ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

শহীদ রমিজ উদ্দিন বীর বিক্রম ও তার অসহায়পুত্র

মামুন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:১০, ২৪ মে ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শহীদ রমিজ উদ্দিন বীর বিক্রম ও তার অসহায়পুত্র

শহীদ রমিজ উদ্দিন বীর বিক্রমের কবর জিয়ারত করছেন পুত্র বজলু মিয়া

মোঃ মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ : দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর দেশ পাকদের হাত থেকে মুক্ত হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন (১৩৭৮ বাংলার ৩ আষাঢ়) হবিগঞ্জ সদর উপজেলার শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার জগন্নাথপুর গ্রামের ফনা উল্লাহ পুত্র রমিজ উদ্দিন মেরা-কালেঙ্গা রেঞ্জের বালুমারা নামকস্থানে হানাদারদের সঙ্গে সম্মুখ সমরে শহীদ হন।

 

এ বীরত্বের জন্য তাকে বীর বিক্রম উপাধিতে ভূষিত করা হয়। আর এ বীরকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল কালেঙ্গা রেঞ্জের রেমা বন বিট অফিসের সামনে সমাহিত করা হয়।

 

শহীদ রমিজ উদ্দিন ছিলেন মুজাহিদ বাহিনীর সদস্য। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মারা যান রমিজ উদ্দিনের স্ত্রীও। রেখে যান তাদের একমাত্র শিশুপুত্র বজলু মিয়াকে। সে বজলু আজ অনেক বড়। তারও হয়েছে সংসার। তারও রয়েছে স্ত্রী-সন্তান। কিন্তু পরিবার নিয়ে ভাল নেই বজলু মিয়া। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তার। অর্থাভাবে অসহায় অবস্থায় দিন যাপন করছেন শহীদ বীরের একমাত্র সন্তান। পাশে দাঁড়ানোর মতো আজ কোথাও কেউ নেই তার।

 

অন্যদিকে রেমায় শহীদ রমিজ উদ্দিন বীর বিক্রমের কবর পরিদর্শনকালে দেখা গেছে,  নেইম প্লেটে ঠিকানায় পোঃ শায়েস্তাগঞ্জ, থানা চুনারুঘাট, জেলা হবিগঞ্জ এবং পিতার নাম ফনার বদলে কনা উল্লাহ লেখা রয়েছে। আসলে থানা চুনারুঘাট নয় শায়েস্তাগঞ্জ এবং পিতার নাম কনার বদলে ফনা উল্লাহ হবে। এ নিয়ে লোকজনের মনে নানা প্রশ্ন দেখা দিলেও তা সংশোধন করা হয়নি।

 

শহীদ মুক্তিযোদ্ধা রমিজ উদ্দিন বীর বিক্রম ১৯৫০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছেলে বেলা থেকে সাহসী ছিলেন। সকল বাঁধাকে তিনি অতিক্রম করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তার সাহসী ভূমিকার জন্য বীর বিক্রম উপাধিতে ভূষিত হন।

 

এদিকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার একমাত্র উত্তরাধিকারী ছেলে বজলু মিয়া স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছে। যদিও বজলু মিয়া ইতিপূর্বে সরকারী ও বেসরকারীভাবে কিছু পরিমানে সহায়তা পেয়েছেন। এ টাকা দিয়ে থাকার ঘর কিছুটা মেরামত করেছেন। টাকার অভাবে বাকী কাজ করতে পারছেন না। কর্মসংস্থান না থাকায় পরিবারের জীবিকা নির্বাহে নানা সমস্যায় পড়েছেন বজলু। বর্তমানে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন পেশায় কাজ করে কোনমতে দিন চলছে তার। কিন্তু এভাবে আর কতদিন!

 

গত ২৩ মে শহীদ রমিজ উদ্দিন বীর বিক্রমের কবর জিয়ারত করেন বজলু মিয়া ও তার পরিবার। এ সময় উপস্থিত কালেঙ্গা রেঞ্জ কর্মকর্তা শেখ আব্দুল কাদির, রেমা বিট কর্মকর্তা জাহেদ হোসেনও জিয়ারতে অংশ নেন।

 

আলাপকালে বজলু মিয়া সরকারের কাছে কর্মসংস্থান ও আর্থিক সহযোগীতা কামনা করেন। বজলু মিয়া জানান, তার বাবার নামে ঢাকায় কলেজ রয়েছে। কিন্তু হবিগঞ্জে উল্লেখযোগ্য কিছু নেই। শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভায় একটি রাস্তায় নামকরণ করা হয়েছে। তার দাবী, পিতার সমাধির পাশে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের।

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/হবিগঞ্জ/২৪ মে ২০১৫/ মামুন/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়