ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

সবজি চাষ করে সংসার চালান পান্না বেগম

শাহরিয়ার সিফাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২১, ২৫ নভেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সবজি চাষ করে সংসার চালান পান্না বেগম

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল : ষড় ঋতুর বাংলাদেশে শীত একটি অন্যতম প্রধান ঋতু। কবি সাহিত্যিকদের ভাষায় শীত হচ্ছে হিম বুড়ি, যে প্রকৃতিতে নিয়ে আসে বার্ধক্য, জড়তা আর শুষ্কতা।

 

তবে হিম বুড়ির (শীত) সঙ্গে প্রকৃতির সম্পর্ক বৈরী হলেও সে আসে অনেকের ভাগ্য বদলের বার্তা নিয়ে।অনেকের জীবিকার সংস্থান ও রুটি রুজির ব্যবস্থা করে এই হিম শীত। 

 

টাঙ্গাইলের সবজি চাষি পান্না বেগম।শীতকালীন শাক-সবজি চাষ করে সংসারের যাবতীয় খরচ ও ছেলেমেয়ের লেখা পড়ার খরচ চালান তিনি।

 

এ বছর লাউ, বাঁধাকপি ও ফুলকপি চাষ করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো শাকসবজি বিক্রি করেননি। তবে গত বছর শীতকালীন শাকসবজি চাষ করে লাভবান হয়েছিলেন। সবজি চাষে ১০ হাজার টাকা খরচ করলে ২০ হাজার টাকা লাভবান হওয়া যায়, তিনি এমনটাই জানালেন।

 

সরেজমিনে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, অনেকেই শীতকালীন শাকসবজিরখেত পরিচর্যা করছেন। পুরুষ, নারী সবাই অংশগ্রহণ করছে এ কাজে। ছেলে-মেয়েরাও তাদের বাবা-মাকে বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করছে।

 

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সদুল্লাপুরে শীতকালীন শাকসবজিরখেত পরিচর্যা করছিলেন মমতাজ বেগম নামে আরেক সবজি চাষি। তার সঙ্গে কথা হয়।

 

তিনি বলেন, ‘আমি এ বছর প্রায় চার বিঘা জমিতে লাল শাক ও লাউশাকসহ বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন শাকসবজি চাষ করেছি। প্রতি বিঘায় আমার খরচ হয়েছে আট থেকে ১০ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার শাকসবজি বিক্রি করেছি। যেভাবে বিক্রি হচ্ছে তা দেখে মনে হচ্ছে আমি বেশ লাভবান হবো।’

 

তবে লাভবান হলেও অভিযোগের সুরে বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে এখন পর্যন্ত কোনো কৃষি অফিসারের সাহায্য-সহযোগিতা পাইনি।’

 

শীতকালীন শাকসবজি চাষে লাভবান হওয়ায় কৃষকদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণির লোকজন এই পেশার দিকে ঝুঁকছেন। খেতের পাশাপাশি অনেকেই বাড়ির আঙিনায়ও শাকসবজি চাষ করছেন।

 

কথা হয় শাহানুর নামে এরকম এক চাষির সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি চাকরি করি। চাকরির পাশাপাশি শীতকালীন শাকসবজি চাষে লাভের পরিমাণ বেশী হওয়ায়, আমি বাড়ির আঙিনায় শীতকালীন শাকসবজি চাষ করছি।’

 

এ দিকে টাঙ্গাইলের বাজারগুলোতে উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন শাকসবজি। শহরের পার্কবাজার ও বটতলা বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে উঠেছে শীতকালীন শাকসবজি, আর ক্রেতারা উৎসাহ নিয়ে কিনছেন বছরের প্রথম শীতকালীন শাকসবজি। তবে দাম তুলনামূলকভাবে বেশি।

 

টাঙ্গাইলের বাজারগুলোতে প্রতি পিস ফুলকপি ৫০-৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, শিম কেজিপ্রতি ১২০ টাকা , ধনেপাতা কেজিপ্রতি  ১৫০ টাকা, মুলা কেজিপ্রতি ৩০ টাকা ও লাউ ২৫-৩০ টাকা পিস, লাল শাক/লাউ শাক ১০ টাকা থেকে ২০ আটিতে বিক্রি হচ্ছে।

 

এ বিষয়ে পার্কবাজারের মানিক চৌহান নামে এক সবজি বিক্রেতার কথা হলে তিনি জানান, বাজারে শীতকালীন শাকসবজির সরবরাহ কম কিন্তু চাহিদা বেশি হওয়ার কারণে দাম বেশি। তবে তার ধারণা কয়েকদিনের মধ্যে দাম কমবে।

 

টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল হাশেম বলেন, শীতকালীন শাকসবজিতে খরচ কম লাভ বেশি। তাই কৃষকরা শীতকালীন শাকসবজি চাষ করছেন বেশি। তবে আগাম শীতকালীন শাকসবজি চাষ করে বেশি লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

 

টাঙ্গাইলে কিভাবে আরো শীতকালীন শাক-সবজির উৎপাদন বাড়ানো যায়, সে লক্ষ্যে কাজ করছে টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এ ব্যাপারে একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে অফিসাররা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে।

 

 

 

রাইজিংবিডি/টাঙ্গাইল/২৫ নভেম্বর ২০১৬/শাহরিয়ার সিফাত/কেয়া/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়