চলতি মাসেই বিআইএন রেজিস্ট্রেশন শুরু

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : দেশের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে অনলাইনে ভ্যাট সেবা দিতে চলতি মাসেই ইলেকট্রনিক বিজনেস আইডেনটিফিকেশন নম্বর (ই-বিআইএন) রেজিস্ট্রেশন শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।

শনিবার বিএফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত কর ব্যবস্থাপনাবিষয়ক বিতর্ক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ তথ্য  জানান তিনি।

এ বছরের জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হচ্ছে এমন  সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘চলতি মাস থেকে দেশের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে অনলাইনে মূল্য সংযোজন কর  (মূসক/ভ্যা ট) দিতে পুরোনো বিজনেস আইডেনটিফিকেশন নম্বরের (বিআইএন) পরিবর্তে নতুন ইলেকট্রনিক বিআইএন নিবন্ধন নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই রেজিস্ট্রেশন শুরু করা হবে। কারণ আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন ২০১২ কার্য্কর হতে যাচ্ছে। এ নিয়ে  কোনো সংশয় নেই। নতুন আইন বাস্তবায়ন হলে রাজস্ব কাঠামোতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।’

তিনি বলেন, ‘কর বিষয়ে আইনি জটিলতা দূর করতে আমাদের একটি ট্রাইব্যুনাল কাজ করছে। তবে আজকের অনুষ্ঠান থেকে কর ফাঁকিবাজদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ যে ট্রাইব্যুনালের ধারণা পেলাম আমি আইনজীবীদের সঙ্গে এ বিষয়ে আইনগত দিক পর্যালোচনা করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেব।’

এনবিআরের বেশ কিছু সাফল্য তুলে ধরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘এ বছরের জুন পর্যন্ত ২৫ লাখ করদাতা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও আমরা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে ২৭ লাখ ৫০ হাজার করদাতা সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছি। রাজস্ব কাঠামো শক্তিশালী করতে আমাদের জনবল ৯ হাজার থেকে বৃদ্ধি করে ২১ হাজারে উত্তীর্ণ করা হয়েছে, আয়কর মেলার পাশাপাশি আয়কর সপ্তাহ ও রাজস্ব সংলাপসহ গণমাধ্যমের সঙ্গে অংশীদারিত্ব কার্যক্রম গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। আইনি সংস্কার ও করের বোঝা না বাড়িয়ে করের পরিধি সম্প্রসারণ ও করদাতাদের প্রণোদনা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকার রাজস্ব আহরণকে উন্নয়নের অক্সিজেন হিসেবে মনে করছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য রাজস্ব আহরণের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বাড়ানো হচ্ছে।’

কর কর্মকর্তাদের দেশপ্রেমে অনুপ্রাণিত হয়ে কর আহরণ প্রক্রিয়াকে  তরান্বিত করার প্রতি গুরুত্বারোপ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘কর কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে লাল, হলুদ ও সবুজ এ তিন শ্রেণিতে চিহ্ণিত করা হয়েছে। যারা হলুদ ও লাল তালিকায় রয়েছে তাদেরকে দেশপ্রেমে অনুপ্রাণিত করে সবুজ তালিকায় আনার উদ্যোগ চলছে। এ ছাড়া আয়করের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে শক্তিশালী করে কর আদায়ে নজরদারি আরো বাড়ানো হচ্ছে।’

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘মানুষের মধ্যে যে করভীতি রয়েছে সে ভীতি দূর করার জন্য কীভাবে কর ব্যবস্থাপনাকে আরো সহজ করা যায় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কর নিরূপণ ও কর আদায় প্রক্রিয়া সহজ ও জনবান্ধব করার লক্ষ্যে কর গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষকে কর প্রদানকারীর সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করতে হবে। তাহলেই কর আদায়ের পরিধি বাড়ানো সহজ হবে। অন্যদিকে কর ফাঁকি দেওয়ার মানসিকতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।’

প্রতিযোগিতায় সরকারি দল হিসেবে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ও বিরোধী দল হিসেবে প্রাইম ইউনিভার্সিটি অংশ নেয়।  আয়কর ব্যবস্থাপনা নিয়ে আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ ও শিরীনা বিথী।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ মার্চ ২০১৭/এম এ রহমান/সাইফুল