ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ভূমিকম্প : ঠাকুরগাঁওয়ে ১১১১ পরীক্ষার্থীর অকৃতকার্যের আশঙ্কা

তানভীর হাসান তানু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪১, ২৬ এপ্রিল ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভূমিকম্প : ঠাকুরগাঁওয়ে ১১১১ পরীক্ষার্থীর অকৃতকার্যের আশঙ্কা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : সময় তখন দুপুর ১২টা ১৩ মিনিট। অনার্স ২য় বর্ষের পরীক্ষা চলছিল। এমন সময় খাতা থেকে কলম সরে যাচ্ছে পরীক্ষার্থীদের। কোনোভাবেই কলম ফিরিয়ে খাতায় বসাতে পারছে না তারা। শুধু খাতা নয়, বসার আসনগুলোও এদিক-সেদিক বেঁকে চলে যাচ্ছে।

 

এভাবে ১৫ সেকেন্ড চলার পর পরীক্ষাকেন্দ্রে দায়িত্বরত শিক্ষকরা ভূমিকম্প হচ্ছে জানিয়ে সবাইকে তাড়াতাড়ি কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। এ সময় তিনতলা থেকে তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে প্রায় ১৫ জন পরীক্ষার্থী আহত হয়েছেন এবং পরীক্ষার হলের দায়িত্বে থাকা এক আয়া (অফিস সহকারী) জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

 

এ ঘটনার ১৫ মিনিট পর আবারো শুরু হয় পরীক্ষা। এরপর ১২টা ৪৮ মিনিটে শুরু হয় দ্বিতীয় দফার ভূকম্পন। এবারো তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে আহত হয় বেশ কিছু শিক্ষার্থী। এর পরপরই ঘণ্টা পড়ে যায় পরীক্ষা শেষ হওয়ার। ঘণ্টা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষার্থীরা সময় বাড়ানোর অনুরোধ জানায় কলেজ কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু তাতে রাজী হয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ।

 

এ ঘটনায় কৃতকার্য না হওয়ার আশঙ্কায় পড়েছেন ওই কেন্দ্রে এক হাজার একশত এগারো জন পরীক্ষার্থী। শনিবার ঠাকুরগাঁও সরকারি মহিলা কলেজে এ ঘটনা ঘটে। এদিন এ কেন্দ্রে অর্নাস বিভিন্ন বিষয়ের পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা শুরু হয় সকাল ৯টায়।

 

ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী মিজানুর ও সুরভী জানায়, ভূমিকম্পের ফলে খাতা কলম ফেলে হল থেকে সবাই বেরিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে আবার পরীক্ষা শুরু হলে দ্বিতীয় দফায় ভূমিকম্পে আবার বেরিয়ে পড়তে হয়। এভাবে দৌড়াদৌড়ির কারণে আমরা এক ঘণ্টা পরীক্ষা দিতে পারিনি। চার ঘণ্টার পরীক্ষা তিন ঘণ্টায় শেষ হওয়ার কারণে এই সাবজেক্ট নিয়ে সবাই চিন্তিত।

 

পরীক্ষার্থী সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘ভূমিকম্পের আতঙ্কে  আমরা সব উত্তর লিখতে পারিনি। এই বিষয়ে সবার রেজাল্ট খারাপ হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে অনুরোধ ব্যাপারটি নিয়ে বিবেচনা করার।’

 

এ ব্যাপারে কেন্দ্র সচিব ঠাকুরগাঁও সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর লায়লা আরজুমান্দ বানু জানান, ভূমিকম্পের কারণে সকলে আতঙ্কিত হয়ে পরীক্ষার হল থেকে বেরিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের লেখার বেশি সময় দিতে চাইলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শনের টিম তা নাকোচ করে দেয়।

 

ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. গোলাম কিবরিয়া মন্ডল জানান, বিষষটি বিবেচনার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যানকে জানানো হবে।

 

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ১০ মিনিট সময় বাড়িয়ে দিতে পারত কর্তৃপক্ষ। এবারও ভূমিকম্পের আগের সময়টুকু যেহেতু লিখেছে অকৃতকার্য হওয়ার কোনো কারণ দেখছি না।

 

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঠাকুরগাঁও/২৬ এপ্রিল ২০১৫/তানভীর হাসান তানু/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়