ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

শ্রেণিকৃত ঋণের এক-চতুর্থাংশও আদায় করতে পারেনি ছয় ব্যাংক

হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪১, ২২ আগস্ট ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শ্রেণিকৃত ঋণের এক-চতুর্থাংশও আদায় করতে পারেনি ছয় ব্যাংক

কেএমএ হাসনাত : রাষ্ট্রায়ত্ব ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংককে দেওয়া শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার এক চতুর্থাংশও আদায় করতে পারেনি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে বারবার তাগিদ দেওয়া সত্বেও নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী অনাদায়ী ও শ্রেণিকৃত ঋণ আদায় করতে পারছে না রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলো। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে করা পারফরম্যান্স কন্ট্রাক্টে দেওয়া প্রতিশ্রুতিও তারা পূরণ করতে পারছে না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

 

ব্যাংকিং বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমান ক্যালেন্ডার বছরের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত কোনো ব্যাংকেরই অনাদায়ী ও শ্রেণিকৃত ঋণ আদায় সন্তোষজনক নয়। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি যাওয়া তো দূরের কথা, তারা লক্ষ্যমাত্রার এক-চতুর্থাংশও অর্জন করতে পারেনি। এ অবস্থায় এই কন্ট্রাক্ট অনুযায়ী কাজ করতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তা করছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।

 

তবে এ বিষয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ড. এম আসলাম আলম সাংবাদিকদের জানান, ব্যাংকগুলোকে পারফরম্যান্স কন্ট্রাক্ট অনুযায়ী চলতে বলা হয়েছে। অনেক ব্যাংক কয়েকটি ক্ষেত্রে ভালো করছে। কিন্তু বেশ কয়েকটি সূচকে তারা এখনো পিছিয়ে আছে। আমরা তাদের পারফরম্যান্সের উন্নতি করার নির্দেশ দিয়েছি। বছর শেষে এ বিষয়ে মূল্যায়ন করা হবে।

 

সূত্র জানায়, চলতি বছরের প্রথম দিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর সঙ্গে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একটি পারফরম্যান্স কন্ট্রাক্ট সই হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাটাগরির সূচকে একটি করে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। জুন মাসে এসে দেখা গেছে, পারফরম্যান্স কন্ট্রাক্টে বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সরকারি ব্যাংকগুলো চলতে পারছে না। কয়েকটি সূচকে তারা চরমভাবে ব্যর্থও হয়েছে।

 

পারফরম্যান্স কন্ট্রাক্ট অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ছয়টি ব্যাংকের কোনোটিই লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছিও যেতে পারেনি। এমনকি কোনো কোনো ব্যাংক এর অর্ধেকও অর্জন করতে পারেনি। অনাদায়ী ও শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সর্ববৃহৎ ব্যাংক সোনালীর অর্জন মাত্র ২১ দশমিক ৩৫ শতাংশ, জনতার ২৫ দশমিক ৭২ শতাংশ, অগ্রণীর ২০ দশমিক ৩৮ শতাংশ, রূপালীর ১০ দশমিক ৮২ শতাংশ, বিডিবিএলের ১১ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং বেসিক ব্যাংকের অর্জন ২১ দশমিক ০৫ শতাংশ।

 

সূত্র আরো জানায়, ব্যাংকগুলোর পাঠানো প্রতিবেদনে দেখা যায়, পারফরম্যান্স কন্ট্রাক্ট অনুযায়ী সোনালী ব্যাংকের ক্ষেত্রে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত শ্রেণিকৃত ঋণ থেকে নগদ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু সে সময়ে আদায় করা গেছে মাত্র ৩২০ কোটি টাকা। একইভাবে জনতা ব্যাংকে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৫০ কোটি টাকা। কিন্তু আদায় হয়েছে ১৯২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। অগ্রণী ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা ৯০০ কোটি টাকার বিপরীতে আদায় হয় ১৮৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। রূপালী ব্যাংকের ২৮০ কোটি টাকার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। বিডিবিএলের ৯০ কোটি টাকার বিপরীতে ১০ কোটি ৩ লাখ টাকা আদায় হয়েছে এবং বেসিক ব্যাংকের ৮০০ কোটি টাকার বিপরীতে আদায় হয়েছে ১৬৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এই ছয় ব্যাংকের জন্য আলোচ্য সময়ে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৩২০ কোটি টাকা। কিন্তু এ সময়ে আদায় হয়েছে মাত্র ৯০৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ২০ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ আগস্ট ২০১৫/হাসনাত/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়