ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

শুরুর ধাক্কা দিতে হবে মাশরাফিকেই

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৩৩, ২৭ জুন ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শুরুর ধাক্কা দিতে হবে মাশরাফিকেই

বার্মিংহাম থেকে ইয়াসিন হাসান : বোলিংটা মনমতো হচ্ছে না। তাই বলে আত্মবিশ্বাস হারাচ্ছেন না মোটেও। তখন সবকিছু ছিল পক্ষে। স্রোতের অনুকূলে দলগত লড়াই। এখন সব কিছু বিপক্ষে! স্রোতের প্রতিকূলে নিঃসঙ্গ লড়াই!

স্পোর্টিং লাইফের চার্ম টিকে থাকে ততক্ষণই যতক্ষণ আপনি অনফিল্ডে দিতে পারবেন। ফিল্ডে আপনি নেই, হারিয়ে যাবেন বাইরের মিছিলে! তাই টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যেতে হয় শেষ পর্যন্ত। মাশরাফিকে নিয়ে নানা মানুষের নানা মত। বোলিংয়ে পুরোনো ধার না থাকায় তাকে নিয়ে কথা উঠছে। হচ্ছে সমালোচনা। হতেই পারে। সেটা গ্রহণ করছেন মাশরাফি নিজেও। কিন্তু মাঠের বাইরের দুনিয়া টেনে এনে সেটার সঙ্গে ২২ গজ মেলানোকে মানতে পারছেন না অধিনায়ক,‘শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, যে সকল মানুষ এখন সমালোচনা করছে তারাই দুদিন পর হাততালি দেবে।’- আফগানিস্তানের ম্যাচের আগে বলছিলেন মাশরাফি।

জয় পাওয়া আফগানিস্তান ম্যাচেও মাশরাফি উইকেট পাননি। তাই বলে বসে নেই ডানহাতি পেসার। কম্পিউটার এন্যালাইস্ট শ্রীণিবাসের কাছে নিজের বোলিংয়ের সব ফুটেজ চেয়েছেন অধিনায়ক। দল যখন বার্মিংহামে ছুটিতে মাশরাফি তখন বাড়তি একদিন থেকেছেন শুধুমাত্র নিজের বোলিং বিশ্লেষণ করতে। মাশরাফিও পরিবার নিয়ে গেছেন বার্মিংহামের কাছে ছোট্ট এক শহরে। সেখানেই হবে চুলছেঁড়া বিশ্লেষণ, বোলিংয়ের কাঁটাছেড়া।

দল যখন ডু অর ডাই দুটি ম্যাচের সামনে তখন মাশরাফির স্বরূপে ফেরা সময়ের দাবি। প্রতি ম্যাচের আগে স্পট বোলিংয়ে নিজেকে ঝালিয়ে নিতে কাপর্ণ্য করছেন না। নেটে সময় দিচ্ছেন। বাড়তি পরিশ্রমও করছেন। নিজের কাজটা শতভাগ দিয়ে করছেন। কষ্টের পর ফল না পাওয়া হতাশার। তবে হতাশায় বিধ্বস্ত না হয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা খুঁজছেন মাশরাফি।

প্রতিপক্ষ যখন ভারত যখন প্রেরণা খোঁজার জন্য বহুদূর না গেলেও চলে। ২০০৪ সালে প্রথম ভারত বধের নায়ক তো ওই মাশরাফি। তার শুরুর আঘাতেই তো ব্যাকফুটে গিয়েছিল ভারত। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের ২৩০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নড়াইল এক্সপ্রেসের তৃতীয় বলে বোল্ড হয়েছিলেন বীরেন্দর শেভাগ। ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতকে ডুবানোর নায়কও ছিলেন মাশরাফি। আবারও শেবাগকে ফেরান তৃতীয় ওভারে। ইনিংসের সপ্তম ওভারে নেন রবিন উথাপ্পার উইকেট। ভারতীয় ক্রিকেটের সবথেকে শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপ ব্যাকগিয়ারে চলা শুরু হয় মাশরাফির আক্রমণে।

২০১২ এশিয়া কাপেও মাশরাফির ইকোনমিক বোলিংয়ে ম্লাণ হয়েছিল ভারত। ১০-১-৪৪-২। শচীন টেন্ডুলকারের হানড্রেড হানড্রেডের ইনিংসটি সমাপ্তি টেনেছিলেন মাশরাফি। আর ২০১৫ বিশ্বকাপের পর মুস্তাফিজময় সিরিজে পেয়েছিলেন ৪ উইকেট। হয়তো আরও ভালোও হতে পারত যদি মুশফিক শুরুতেই শেখর ধাওয়ানের উইকেট নিতে পারতেন। আর সবশেষ এশিয়া কাপে তার ১০-০-৩৫-১ বোলিংয়ে ফাইনাল জমে উঠেছিল।

মাশরাফির হাতে এখন অস্ত্রের অভাব নেই। সাইফউদ্দিন দুর্দান্ত বোলিং করছেন। মুস্তাফিজুর রহমানও আপ টু মার্ক। স্পিনে সাকিব অনবদ্য। মিরাজ বরাবরের মতোই ভালো। মোসাদ্দেক তৃপ্তি দিচ্ছেন পুরো দলকে। ছয় ম্যাচে মাত্র এক উইকেট পাওয়া মাশরাফি তাদের সঙ্গে যোগ দিলে বোলিং অ্যাটাকে প্রাণ ফিরবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিবর্ণ মাশরাফি হয়ে উঠবে ভয়ংকর এমনটাই প্রত্যাশা। বিশেষ করে ভারতের বিপক্ষে শুরুর ধাক্কাটা তো তাকেই দিতে হবে। তাহলে লক্ষ্যের পথে এক পা এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

 

 

রাইজিংবিডি/বার্মিংহাম/২৭ জুন ২০১৯/ইয়াসিন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়