ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মাশরুম চাষে ইয়াকুবের ভাগ্য বদল

রফিকুল ইসলাম কামাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ২৯ আগস্ট ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মাশরুম চাষে ইয়াকুবের ভাগ্য বদল

রফিকুল ইসলাম কামাল, সিলেট : অভাব-অনটনের সংসার ছিল ইয়াকুব আলীর। নিত্য টানাটানি। কিন্তু বর্তমানে তার সংসারে এসেছে স্বচ্ছলতা। অভাব-অনটন হেরেছে তার কর্মপ্রচেষ্টার কাছে। মাশরুম চাষে বদলে গেছে ভাগ্য।

ইয়াকুব আলী সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজি বাজারের বাসিন্দা। নিজের বসত ঘরে মাশরুম চাষ করে পাল্টে নিয়েছেন ভাগ্যকে। তার ‘কক্ষভিত্তিক মাশরুম চাষ প্রকল্প’ সাড়া ফেলেছে মাশরুম চাষীদের মধ্যে। বর্তমানে মাশরুম চাষেই স্বাচ্ছন্দ্য, স্বচ্ছল জীবনযাপন করছেন ইয়াকুব আলী ও তার পরিবার।

কিভাবে মাশরুম চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠলেন এমন প্রশ্নের জবাবে ইয়াকুব আলী জানান, ২০১১ সালে মাশরুম চাষের ওপর বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘মাটি ও মানুষ’ অনুষ্ঠানে একটি ডকুমেন্টারি দেখে তিনি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। পরে বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরে গিয়ে মাশরুম চাষের ওপর প্রশিক্ষণ নেন।

কিভাবে মাশরুম চাষের শুরু এ সম্পর্কে ইয়াকুব জানান, প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে ধারদেনা করে ৫০ হাজার টাকা মূলধন জোগাড় করেন। পরে সিলেটের হর্টিকালচার সেন্টার থেকে মাশরুমের বীজ সংগ্রহ করেন। নিজের বসতঘরের একটি কক্ষে শুরু করেন মাশরুম চাষ।

মাশরুম চাষ খুবই লাভজনক, বিষয়টি বুঝতে পেরে ইয়াকুব নিজের স্ত্রী আফতেরা বেগম, ছেলে রুমেল ও মেয়ে ফারজানাকে মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ দেন। সম্প্রসারিত করেন নিজের মাশরুম চাষের আওতা। বসতঘরের প্রতিটি কক্ষে মাশরুম চাষ শুরু করেন তিনি। গড়ে তোলেন মাশরুম খামার।


ইয়াকুব আলী জানান, বর্তমানে তার মাশরুম খামারে ৩ হাজার স্পন থেকে প্রতিদিন ৫ কেজি করে মাশরুম উৎপাদিত হচ্ছে। যার বাজার মূল্য এক হাজার টাকারও বেশি। এ ছাড়া ফলনযোগ্য এক হাজার বীজও রয়েছে তার কাছে। তার খামারে মিল্ক ওয়েস্টার (সাদা), কপি ওয়েস্টার (খয়েরি), ঋষি (হলুদ), গোল্ড ওয়েস্টার (লাল) জাতের মাশরুম উৎপাদন হচ্ছে।

ইয়াকুব জানান, প্রতিটি স্পনে ৩শ গ্রাম সবজি আসার পর তা জৈব সারে পরিণত হয়। ওই সারকে কাজে লাগিয়ে তিনি বাড়ির আঙিনায় পুদিনা পাতা, লেটুস পাতা, ধনিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ করে বাড়তি আয়ের পথ পেয়েছেন। তা ছাড়া নিজের পরিবারের চাহিদাও মিটছে।

মাশরুম চাষে শুধু যে ইয়াকুবের ভাগ্যই বদলেছে তা নয়, প্রশংসাও কুড়াচ্ছেন তিনি। ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পে মাশরুম প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। ইয়াকুব নিজের মাশরুম চাষের জ্ঞানকে অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করছেন।

মাশরুম চাষে আগ্রহীদের এর চাষ পদ্ধতি, পুষ্টিগুণ, ওষুধীগুণ প্রভৃতি হাতেকলমে বুঝানোর চেষ্টা করেন ইয়াকুব।

ইয়াকুবের প্রত্যাশা, দেশের প্রতিটি পরিবার সঠিক কর্মপরিকল্পনা আর উদ্যমের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠবে।

 

 

 


রাইজিংবিডি/সিলেট/২৯ আগস্ট ২০১৫/রফিকুল ইসলাম কামাল/দিলারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়