ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

রাগীব হাসানের দুটি কবিতা

রাগীব হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ২৩ মে ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাগীব হাসানের দুটি কবিতা

উইমেন অব আলজায়ার্স, পাবলো পিকাসো

লেডিস ক্লাব

আমি যাইনি তোমার ভেতরে, তোমার সামনে দিয়ে যে কংক্রিটের রাস্তা,
সেটা ধরে সকালে বিকালে আমি ওয়ালস টাওয়ারে আসতাম আর
সেখান থেকে বের হয়ে যেতাম, এমন করেছি আমি টানা সাড়ে নয় বছর,
তোমার ভেতরে কেন আমি যাইনি, অনেকেই তো যায়,
সংবাদপত্রে খবর হয়, খবর হওয়ার জন্যে যায় অনেকে, সত্যি বলতে কি
আমি আমন্ত্রণ পাইনি কখনো, চৈত্রের শুকনো পাতায় কেউ
লিখে আমাকে যাওয়ার নিমন্ত্রণ করেনি, আমন্ত্রণ করুক কিংবা
না করুক তা নিয়ে আমি মাথা ঘামাচ্ছি না মহিষের বাঁকানো শিঙের
চূড়া- তীক্ষ্ণতা,
আমি যখন স্কাটন গার্ডেন দিয়ে যেতাম অনেক সময় সূর্য আমার
মাথার ওপর, সূর্য আমার মাথার ঘিলু মগজ গরম করে তুলতো-
গ্রহাণুর মতন জ্বলে উঠতো আমার মাথার চুলগুলো, আমার
পরিপাটিহীন চুলগুলো হাওয়ায় উড়তো, দুলতো, রোদের আঁচে কুকরে যেতো,
জ্বলতো-
বিকেল হলে স্কাটন গার্ডেনের রাস্তা নিস্তব্ধ-নিরিবিলি-শকটের উৎকট
অত্যাচার থাকতো না, লম্বা ছায়ার রেখা-
যখন কোনো উৎসব বা আয়োজন প্রয়োজনে তোমাকে নানাবিধ বর্ণিল
পোশাকে কাপড়ে মুড়িয়ে ফেলা হয়, এখনো হয়, হয় নাকি-বিশেষ
ব্যক্তিমানুষের আগমন হলে, প্রেস এবং টিভি বার্তাজীবী-
ছুটে আসে- আলোক জ্বলজ্বল করে ওঠে- চোখ ধুয়াশা হয়ে পড়ে-
তোমার সংস্থানে যাবো একদিন, যখন নিঃসঙ্গ- একা থাকো,
রান্নাঘরের আরশোলা বাসা বেঁধেছে, তোমার রূপ কী শ্বেতাঙ্গিনী-
স্বাতী তারার মতন রূপ তোমার, আমি শুধু স্কাটন গার্ডেনের রাস্তা
দিয়ে সকাল-বিকাল আসা যাওয়ার মুহূর্তে তোমার বহির্ভাগ
তথা তোমার আনন লক্ষ করেছি, অভ্যন্তরের কাঠামোর কিছুই-
জানি না, জানি না, তবে তোমার মধ্যে তোমার ভেতরে যারা
যায় জানি- তারা এ সমাজের সম্ভ্রান্তবংশীয়, ক্ষত্রীয়?


পত্রাণী

বাড়ির দক্ষিণ দিকের বৃক্ষগুলো ভীষণ ছায়া দিতো গরমকালে
ছায়া পেয়ে লতাগুল্মের ঘ্রাণ পেয়ে আমরা তার নিচে জড়ো হতাম ।
গরম কাঁচা আম ঝালে লবণে মেখে জিহ্বায় পানি ঝরানো ছিল
আমাদের কাজ- পুকুরটি থাকতো পড়ে সামনে।

ওর তলায় সামান্য জল, শুকনো পত্রাণী অল্প হাওয়া পেয়ে
ভাসছে, কার বাড়ির ছেলে গো, যেন ধরার জন্য লাফাচ্ছে, কার বউ-
হাঁটু পর্যন্ত শাড়ির পাড় তুলে তলার ওই জলে নেমে
রৌদ্রপোড়া হলুদ তপ্ত জলই কলস ভরে নিয়ে
উঠে আসে ওপরে- আমাদের দৃষ্টি ছড়িয়ে থাকে
ফলে আমরা কিছুই হারাই না।

দুপুর আমরা উদযাপন করি, ঘর থেকে বের হই প্রান্তরে-
অন্যের বাগিচায় যাতায়াত অবাধ করি, নির্বিঘ্ন করি, দস্যু
হলে ডাকাত হলে এটা সম্ভব- শান্ত হয়েও আবার
প্রাচীন স্থাপত্যের চূড়ায় উঠে- তাসখেলা, জুয়াখেলা ছিল
অবিচ্ছিন্ন, তখন দুপুর আমাদের শরীরে পড়তো, গোল
হয়ে গোলচক্রে তাপ রাখত তীর্যক ফলক হয়ে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ মে ২০১৫/তাপস রায়

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়