ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

শহীদ দিয়ানত আলী রাজবাড়ির গর্ব

সোহেল মিয়া || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:৫৬, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শহীদ দিয়ানত আলী রাজবাড়ির গর্ব

শহীদ দিয়ানত আলী

সোহেল মিয়া, রাজবাড়ী : মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাদের বুলেটের আঘাতে নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে দেশের  স্বাধীনতা এনেছিলেন শহীদ দিয়ানত আলী।  মহান এই শহীদের জন্ম রাজবাড়ীর নবগঠিত উপজেলা কালুখালীর সাওরাইল ইউনিয়নের ভিটি গ্রামে। শহীদ দিয়ানত আলী রাজবাড়ির গর্ব। চূড়ান্ত বিজয়লগ্নে রাজবাড়িবাসী অকুতভয় এই মুক্তিযোদ্ধাকে হারায়।

 

শহীদ দিয়ানত আলীর ৪৫ তম শাহাদত বার্ষিকী আজ। পিতা মৃত ছোমেদ আলী জোয়াদ্দারের একমাত্র পুত্র ছিলেন দিয়ানত আলী। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর ঘাতকের বুলেটে তিনি শাহাদত বরণ করেন। দিবসটিকে ঘিরে রাজবাড়ী জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল ও শহীদ দিয়ানত আলী কলেজ পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

 

রাজবাড়ী জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সদস্য ও শহীদ দিয়ানত আলীর সহযোদ্ধা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আ. খালেক মন্ডল জানান, দিয়ানত আলী একজন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সৈনিক। তার নিজের কোন ভাই-বোন নেই। বাবার একমাত্র সন্তান।  তিনি মৃগী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ালেখা শুরু করেন। বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া লিয়াকত আলী স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে এসএসসি পাশ করেন। ১৯৬৮ সালে রাজবাড়ী কলেজ থেকে আইএ পাশ করার পর বিএ তে অধ্যয়নরত ছিলেন।

 

তৎকালীন পাকিস্তান জাতীয় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও আন্দোলনের ডাক দিলে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘোষিত ৬ দফা ও ১১ দফা কর্মসূচির আন্দোলনে সক্রিয় কর্মী ছিলেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা দিয়ানত আলী।

 

১৯৭১ সালে মে মাসের প্রথম দিকে তিনি পায়ে হেঁটে ভারত চলে যান। সেখানে দেরাদুন থেকে অস্ত্র চালানো প্রশিক্ষণ নেন। মুজিব বাহিনীর কমান্ডার অধ্যাপক আব্দুর রবের সাথে অস্ত্রসহ বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। এলাকার যুব সমাজকে সংগঠিত করে একটি বাহিনী গঠন করেন। ৮নং সেক্টরে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার লাঙ্গলবাঁধ, কালুখালী, রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় যুদ্ধে অংশ নেন।

 

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাজবাড়ীর যুদ্ধে শত্রু বাহিনীর পরপর তিনটি গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মাটিপাড়া মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। সেখান থেকে গরুর গাড়িতে করে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে নিজ এলাকা মৃগী বাজারে নিয়ে আসা হয়। মৃগী বাজার জামে মসজিদের পাশে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে দাফন করা হয়।

 

তার স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য মৃগীতে শহীদ দিয়ানত আলী কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

 

 

রাইজিংবিডি/রাজবাড়ী/১৪ ডিসেম্বর ২০১৬/সোহেল/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়