কারাবন্দি মেয়র মান্নান আরো এক মামলায় গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর : গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মেয়র কারাগারে বন্দি অধ্যাপক এম এ মান্নানকে আরো একটি মামলায় গ্রেপ্তারের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

 

শুক্রবার গাজীপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তাকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেন।

 

গাজীপুর আদালতের ইন্সপেক্টর মো. রবিউল ইসলাম জানান, টঙ্গী শিলমন এলাকার মো. রমিজ উদ্দিন বৃহস্পতিবার রাতে এমএ মান্নানসহ ৭ জনের নামে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ২-৩ জনের বিরুদ্ধে জয়দেবপুর থানায় চাঁদাবাজি ও মারধরের মামলা করেন।

 

শুক্রবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কারাবন্দি মান্নানকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন। আদালতের বিচারক মো. ইলিয়াস রহমান আসামি এমএ মান্নানকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেন।

 

এদিকে বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র এমএ মান্নানকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আপিল বিভাগ বহাল রাখেন। ফলে কারামুক্তির অপেক্ষায় ছিলেন মেয়র মান্নান।

 

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বাদী মো. রজিম উদ্দিন টঙ্গী শিল্প এলাকায় তার নিজ জমিতে কারখানা করার জন্য ‘এনওসি’ সার্টিফিকেটের (অনাপত্তি সনদ) জন্য গাজীপুর সিটি মেয়র এমএ মান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

 

এ প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর বাদী তার কাগজপত্রসহ মেয়রের কার্যালয়ে যান। এ সময় মেয়রের কার্যালয়ের সঙ্গে থাকা একটি রুমে নিয়ে মেয়র মান্নান তার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে তাকে কারখানা করতে দেবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়।

 

দাবিকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে এমএ মান্নানের নির্দেশে অন্যান্য আসামি মেয়রের এপিএস মো. বিল্লাল হোসেন, মো. রইচ উদ্দিন, আরিফ হাওলাদার, মো. সালাউদ্দিন, মো. আমিনুল ইসলাম লিটু ও মো. কাওসারসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২-৩ জন তাকে মারধর করেন।

 

একপর্যায়ে তিনি চিৎকার করলে মান্নান তার গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন। এ সময় আসামিরা তার কাছ থেকে নগদ ৫৫ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোনসেট ছিনিয়ে নেন। আর চাঁদা না দিলে তাকে হত্যা করে বস্তায় ভরে নদীতে ফেলে দেবে বলে হুমকি দেন। এ মামলায় মেয়র মান্নানসহ ৭ জনকে নামে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ২-৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।

 

এদিকে সিটি করপোরেশনের ত্রাণ ও দরিদ্র তহবিলের টাকা আত্মসাতের দুদকের মামলায় ১৯ জুন মেয়র মান্নানকে সব শেষ গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বৃহস্পতিবার এ মামলায় তার জামিন সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ আপিল বিভাগ বহাল রাখেন।

 

গাজীপুরে মেয়র মান্নানের আইনজীবী মো. শহীদুজ্জামান জানান, যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোলবোমা হামলার মামলায় গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মেয়র এমএ মান্নানকে ঢাকার বারিধারার বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২২ মামলায় জামিনের পর হাইকোর্ট থেকে জামিন লাভের পর চলতি বছরের ২ মার্চ তিনি কারামুক্ত হন। এপ্রিল মাসে তিনি মেয়র পদ ফিরে পান।

 

এ অবস্থায় চলতি বছর ১৫ এপ্রিল এমএ মান্নানকে ফের নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে তাকে ফের বরখাস্ত করা হয়। গত ১৫ এপ্রিল থেকে তিনি কারাগারে আছেন। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে মোট ২৮টি মামলা হয়েছে।

 

 

রাইজিংবিডি/গাজীপুর/২৫ নভেম্বর ২০১৬/হাসমত আলী/রিশিত