মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে যে শিশুরা
আজহার ফরহাদ || রাইজিংবিডি.কম
অলংকরণ : অপূর্ব খন্দকার
আজহার ফরহাদ
আমার কন্যাদের সঙ্গে আমিও চাঁদ দেখতে যাই
তারা বলে কেন মানুষ চাঁদ দেখে বাবা? বলি, তাতে চোখের
জ্যোতি বাড়ে, দেখা যায় বহুদূরের জগৎ ও স্বপ্নলোকের মানুষ
তারা হাসে, আর চাঁদ উঠলেই ছাদে যেতে চায়, বলে চোখ পরিষ্কার করবো...
একটা অর্কিডের ফুল যখন ঝরে যায় বৃষ্টির ভার সইতে না পেরে তখনও
অভিমানের অন্ধকারে আলো হয়ে ফুটে ওঠে আমার মেয়েরা বারান্দায়।
রাতে যখন নীরব হয়ে আসে আশপাশের ঘরগুলি, বিদ্যুৎ তারের ওপর
একটি প্যাঁচা প্রতিদিন ডাকে, ঘুম পাড়ানিয়া ডাক, এন্টিবায়োটিকের মতো।
গতকাল ক্রোধের বশে কয়েকটি লতাগাছ ও সবুজ ঝোঁপের ওপর
দা’ চালিয়েছিলাম বলে বারান্দায় আমি অপরাধীর মতো আমার মেয়ের দিকে
তাকিয়ে থাকি; সে প্রশ্ন করেছিল, গাছের কি দোষ ছিল? ঝগড়া করেছো
মায়ের সাথে, গাছের সাথে তো করো নি?
ভোরে যে সূর্য উঠলো তার রং মেঘের মতো ফ্যাকাশে, আকাশে
কোনও পাখির উড়বার সম্ভাবনাকে নষ্ট করে দিয়ে নামে বৃষ্টি;
আমার কন্যাদের সঙ্গে আমিও বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকি, তাদের
কি করে বলি কতদূরে আজ চাঁদ উঠেছে গাজা উপত্যকায়, সেখানে
তোমাদের মতোই শিশুরা ছাদে যায়, বাবাকে বকে, অভিমান করে
আর যখন শক্ত করে তোমরা আমাকে ধরে থাকো, তখন ওদের জড়িয়ে ধরে
মৃত্যু...
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ জুলাই ২০১৪/তাপস রায়
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন