দ্বিতীয় ধরলা সেতু নির্মাণকাজ এগিয়ে চলেছে
বাদশাহ সৈকত || রাইজিংবিডি.কম
এগিয়ে চলেছে দ্বিতীয় ধরলা সেতু নির্মাণকাজ
বাদশাহ সৈকত, কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামের ফলুবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের কুলাঘাট এলাকায় এগিয়ে চলছে দ্বিতীয় ধরলা পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের কাজ।
লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলা লাগোয়া ১৯১ কোটি ৭৬ লাখ ৬৩ হাজার ২২৩ টাকা ব্যয়ে ৯৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯.৮ মিটার প্রস্থ এ সেতুর কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিমপ্লেক্স নাভানা জেভি। সেতু বাস্তবায়নে কাজ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ।
২০১৪ সালের মে মাস থেকে ২৬ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও সময় বাড়ানো হয়েছে আরো ১ বছর। এ হিসেবে কাজ শেষ হবে ২০১৭ সালের জুন মাসে। এ পর্যন্ত ৪০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের ফুলবাড়ী উপজেলার প্রকৌশলী শামছুল আরেফিন খান জানান, মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩৩ কোটি ৭২ লাখ ৫৬ হাজার ৯০৬ টাকা।
এ ছাড়া ফুলবাড়ী অংশে সংযোগ সড়ক নির্মাণে ব্যয় ৪ কোটি ৭৬ লাখ ১ হাজার ৮১৫ টাকা ও লালমনিরহাট অংশে ৮ কোটি ৮৩ লাখ ৮৭ হাজার ৩৫২ টাকা। নদী শাসনে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৩ কোটি ২৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ও সেতু বিদ্যুতায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৫ লাখ ৭২ হাজার ১৫০ টাকা।
সেতুটি নির্মিত হলে সুবিধা পাবে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার প্রায় ৭ লাখ মানুষসহ লালমনিরহাট সদর উপজেলার মানুষ। এ চার উপজেলার মানুষের দ্রুত যাতায়াতের সুবিধাসহ প্রসার ঘটবে ব্যবসা বাণিজ্যের।
ফুলবাড়ী উপজেলার বাসিন্দা ইউনুছ আলী আনন্দ জানান, সেতুটি নির্মিত হলে ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার মানুষের লালমনিরহাট, রংপুর কিংবা ঢাকার সঙ্গে যোগোযোগের দুই ঘণ্টা সময় বেঁচে যাবে। নৌকায় করে নদী পার হতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এতে করে এ অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দ্রুত চিকিৎসাসেবা ও ব্যবসায়ীক সাফল্য থেকে বঞ্চিত ছিল। সেতুটি নির্মাণকাজ শেষ হলে সব ক্ষেত্রেই সুবিধা ভোগ করবে মানুষ।
ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নজির হোসেন বলেন, এ তিন উপজেলার মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি দ্বিতীয় ধরলা সেতু নির্মিত হচ্ছে। সেতুটি নির্মাণকাজ শেষ হলে অবহেলিত এ জনপদের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা কেটে যাবে। দীর্ঘ পথ ঘুরে আর রংপুর ও ঢাকায় যেতে হবে না। ব্যবসায়ীরা দ্বিতীয় ধরলা সেতু দিয়েই তাদের মালামাল আনা-নেওয়া করতে পারবেন।
ভুরুঙ্গামারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুন্নবী চৌধুরী জানান, সেতুটি নির্মাণকাজ শেষ হলে দেশের সীমান্ত ঘেঁষা জেলার ভারতের সীমান্ত লাগোয়া তিন উপজেলার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটবে। পাশাপাশি বঙ্গসোনাহাট স্থলবন্দর থেকে খুব সহজেই কয়লা পাথরসহ অন্যান্য পণ্য সামগ্রী দেশের যেকোনো প্রান্তে পাঠাতে পারবেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। এতে করে খরচ অনেকটাই কমে যাবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী শামছুল আরেফিন খান জানান, সেতু নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণ ও বন্যার কারণে অনেক সময় কাজ বন্ধ ছিল। এজন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আবেদনের ভিত্তিতে কাজ শেষ করার সময়সীমা এক বছর বাড়ানো হয়েছে।
সেতু বাস্তবায়নকারী স্থানীয় সরকার বিভাগ কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন জানান, দ্বিতীয় ধরলা সেতু নির্মাণ কাজের প্রায় ৪০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পাইলিং ও পিলার নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্মাণের যাবতীয় কাজ শেষ হবে।
রাইজিংবিডি/কুড়িগ্রাম/১৩ ডিসেম্বর ২০১৬/বাদশাহ সৈকত/রিশিত
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন