ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

দেশি মাছ শুকানোর ধুম

মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২০, ৩ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দেশি মাছ শুকানোর ধুম

মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরার গ্রামে চলছে দেশি মাছ শুকানোর ধুম। অধিকাংশ বাড়িতে শীতের শেষে মাছ শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। তা খাওয়া হয় বছর জুড়ে। অনেকে আবার শুকনো মাছ বিক্রি করে আয় করেন।

মাঘ-ফাল্গুন মাসে নদী, বাঁওড়, খাল-বিল, পুকুর শুকিয়ে যায়। এ সময় মাগুরার সদর, শ্রীপুর, শালিখা ও মহম্মদপুর উপজেলার সর্বত্র দেশীয় জাতের মাছ ধরার ধুম পড়ে। প্রাকৃতিকভাবে স্বাদ ও বৈচিত্র্যের দেশীয় জাতের মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে চলে উৎসবের আমেজ।

এ সময় অনেকে হাতে মাছ ধরেন। বেশি মাছ ধরা পড়ায় বাজারে দামও কমে যায়। কৃষক পরিবারের গৃহবধূরা ঘরের চালে বা উঠানে মাচা পেতে মাছ শুকান। দাম বেড়ে গেলে তখন শুকনো মাছ খাওয়া হয়।

চড়া দাম ও ব্যাপক চাহিদা থাকায় এখান থেকে মাছ চালান হচ্ছে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায়। মাছ ধরা, শুকিয়ে ও বিক্রিকে ঘিরে অনেক পরিবার বাড়তি উপার্জন করে। 

 


এলাকার নদী, বাঁওড়, খাল-বিল, পুকুর বর্ষায় প্লাবিত হয়। আষাঢ় মাসে নানা জাতের দেশীয় মাছ ডিম ছেড়ে বংশ বিস্তার করে। বর্ষায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাছ দ্রুত বড় হয়। এ সব মাছের মধ্যে পুটি, সরপুঁটি, কৈ, শিং, শৈল, গজাল, টাকি, টেংরা, বাইন, চিংড়ি, বেতরঙ্গি, বাতাসি, বোয়াল ও খৈয়া অন্যতম। 

জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের নদী বাঁওড়, খাল-বিল, পুকুর শুকিয়ে যাওয়ায় মাছ ধরা চলছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব মাছ বিভিন্ন জায়গায় চালান হচ্ছে। পেশায় জেলে নয় এমন লোকজনও মাছ ধরে ও বিক্রি করে বাড়তি টাকা আয় করছেন।

গৃহস্থের বাড়িতে ঢুকলেই নাকে এসে লাগে শুকনো মাছের ঘ্রাণ। টিনের চালে, বাড়ির ছাদে মাচা পেতে মাছ শুকানো হচ্ছে। কেউ আবার দড়িতে গেঁথে সারি করে ঝুলিয়ে মাছ শুকাচ্ছেন।

মহম্মদপুর উপজেলা সদরের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, এক সময় এ এলাকায় মিঠা পানির দেশীয় মাছ অধিক পাওয়া যেত। এখন আগের মতো পাওয়া যায় না। তারপরও গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই মাছ শুকানোর রেওয়াজ আছে।

 


শালিখার আড়পাড়া বাজারের ব্যবসায়ী পরিমল কুমার সাহা বলেন, ‘বাজারে মাছের আমদানি হলে দাম কমে যায়। দাম বেড়ে গেলে গ্রামের লোকজন শুকিয়ে রাখা মাছ খায়।’

সদরের পাইকেল এলাকার গৃহবধূ নাজনীন নাহার বলেন, ‘উচ্ছে দিয়ে দেশি শুকনো মাছের ঝোলের স্বাদ-ঘ্রাণ ভোলার নয়।’ নিজেদের ও শহর-প্রবাসের স্বজনদের জন্য তারা প্রতি বছর মাছ শুকিয়ে সংরক্ষণ করেন বলে জানান।

মাগুরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নারায়ণ চন্দ্র দাস বলেন, ‘গ্রামে মাছ শুকানোর রেওয়াজ অনেক পুরনো। শুকনো মাছ অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন।’

 

 

রাইজিংবিডি/মাগুরা/৩ মার্চ ২০১৭/মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন/রুহুল/বকুল 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়