ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

স্বল্পব্যয়ে উন্নত সেবা দিতে নির্মিত হবে বিআরটি

এম এ রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৩, ৭ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
 স্বল্পব্যয়ে উন্নত সেবা দিতে নির্মিত হবে বিআরটি

সংসদ প্রতিবেদক : স্বল্পব্যয়ে ও উন্নত সড়ক নির্ভর বাসভিত্তিক গণপরিবহন সেবা দিতে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) নির্মাণ করা হবে।

 

এ জন্য বিশেষ ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ এবং আনুষাঙ্গিক বিধান প্রণয়নে ‘বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) বিল-২০১৬’ পাস করা হয়েছে।

 

বুধবার রাতে জাতীয় সংসদে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

 

ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে চলা সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাসের আগে বিলের উপর জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা। এতে ২৯টি সংশোধনী গ্রহণ ও বাকিগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

 

গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিলটি সংসদে উত্থাপনকালে বিরোধীতা করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য মো. ফখরুল ইমাম। পরে বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। পাস হওয়া বিলটি রাষ্ট্রপতির অনুমতির পর আইন হিসেবে কার্যকর হবে।

 

পাস হওয়া বিলের বিধান অনুযায়ী, প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদী জেলার মধ্যে এই বিআরটি স্থাপন ও পরিচালনা করা হবে। বিআরটি পরিচালনার জন্য লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক। তবে শতভাগ সরকারি কোম্পানিকে লাইসেন্স ফি দিতে হবে না।

 

সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বিআরটি স্থাপন, স্থাপনা ও পরিচালনার সুযোগ রাখা হয়েছে। লাইসেন্স ছাড়া বিআরটি নির্মাণ, উন্নয়ন বা পরিচালনা করলে ১০ বছরের কারাদ- এবং ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। অনুমোদন ছাড়া লাইসেন্স হস্তান্তর করলে একই পরিমাণ জরিমানা দিতে হবে।

 

প্রস্তাবিত আইনটিতে বিআরটি-এর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য বঙ্গবন্ধু সেতু, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল আইন ও পায়রা বন্দর আইনের মতো বিশেষ বিধান রাখা হয়েছে। বিআরটি নির্মাণ বা পরিচালনা হতে পারে এমন কোন স্থানে ক্ষতিপূরণ আদায়ের উদ্দেশ্যে ঘরবাড়ি বা স্থাপনা নির্মাণ করা হলে সংশ্লিষ্ট ভূমির মালিককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না।

 

জমির শ্রেণী পরিবর্তন করলেও কোন ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে না। কর্তৃপক্ষের এ ধরণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তরা সাত কর্মদিবসের মধ্যে আপিল করতে পারবে।

 

বিলে বলা হয়েছে, বিআরটির ভাড়া নির্ধারণের জন্য নির্বাহী পরিচালকের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কমিটি থাকবে। কমিটি বিআরটি পরিচালনা ব্যয় ও জনসাধারণের আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনা করে ভাড়া নির্ধারণের সুপারিশ করবে।

 

বিআরটির প্রতিটি কোচে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, মহিলা, শিশু ও প্রবীণদের জন্য নির্ধারিত সংখ্যক আসন সংরক্ষিত থাকবে। বিআরটি পরিচালনাকালে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা তার পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবে। বিআরটি পরিচালনার ক্ষেত্রে সব যাত্রীর বীমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বীমা না করলে ১০ বছরের কারাদ- এবং পাঁচ কোটি টাকা জরিমানা করা হবে।

 

বিলে আরো বলা হয়েছে, বিআরটি নির্মাণ ও পরিচালনায় বাধা দিলে এক বছরের কারাদ- ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করার বিধান রাখা হয়েছে। কোন ব্যক্তি যদি অনুমতি ছাড়া বিআরটির সংরক্ষিত স্থানে প্রবেশ করে, তাহলে তাকে এক বছরের কারাদ- ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। কোন ব্যক্তি যদি বিআরটির বাস ও যাত্রীদের নিরাপত্তায় বিঘœ ঘটায়, তাহলে তাকে পাঁচ বছরের কারাদ- ও ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করার বিধান রাখা হয়েছে। আর বিআরটি-এর টিকিট বা পাস জাল করলে এবং অননুমোদিতভাবে টিকিট বা পাস বিক্রি করলে ১০ বছরের কারাদ- ও ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। এছাড়া কারিগরি মান অনুসরণ না করলে লাইসেন্সধারীকে পাঁচ বছরের কারাদ- ও ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে। শুরু থেকেই বিআরটিকে মোবাইল কোর্টের এখতিয়ারে নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে ওই বিলে।

 

বিআরটি পরিচালনা করতে ২০১২ সালে গঠিত হয়েছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ। এই কর্তৃপক্ষ এখনো কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। গত ২৬ জুন বিআরটি নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরআগে গত ৭ মার্চ মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাবিত ‘বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) বিল-২০১৬’ নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

 

এছাড়া বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল বিল-২০১৬ নামের আরো একটি বিল পাস হয়েছে। পাস হওয়া বিলে বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল নামে একটি কাউন্সিল গঠনের বিধান রাখা হয়েছে।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ ডিসেম্বর ২০১৬/এম এ রহমান/নৃপেন/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়