ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

হাওরাঞ্চলে বাতাসে সরিষার ঘ্রাণ

মো. মামুন চৌধুরী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২২, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
হাওরাঞ্চলে বাতাসে সরিষার ঘ্রাণ

হবিগঞ্জের হাওরাঞ্চলে সরিষার খেত

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জের হাওরাঞ্চল জুড়ে যেন বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে হলুদ রঙের গালিচা। আসলে তা ফুলে ফুলে ভরা সরিষার খেত। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে তার ঘ্রাণ। আর এতে মাতোয়ারা কৃষক। তাদের চোখেমুখে হাসির ঝিলিক।

 

যেখানে হবিগঞ্জে সরিষা চাষ বিলুপ্তির পথে, সেখানে এ বছর এখানে সরিষার বাম্পার ফলন হতে যাচ্ছে। সঙ্গত কারণে দারুণ খুশি চাষিরা। লাভ না হওয়া ও অব্যাহত লোকসান গুনতে থাকা চাষিরা সরিষার ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিলেন। তাদের মনে এখন আনন্দের জোয়ার।

 

চাষিদের এই আনন্দের কারণ উচ্চফলনশীল বারি-১৪ জাতের সরিষা। এটা চাষে তেমন খরচ নেই। শুধু জমি চাষের পর বীজ ছিটিয়ে দিতে হয়। তারপর গাছ বড় হলে দিতে হয় সেচ। সার বা কীটনাশক দিতে হয় না। এ কারণে এ সরিষা চাষে অনেক লাভ।

 

জানা গেছে, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রাজিউড়া, আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশা হাওর ও মাধবপুর উপজেলার পিয়াইমসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে শত শত কৃষক বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছেন। হাওরের পাশাপাশি পাহাড়ি এলাকায়ও সরিষা চাষ হচ্ছে।

 

এবার হবিগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ তহবিল থেকে প্রায় ৩০০ কৃষককে (বারি-১৪) জাতের সরিষা বীজ, একটি এলএলপি (সেচ মেশিন) দেওয়া হয়। সদর উপজেলার কৃষি উন্নয়ন বিষয়ক কোর কমিটির উদ্যোগে রাজিউরা ইউনিয়নের উচাইল, শংকরপাশা ও চারিনাও গ্রামে কর্মসূচির আওতায় ১৪০ হেক্টর সরিষা, ৫ হেক্টর গম ও ৫ হেক্টর ধান আবাদ করা হয়েছে।

 

স্থানীয় কৃষক মহিবুর হাসান বলেন, ‘এক সময় এখানে শুধু একটি ফসল ফলানো সম্ভব হতো। কিন্তু সরকারের আন্তরিকতায় এবং কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় আমরা বছরে তিনটি ফসল চাষ করে লাভবান হচ্ছি।’

 

রাজিউরা ইউনিয়নের (উচাইল ব্লক) উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুনীল চন্দ্র দাস বলেন, ‘এ এলাকার বিস্তীর্ণ হাওর এলাকায় একটির বেশি ফসল ফলানো সম্ভব হতো না। কৃষি বিভাগ ওই এলাকার কৃষককে উদ্বুদ্ধ করে সরিষা ও গম চাষে উৎসাহিত করেছে। ফলে এখন এখানে ধান ছাড়াও সরিষা আর গম চাষ করা হচ্ছে।’

 

হবিগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তফা ইকবাল আজাদ বলেন, ‘এখানে তিন ফসল চাষ নিশ্চিত করার জন্য গভীর নলকূপ বসানো হচ্ছে। এর জন্য বিএডিসির মাধ্যমে প্রকল্প গ্রহণের কার্যক্রম চলছে। এ ছাড়া রাজিউরা ইউনিয়নের হুরগাঁও ও পাঠকালী গ্রামে এ বছর ২২০ হেক্টর জমিতে সরিষা ও গম চাষ করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৭০ হেক্টর বেশি।’

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শাহ্ আলম বলেন, ‘২০১৫-১৬ অর্থবছরে বৃহত্তর সিলেট বিভাগে অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনার কর্মসূচির অংশ হিসেবে হবিগঞ্জের ৮ উপজেলায় ১ হাজার ৮০০ হেক্টর জমি চাষের আওতায় আনা হয়েছে।’

 

 

রাইজিংবিডি/হবিগঞ্জ/১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/মামুন/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়