ব্যারিস্টার মঈনুলের বিরুদ্ধে মাসুদা ভাট্টির মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক : সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে একটি মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূরের আদালতে মাসুদা ভাট্টি মামলাটি দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে নথি পর্যালোচনা করে আদেশ পরে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
মাসুদা ভাট্টি আদালতকে জানান, গত ১৬ অক্টোবর রাতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ৭১ এ প্রচারিত মিথিলা ফারজানা সঞ্চালিত ৭১ জার্নালে টক শো চলাকালে মাসুদা ভাট্টি ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনকে প্রশ্ন করেন, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় যে হিসেবে উপস্থিত থাকেন, আপনি বলেছেন, একজন নাগরিক হিসেবে উপস্থিত থাকেন, কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে বলেন, আপনি জামাতের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত থাকেন কি না? উত্তরে ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন বলেন, শোনেন, দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি চরিত্রহীন বলে আমি মনে করতে চাই।’ এরপর আমি সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব দেখিয়ে অন্য প্রশ্ন করি।
তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর থেকে ফেসবুক, টেলিফোনে মঈনুল হোসেনের পক্ষে নোংরা ভাষায় কথা বলা হচ্ছে। পরে তাকে ক্ষমা চাইতে বললে তিনি চাইলেন না। উল্টো ফেসবুকে ম্যাসেঞ্জারে তার পক্ষ হয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
বাদী মনে করেন, মঈনুল হোসেনের এরূপ কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য তার জন্য মানহানিকর ও কুৎসা রটনাকারী হিসেবে গণ্য এবং সকল নারী জাতিকে অপমান করা হয়েছে। এটা শুধু নারীর জন্য নয়, সব নাগরিকের জন্য অবমাননাকর, আপত্তিকর, চরম অসহনশীলতার পরিচায়ক ও উদ্বেগজনক। ভবিষ্যতে স্বাধীন সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম এবং মানবিকতার জন্য হুমকিও বটে।
মাসুদা ভাট্টির আইনজীবী কাজী নজিরুল্লাহ হিরু আদালতকে বলেন, ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন এ ধরনের বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে বাদীর মানহানি করেছেন। নারীর শালীনতার অমর্যাদার লক্ষ্যে অধিকার লঙ্ঘন করে আসামি অপরাধ করেছেন, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
তিনি বলেন, বিষয়টি বাদীর জন্য অত্যন্ত অসম্মানের এবং তার মতো অসংখ্য নারী সাংবাদিকের জন্য চরম অবমাননাকর। এই ঘটনার প্রতিবাদে সারা দেশে নারী সাংবাদিক ও নারী সংগঠনগুলো ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে এবং ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানায়। এর পর তিনি একটি খোলা চিঠি লিখলেন। তার একটুও অনুশোচনা হলো না। খোলা চিঠি দিয়ে তিনি আরো জানান দিয়ে দিলেন। মায়ের জাতি, পেশাজীবীকে অপমান করা হয়েছে।
বিষয়টি অতীব গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার প্রার্থনা জানিয়ে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন আইনজীবী। মামলায় চারজনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ অক্টোবর ২০১৮/মামুন খান/রফিক
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন