ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

শিশুদের বোর্ড নির্ধারিত বই নিয়ে স্কুলে যাওয়ার আহ্বান

এনআর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৩১, ৫ জুলাই ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শিশুদের বোর্ড নির্ধারিত বই নিয়ে স্কুলে যাওয়ার আহ্বান

নূরুল ইসলাম নাহিদ

সংসদ প্রতিবেদক : শিশুদের শিক্ষাবোর্ড নির্ধারিত তিনটি বই নিয়ে স্কুলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ।

 

রোববার সকালে দশম জাতীয় সংসদে ২০১৫-২০১৬ বাজেট অধিবেশনে সংরক্ষিত মহিলা এমপি নূরজাহান বেগমের কার্যপ্রণালী বিধির ৭১ বিধি অনুসারে জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নোটিশের জবাবে একথা বলেন তিনি।এসময় অধিবেশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া।

 

নোটিশে নূরজাহান বেগম বলেন, স্কুলের ব্যাগটা অত্যন্ত ভারী. আমরা কি আর বইতে পারি/ এও কি একটা শাস্তি নয়, কষ্ট হয়, কষ্ট হয়। আমার কষ্ট বুঝতে চাও, দোহাই পড়ার চাপ কমাও/কষ্ট হয়। এটা নিছক কোন গান নয়, এক নিরেট বাস্তবতা নূরজাহান বেগম এমন মন্তব্য করে বলেন, বাংলাদেশের স্কুল পড়ুয়া শিশুরা ঠিক কত বেশী বোঝা বয়ে বয়ে অসুখ বাধিয়ে ফেলছে তার কোন পরিসংখ্যান নেই। তবে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি দেখে বলা যায়, সবার অসচেতনতায় প্রতিদিন বাংলাদেশের শিশুরা একটু একটু করে গুরুতর শারীরিক ক্ষতির দিকে এগুচ্ছে।

 

তিনি আরো বলেন, গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ঢাকা শিশু হাসপাতালে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু চিকিৎসা সেবা নিতে এসে বলেছে তাদের পিঠের ব্যাথা, সোজা হয়ে দাঁড়াতে না পারার কষ্ট, মেরুদন্ড ব্যাথা ইত্যাদির কথা।

 

এর কারণ তাদের বহন করা স্কুল ব্যাগের ওজন বেশী বয়ে নিতে কষ্ট হয়। এই শিশুদের মধ্যে বাংলা বা ইংরেজী উভয় মাধ্যমের শিশুরা রয়েছে।

 

শিশু বিশেষজ্ঞদের মতের কথা উল্লেখ করে এমপি নূরজাহান বেগম বলেন, দিনের পর দিন ভারী ব্যাগ বইলে শিশুদের স্বাভাবিক অবস্থান নষ্ট হয়। চাপ পড়তে পড়তে দুই হাড়ের মাঝখানে নরম পদার্থ শুকিয়ে যায়।এতে দীর্ঘস্থায়ী পিঠের ব্যাথা, পিঠ বেকে যাওয়া হাড়ে ফাটল ধরা ও শিশুর ঠিক মতো বেড়ে উঠতে না পারার মত গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে।স্কুল ব্যাগের ওজন স্বাভাবিক সীমার মাত্রা পেরিয়ে গেলে কল্পনার চাইতেও বেশী কিছু ঘটতে পারে।এর মধ্যে একটি হচ্ছে স্কুলিওসিস।এর ফলে শিশুদের পরবর্তী জীবনে যেমন বয়োবৃদ্ধ অবস্থা ভয়ংকর পরিণতি নিয়ে আসতে পারে।

 

তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন শিশুকে ব্যাগের ওজন নিজের ওজনের ১০ শতাংশের কম হতে হবে।অথচ আমরা প্রায়শই দেখি এসব শিশুর ব্যাগের ওজন কারো ৪ কেজি, ৬ কেজি বা সাড়ে ৭ কেজি পর্যন্ত।

 

তিনি বলেন, আমাদের দেশে কোন ক্লাসের শিশুরা কত ওজনের ব্যাগ বহন করবে, সে ব্যাপারে কোন নির্দেশনা নেই। যেমন কোন শিশু বোর্ড নির্ধারিত ৩টি বই থাকলেও শিশুকে বহন করতে হয় ১২টি বই।এরপর রয়েছে ৮টি খাতা, গাইড বুক, টিফিন বক্স ও পানির বোতল।সব মিলিয়ে ব্যাগের ওজন দাঁড়ায় কমপক্ষে ৬কেজি। যা একজন শিশুর পক্ষে নিয়মিত বহন করা কষ্টসাধ্য এবং ঝঁকিপূর্ণ।

 

এর জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমি ওনার মূল বক্তব্যের সঙ্গে একমত।শিশুদের জন্য এত ভারী ব্যাগ বহন করা কঠিন। আমরা প্রধানমন্ত্রী এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এবিষয়ে বহু আলোচনা করেছি, যাতে শিশুদের কত কম বই নিয়ে স্কুলে নিয়ে আসা যায়।এজন্য আমরা ই-বুক তৈরি করছি।এটা তৈরি হয়ে গেলে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এবার দিতে না পারলেও আগামীতে দিতে পারবো।

 

তিনি আরো বলেন, তিনি (নূরজাহান বেগম) একজন আইনজীবী। আমরা ওয়ান, টু ও থ্রি ক্লাসের জন্য তিনটি বই নির্ধারণ করে দিয়েছি।এই তিনটি বইয়ের ওজন তো এক কেজির কম। তিনি আবার বলেছেন যে, শিশুরা ১২টা বই নিয়ে যায়, আবার গাইড বই নিয়ে যায়।এই (গাইড) বই তো নিষেধ। যে বিক্রি করছে, যে কিনেছে কেন তিনি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেন না। আর শিশুরা কেন গাইড বই নিয়ে যাবে। যে শিশুটা তিনটা বই নিয়ে যাবে, সে কেন বারোটা বই নিয়ে যাবে।তার গার্জিয়ানরা কি করে।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৫ জুলাই ২০১৫/এনআর/দিলারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়