ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শোক ও শ্রদ্ধা

এনএ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:১২, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শোক ও শ্রদ্ধা

আজ ১৪ ডিসেম্বর। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাঙ্গালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে বেদনাদায়ক দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় যখন সুনিশ্চিত, ঠিক তখন পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনী পরিকল্পিতভাবে বেছে বেছে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করে।

 

স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বুঝতে পেরেছিল, পরাজয় তাদের অনিবার্য। তখন তারা বিজয়ী বাঙালি জাতি যাতে ভবিষ্যতে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে তার হীন চক্রান্ত করে। পরিকল্পিতভাবে তালিকা ধরে বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘৃণ্যতম অপকর্ম করে ঘাতক চক্র।

 

রাতের আঁধারে তারা বরেণ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের চোখ বেঁধে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর তাদের গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে ঢাকার মিরপুর, রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে লাশ ফেলে রেখে যায়।

 

১৪ ডিসেম্বর চারদিকে যখন পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের রব, ঠিক তখনই ঘাতকরা মুনীর চৌধুরী, ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, সন্তোষ ভট্টাচার্য, শহীদুল্লাহ কায়সার, সিরাজুদ্দিন হোসেন, আবুল খায়ের, গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, মনিরুজ্জামান, আনোয়ার পাশা, নিজাম উদ্দিন আহমেদ, রশিদুল হাসান, সিরাজুল হক খান, ডা. আলীম চৌধুরী, ডা. ফজলে রাব্বি, নাজমুল হক, খন্দকার আবু তালেব, ডা. আমির উদ্দিন, সাইদুল হাসান প্রমুখ বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে।

 

আজ আমরা গভীর শোক ও শ্রদ্ধাবনত চিত্তে তাদের স্মরণ করছি। সহমর্মিতা জানাচ্ছি শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের স্বজনদের প্রতি। তাঁদের হারিয়ে বাংলাদেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। জাতির অপূরণীয় সেই ক্ষতির পর ৪৫ বছরে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়েও সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে দেশ।

 

১৯৭১- এর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হওয়ার পর বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড তদন্তের প্রথম উদ্যোগ নেন জহির রায়হান। ‘বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড তথ্যানুসন্ধান কমিটি’ গঠিত হয়। জহির রায়হান ছিলেন তার আহবায়ক। কিন্তু ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি জহির রায়হান নিখোঁজ হয়ে যান। সে সময় তিনি মিরপুরে তার ভাই শহিদুল্লাহ কায়সারের খুনের ব্যাপারে খোঁজ করতে গিয়েছিলেন। এরপর তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। তার নিখোঁজের বিষয়টি এখনও রহস্য হয়ে আছে।

 

জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারানোর কারণে একাত্তরের পরের প্রতিটি বছর বিজয়ের আনন্দের সঙ্গে মিশে থাকছে শোকের সন্তাপ। আমাদের একটু সান্ত্বনা এই যে বুদ্ধিজীবী হত্যায় জড়িত কয়েকজন শীর্ষ ঘাতকের বিচার ও শাস্তি কার্যকর হয়েছে।

 

বুদ্ধিজীবী হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ও আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত আল-বদর বাহিনীর সর্বোচ্চ নেতা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে গত ১১ মে। একাত্তরের বদর কমান্ডার আলী আহসান মো. মুজহিদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে গত বছরের ২২ নভেম্বর।

 

তবে আমাদের এখানে থেমে থাকলে চলবে না। বুদ্ধিজীবী হত্যায় আরো যারা জড়িত তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। আমরা চাই অবিলম্বে সব বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের বিচার ও  দণ্ড কার্যকর করা হোক।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ডিসেম্বর ২০১৬/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়