ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

খুলনা অঞ্চলে এইডসে ৪৭ জনের মৃত্যু

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১৭, ২৩ নভেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
খুলনা অঞ্চলে এইডসে ৪৭ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আট জেলায় ২০০৪-২০১৬ পর্যন্ত এক যুগে এইডসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৪৭ জন। এ সময় এসব এলাকায়  এ রোগে আক্রান্ত হয় ২১৩ জন।

 

 

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মুক্ত আকাশের এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।

 

জরিপের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর এ অঞ্চলে এইডসে আক্রান্ত হয় ১৬ জন পুরুষ, আটজন নারী ও একজন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া চলতি বছরে আক্রান্তদের মধ্যে ৩০ জন পুরুষ, ২১ জন নারী এবং ১০ জন শিশু রয়েছে।

 

এর মধ্যে গত বছর দুজন পুরুষ, তিনজন নারী এবং চলতি বছর চারজন পুরুষ ও দুজন মহিলার মৃত্যু হয়। এ ছাড়া বাকিরা অন্য বছরগুলোতে মারা যায়।

 

এদিকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আট জেলাকে এইডসের ভয়াবহতা ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। স্থল ও সমুদ্র বন্দর এলাকায় পতিতালয়ে অনিরাপদ যৌন মিলন, সমকামিতা, প্রবাসীদের আনাগোনা, মায়ের গর্ভ থেকে শিশু, হোটেলে যৌন ব্যবসা, সিরিঞ্জের মাধ্যমে বারবার সুচের ব্যবহার এবং কনডম ব্যবহারে অনিচ্ছাকেই এর প্রধানমত কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।

 

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ওয়ার্ল্ডভিশনের এক জরিপে উল্লেখ করা হয়, ভারতীয় সীমান্ত জোনে অবস্থানের কারণে খুলনা অঞ্চলে এইডসের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কলেজ ছাত্রদের মধ্যে বিয়ে বহির্ভূত যৌন মিলনের হার ২৯ শতাংশ। মোংলা সমুদ্র বন্দর এলাকার বানিশান্তা নিষিদ্ধপল্লি, বাগেরহাট পতিতালয়, যশোর পতিতালয় এবং খুলনা মহানগরীর নামি-দামি হোটেলসহ ভাসমান অবস্থায় থাকা যৌনকর্মীর সংখ্যা ৪ হাজার। নিষিদ্ধপল্লির যৌনকর্মীদের নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করা হয় না। এ অঞ্চলে অবৈধ যৌনাচারে লিপ্তদের মধ্যে ২৫ শতাংশের বেশি কনডম ব্যবহার করতে আগ্রহ দেখায় না।

 

জরিপে বলা হয়, বেনাপোল স্থল বন্দর ও ভোমরা শুল্ক স্টেশন দিয়ে আসা ভারতীয় ট্রাক চালকরা অবসর মুহূর্তে পতিতাপল্লি ও ভাসমান যৌনকর্মীদের শয্যাসঙ্গী হয়। সৌদি আরব ও ভারত থেকে আসা কয়েকজন প্রবাসী এ দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়েছে। এইডস আক্রান্ত রোগীরা খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নড়াইল, ঝিনাইদহ, মাগুরা, গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুরের।

 

স্বেচ্ছাবেসী সংগঠন মুক্ত আকাশের কো-অর্ডিনেটর রেহানা বেগম জানান, এইডসের ভয়াবহতা রোধে গণসচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। সমকামিতায় নিরুৎসাহিত এবং পতিতাপল্লিতে কনডম ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

 

দুর্জয় নারী সংঘ নামক সংগঠনের অনুষ্ঠান সংগঠক কাজল কুমার দাস জানিয়েছেন, যৌনকর্মীদের কারণে এ অঞ্চলে এইডস ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে। খুলনা শহর ও মোংলা এলাকায় ১২০০ জন যৌনকর্মী রয়েছে। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পিকেএস সুশীলন, মাসাসসহ ১৯টি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান এইডস প্রতিরোধে গণসচেতনতায় অংশ নিয়েছে।

 

খুলনার প্রাক্তন সিভিল সার্জন ডা. মো. ইয়াসিন আলী সরদার জানান, অনিরাপদ যৌন মিলন, হোটেলে যৌন ব্যবসা এবং সিরিঞ্জের সুচ বারবার ব্যবহারের ফলে এইডসের ভয়াবহতা বেড়েছে। ২/৩টি দেশ থেকে আগত প্রবাসীরাও এইচআইভি জীবাণু বহন করে আসছে বলেও জানান তিনি।

 

 

রাইজিংবিডি/খুলনা/২৩ নভেম্বর ২০১৬/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/রিশিত

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়