উদেশ্যে তিনি বলেন, ‘ওনি তো অনেক কথাই বলছেন। সরকার নির্বাচন দিতে ভয় পায়, পালিয়ে গিয়ে লুকাবারও জায়গা পাবে না। কিন্তু তিনি তো নিজেই নির্বাচন করতে ভয় পান, নির্বাচন এলে পালিয়ে বেড়ান। ওনি আগে মনস্থির করুন উগ্রবাদী-জঙ্গিবাদী রাজনীতি করবেন, না গণতান্ত্রিক পন্থায় রাজনীতি করবেন। আর গণতান্ত্রিক পথে রাজনীতি করতে গেলে ওনাকে আগে উগ্রবাদী জামায়াত পরিত্যাগ করতে হবে।’

 

দলীয় লোকদের বাধার কারণে ব্যাংক জালিয়াতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না- সংসদে অর্থমন্ত্রীর এই মন্তব্যের কথা উল্লেখ করে সুরঞ্জিত বলেন, ‘এটা বারণ কেন। ওনি প্রধানমন্ত্রীর সামনে একথা বলে কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কোর্টের দিকেই বল ঠেলে দিয়েছেন। কারণ দেশের কাছে, দলের কাছে একমাত্র অপরিহার্য হল শেখ হাসিনা।’

 

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘দেশের অগ্রগতির পথে যদি কেউ বাঁধা হয়ে দাড়ায়, তাদের বিরুদ্ধে আপনাকে ব্যবস্থা নিতেই হবে। কারণ, দেশের মানুষের আশা-ভরসার একটাই আশ্রয়স্থল শেখ হাসিনা।’

 

লতিফ সিদ্দিকীর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘সংসদ সদস্য পদ যায় দুই কারণে। একটি হলো দলের বিরুদ্ধে সংসদে ভোট দিলে। আরেকটি ওই সংসদ সদস্য দল থেকে পদত্যাগ করলে। কিন্তু তিনি কোনোটিই করেননি। তাই বুঝতে হবে, তার সদস্য পদ আছে। আর দল সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়। কিন্তু নির্বাচিত করে সংসদীয় এলাকার জনগণ। তাই দল থেকে বহিস্কার করা হলেও সংসদে তিনি স্বতন্ত্র সদস্য হিসেবে সংসদীয় এলাকার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন।

 

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মোসলেহউদ্দিন মসুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক নারায়ণ দেবনাথ, তরুণ লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম, বঙ্গবন্ধু একাডেমীর মহাসচিব হুমায়ুন কবির মিজী, সাম্যবাদী দলের নেতা হারুন চৌধুরী।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ জুলাই ২০১৫/এনআর/শাহনেওয়াজ