ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

‘বাংলাদেশ সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবে’

সাইফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫৬, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘বাংলাদেশ সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবে’

ডেস্ক রিপোর্ট : অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ একটি মহান ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ভারত ও রাশিয়ার বীরযোদ্ধারা।

 

তারা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের ব্যাপক পরিবর্তনের প্রশংসা করেন এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি বিজয়ী ও মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে এ দেশ ও জনগণের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

 

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া এক সংবর্ধনায় এ কথা বলেন তারা।

 

ভারতের ২৯ জন এবং রাশিয়ার ৫ জন যোদ্ধা সস্ত্রীক বাংলাদেশের ৪৬তম বিজয় উৎসবে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছেন। বিজয় উৎসবে যোগ দিতে বাংলাদেশে আসায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের ধন্যবাদ জানান।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৪৫ বছর আগে আপনাদের অবদানের কথা আমরা সবসময় স্মরণ করি। যে ত্যাগ স্বীকার আপনারা করেছেন আমাদের জনগণ তা সবসময় মনে রাখবে।

 

অনুষ্ঠানে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতা লে. জেনারেল (অব.) জি এস সিহোতা, রুশ প্রতিনিধিদলের নেতা কজুরিন ভিক্টর, ভারতের বীরযোদ্ধা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ভানোত মদন মোহন, এয়ার কমোডর (অব.) চন্দ্র মোহন সিংলা এবং ভাইস অ্যাডমিরাল (অব.) রমন প্রেম সুথানও বক্তৃতা করেন।

 

সংবর্ধনায় বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, ভারতের ৪ সামরিক কর্মকর্তা, ভারত ও রুশ দূতাবাসের কর্মকর্তা এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

কজুরিন ভিক্টর তার বক্তৃতায় স্বাধীনতার পর চট্টগ্রাম বন্দরে একজন মেরিন অফিসার হিসেবে মাইন অপসারণে তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। মাইন অপসারণের অভিজ্ঞতা নিয়ে রুশ ভাষায় লেখা একটি বই তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেন। তিনি বইটি বাংলায় অনুবাদের এবং এর অর্থ বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে ব্যয়ের আকাঙ্খা ব্যক্ত করেন।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে কথা বলতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পুরোপুরি বিকৃত করা হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে তার সরকার ক্ষমতায় এসে স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান ও ত্যাগ স্বীকারকারী বিদেশি বন্ধুদের স্মরণের প্রক্রিয়া শুরু করে।

 

বাংলাদেশে যুদ্ধের দিনগুলো স্মরণ করে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের প্রধান লে. জেনারেল (অব.) জি এস সিহোতা বলেন, আজ যখন তারা বাংলাদেশে পৌঁছান তখন তারা পরিবর্তিত দেশ দেখতে পেয়েছেন।

 

বিজয় দিবস উদযাপনে যোগ দিতে তাদের আমন্ত্রণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে লে. জেনারেল সিহোতা বলেন, তারা ভারতের জনগণ এবং ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সকলের শুভেচ্ছা নিয়ে এসেছেন।

 

তিনি বলেন, ‘আমরা এই দেশের সমৃদ্ধি কামনা করি।’

 

পাকিস্তান বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তারের পর স্বাধীনতা যুদ্ধকালে নিজের বন্দিদশার স্মৃতি স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, অবরুদ্ধ অবস্থায় তারা বাড়ির কক্ষ থেকে বের হওয়ার সুযোগ পেতেন না, সেখানে তিনি পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে বন্দি ছিলেন।

 

তবে তিনি স্মরণ করেন, যখন বিমান হামলা হতো তখন শব্দ শুনতে পেতেন এবং ধানমন্ডির ওই বাড়ির কক্ষ থেকে সামান্যই দেখতে পেতেন।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদিও বাংলাদেশ ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন হয়, তবে, তারা পরের দিন বন্দিদশা  থেকে মুক্ত হন। এ সময় পাকিস্তান বাহিনী বাড়ি পাহারায় ছিল। তারা বলাবলি করছিল, ‘নিয়াজী সারেন্ডার করতে পারে, তবে আমরা সারেন্ডার করবো না।’

 

শেখ হাসিনা বলেন, ১৭ ডিসেম্বর সকালে মেজর অশোক তারার নেতৃত্বে ভারতীয় আর্মির একটি টিম এই বাড়িতে আসে এবং পাকিস্তানি ফোর্সকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করে। এরপর তারা মুক্ত হন।

 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা সময় এসবই নিষিদ্ধ করে রাখা হয়েছিল, তবে এখন জনগণ বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম যথেষ্ট উৎসাহী এবং তারা প্রকৃত ইতিহাস জানতে চায়।’

 

তথ্যসূত্র : বাসস

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ ডিসেম্বর ২০১৬/সাইফ/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়