ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

লাকসাম-আখাউড়া ডুয়েল গেজ ডাবল রেললাইন হচ্ছে

হাসান/লেনিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৫৮, ২৬ মে ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
লাকসাম-আখাউড়া ডুয়েল গেজ ডাবল রেললাইন হচ্ছে

হাসান মাহামুদ : রেলপথে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাতায়াতের সময় কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে সরকার। এ লক্ষ্যে লাকসাম থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ডুয়েল গেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

 

‘টিএ ফর সাব-রিজিওনাল রেল ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফ্যাসিলিটি (দ্বিতীয় সংশোধনী)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় লাকসাম থেকে আখাউড়া পর্যন্ত প্রায় ৭২ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ করা হবে।

 

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানা গেছে, প্রকল্পটির বাস্তবায়ন হলে যাত্রার সময় অনেকাংশে কমে আসবে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মালামাল (কনটেইনার) পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। ট্রেন লাইনচ্যুতির কারণে একটি লাইন বন্ধ থাকলে অপরটি চালু থাকবে। দুর্ঘটনাও কমে আসবে।

 

আগামী ২৮ মে (বৃহস্পতিবার) পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য অতিরিক্ত সচিব আরাস্তু খানের সভাপতিত্বে এ বিষয়ে বিশেষ প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। এদিন বেলা ১১টায় উক্ত বিভাগের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠেয় সভায় রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

 

প্রকল্পের আওতায় লাকসাম থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ডুয়েল গেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণ এবং বিদ্যমান রেললাইনকে ডুয়েল গেজে রূপান্তর করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের সহায়তায় এবং সরকারের নিজস্ব (জিওবি) অর্থায়নে।

 

প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬ হাজার ৫০৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এতে সরকারের নিজস্ব অর্থের পরিমাণ হচ্ছে ১ হাজার ২৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২০ সালের জুন মাসে।

 

পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আরাস্তু খান রাইজিংবিডিকে জানান, লাকসাম থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ডাবল লাইন ডুয়েল গেজ নির্মাণের নকশার কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশনে জমা দেওয়া প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়ন পর্যায়ে রয়েছে। মূল্যায়নের পর প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে।

 

রেল মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম করিডরে উচ্চতর এক্সেল লোকোমোটিভ দিয়ে ট্রেন পরিচালনা করা যাবে। ট্রেন চলাচলের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে এবং লাইন ক্যাপাসিটি ২৩ জোড়া থেকে বেড়ে ৭২ জোড়ায় উন্নীত হবে। আর সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত পুরো ডাবল লাইন রূপান্তরের ফলে যাত্রার সময় অনেকাংশে কমে আসবে। একই সঙ্গে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মালামাল (কনটেইনার) পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। ট্রেন লাইনচ্যুতির কারণে একটি লাইন বন্ধ থাকলে অপরটি চালু থাকবে এবং দুর্ঘটনাও কমে আসবে।

 

সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে যেসব গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা হবে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- ভূমি অধিগ্রহণ এবং এডিবি ও ইআইবির গাইডলাইন অনুযায়ী পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করা। প্রকল্পের আওতায় নতুন ও বিদ্যমান লাইনে ১৩টি মেজর ব্রিজ এবং ৬৪টি ছোট সেতু বা কালভার্ট নির্মাণ করা। ১১টি বি ক্লাস স্টেশনে বিদ্যমান রিলে ইন্টারলকড কালার লাইট সিগন্যালিং ব্যবস্থার পরিবর্তে কম্পিউটার বেইজড সিগন্যালিং ও ইন্টারলকিং ব্যবস্থা চালু করা। আখাউড়া-লাকসাম স্টেশনে সিগন্যাল ও ইন্টারলকিং ব্যবস্থার মোডিফিকেশন চালু করা এবং ১১টি রেলওয়ে স্টেশন ভবন পুনর্নির্মাণ করা।

 

উল্লেখ্য, দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ যোগাযোগ উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। এর অংশ হিসেবে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর গত ১৯ এপ্রিল ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে লাকসাম থেকে চিনকীর আস্তানা পর্যন্ত ৬১ কিলোমিটার ডাবল লাইনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এটির উদ্বোধন করেন। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৭৪৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। ২০১১ সালের ২ নভেম্বর এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। আর শেষ হয়েছে গত ১৫ মার্চ।

 

লাকসাম থেকে চিনকীর আস্তানার পর এখন লাকসাম-আখাউড়া ডুয়েল গেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার।

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ মে ২০১৫/হাসান/লেনিন/রফিক/এএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়