ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

সবুজ সার হিসেবে মুজিবনগরে ধইঞ্চা চাষ

মহাসিন আলী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:৫৭, ২১ আগস্ট ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সবুজ সার হিসেবে মুজিবনগরে ধইঞ্চা চাষ

মুজিবনগরের মাঠে চাষকৃত ধইঞ্চা

মহাসিন আলী, মেহেরপুর : দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য চাহিদা। এই খাদ্য চাহিদা সামনে রেখে জীবন বাঁচাতে পুষ্টিযুক্ত ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পেতে জমিতে জৈব সারের ব্যবহার সময়ের দাবি।

কৃষিবিদদের মতে, সাধারণত জমিতে ৫ শতাংশ জৈব সার থাকা প্রয়োজন। বর্তমানে আমরা অতি মাত্রায় রাসায়নিক সারের ওপর নির্ভরশীল। বর্তমানে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মাটিতে ১.৭৫% জৈব সার আছে।

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলায় প্রণোদনা কার্যক্রমের আওতায় মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় চাষকৃত ধইঞ্চা গাছ মাটিতে মেশানো হচ্ছে। আফ্রিকান জাতের এসব ধইঞ্চা গাছের শিকড়, কাণ্ড এবং পাতার নিচে ছোট ছোট দানার মতো গঠন তৈরি হয়। এগুলোকে নডিউল বলা হয়।

ধইঞ্চা গাছ বাতাসের নাইট্রোজেন সংগ্রহ করে এসব নডিউলে জমা রাখে। এ জন্য ধইঞ্চা গাছ মাটিতে মিশিয়ে দিলে সেই জমিতে ইউরিয়া সারের অভাব দূর হয়। এ ছাড়া ধইঞ্চা গাছের সবুজ পাতা ও কাণ্ড মাটিতে পচে জৈব সারের ঘাটতি পূরণ করে। এ জন্য এটাকে সবুজ সার হিসেবে গণ্য করা হয়।

সরেজমিনে মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে সবুজ সার হিসেবে ধইঞ্চা গাছ মাটিতে মেশানোর দৃশ্য চোখে পড়ে। সংশ্লিষ্ট কৃষকরা মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কৃষিবান্ধব সরকারের এ মহতি উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যক্রম বেশি বেশি গ্রহণ করার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা পূরণের জন্য রাসায়নিক সারের প্রয়োজন আছে বটে। তবে মাটিতে জৈব পদার্থ না থাকলে কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া যায় না। তাই জৈব সারের প্রতি কৃষকদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। তা ছাড়া, নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য জৈব সার একটি অপরিহার্য উপকরণ।

চাষ দিয়ে ধইঞ্চা গাছ মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে


মুজিবনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোফাকখারুল ইসলাম জানান, চলতি বছরে উপজেলায় প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বল্লভপুর ও যতারপুর গ্রামের ১০ জন কৃষককে বীজ সহায়তা দেওয়া হয়েছিল।

এ ছাড়া মুজিবনগর সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আরো ৩০ জন চাষিকে সবুজ সার হিসেবে ধইঞ্চা চাষের জন্য বীজ, সার ও অন্যান্য উপকরণ দেওয়া হয়েছে। সবাই আবাদ করেছেন। ইতিমধ্যে অনেকেই মাটির সঙ্গে ধইঞ্চা গাছ চাষ দিয়ে মিশিয়ে দিয়েছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক এস এম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, জৈব সারকে মাটির প্রাণ বলা হয়। সবুজ সারও এক প্রকার জৈব সার। সুতরাং জমি পতিত না রেখে সবুজ সার হিসেবে ধৈঞ্চার আবাদ করার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এটা একটা উত্তম পদ্ধতি। মাটির গুণগত মান বজায় রাখার জন্য জৈব সারের বিকল্প নেই।

 

 

 

রাইজিংবিডি/মেহেরপুর/২১ আগস্ট ২০১৬/মহাসিন আলী/রিশিত/এএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়