শিশু আলিফ হত্যা : মা শায়লা কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক : শিশু আলিফ (৩) হত্যা মামলায় আসামি মা শায়লা শারমিনের (৩১) জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

সোমবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শাহনাজ সুলতানার আদালতে তাকে হাজির করা হয়। আসামির পক্ষে জামিনের আবেদন করা হলেও জামিনের শর্ত ভঙ্গ করায় বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার এবং বাদীপক্ষে আইনজীবী প্রাণনাথ মামলা পরিচালনা করেন।

বাদীর আইনজীবী প্রাণনাথ জানান, বাদীর আপত্তি নেই জানিয়ে আদালতকে ভুল বুঝিয়ে আসামির জামিন গ্রহণ করা হয়। এছাড়া আদালত ধার্য তারিখ পর্যন্ত এ আসামির জামিন মঞ্জুর করেন। কিন্তু আসামি ধার্য তারিখে হাজির না হয়ে বারবার আইনজীবীর মাধ্যমে সময় প্রার্থনা করেন। পরে আদালত জামিন বাতিল করেন।

এর আগে গতকাল রোববার এ আসামি লন্ডন থেকে বিমানযোগে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে আসার পর গ্রেপ্তার হন।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০৪ সালের ১৬ আগস্ট আসামির সঙ্গে গুলশানের ব্যবসায়ী মো. সামির হোসেনের বিয়ে হয়। ২০০৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তাদের প্রথম সন্তান আলিফের জন্ম হয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলা অবস্থায় ২০০৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর আসামি শায়লা এবং সন্তান আলিফকে স্বামী সামিরের গুলশানের বাড়ির বেড়রুমে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হলে শিশু আলিফকে মৃত ঘোষণা করা হয় এবং আসামি শায়লার অচেতন অবস্থায় চিকিৎসা চলতে থাকে।

ওই ঘটনায় আসামি শায়লার বাবা প্রাক্তন পুলিশ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে মেয়ে শায়লার জামাতা সামির হোসেন, সামিরের মা মনোয়ারা বেগম এবং ভাই শামীম হোসেন হীরা এবং বোন শামীম আরা টুকুর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। কিন্তু ঘটনার তদন্তকালের পরে আসামি শায়লা সুস্থ হয়ে স্বীকার করে সে নিজে আত্মহত্যার জন্য এবং সন্তানকে হত্যার জন্য ঘুমের ওষুধ খাইয়েছেন। ওই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে প্রথমে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার রওনকুল হক চৌধুরী মা শায়লা শারমীনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে বাদীর নারাজির ভিত্তিতে ডিবির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মাহফুজুল ইসলাম মা শায়লা শারমীনের বিরুদ্ধেই ২০১৪ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। একই সঙ্গে সামির, শামীম ও টুকুকে অব্যাহতি প্রদান করেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ জানুয়ারি ২০১৭/মামুন খান/মুশফিক