ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মুছে ফেলুন জহির রায়হানের নাম : সুচন্দা

আমিনুল ই শান্ত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২৩, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মুছে ফেলুন জহির রায়হানের নাম : সুচন্দা

আমিনুল ই শান্ত : বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা জহির রায়হান। অনেক জনপ্রিয় ও গুরত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন তিনি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে এই নাম জড়িয়ে আছে ওতপ্রোতভাবে।  তিনি সেলুলয়েডের ফিতায় ধারণ করেছেন আমাদের মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাস।

 

জহির রায়হান নির্মিত জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ‘জীবন থেকে নেয়া’। ১৯৭০ সালের এপ্রিল মাসে মুক্তি পায় সিনেমাটি। উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে এ সিনেমার রচয়িতা আমজাদ হোসেন ও জহির রায়হান। সম্প্রতি একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে এ সিনেমা প্রসঙ্গে আমজাদ হোসেন বলেন, সিনেমার গল্পটি তার।

 

আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে সেইসব কৃতী সন্তানদের। এ প্রসঙ্গে কথা বলার জন্য এই প্রতিবেদক জহির রায়হানের স্ত্রী কোহিনূর আক্তার সুচন্দাকে ফোন দেন। এ সময় চাপা আক্ষেপ নিয়ে সুচন্দা বলেন, ‘জহির রায়হান কি আমজাদ হোসেনের গল্প নিয়ে ‘জীবন থেকে নেয়া’ বানিয়েছেন? জহির রায়হান কি তার ছোট না বড়? বিষয়টি বুঝতে পারিনি। জহির রায়হান কি লেখাপড়া জানতেন না? তিনি কি অন্যের লেখা নিয়ে সিনেমা বানাতেন? এত বছর লেখালেখি করার পর জহির রায়হান সম্পর্কে এই মন্তব্য? আমি যে কথাগুলো বলছি তা যদি অন্যায় হয়, তবে আপনারা বলবেন-আমি অন্যায় বলছি।’

 

এরপর সুচন্দা পাল্টা প্রশ্ন করে এই প্রতিবেদকের কাছে জানতে চান, ‘আপনারা যদি জহির রায়হান সম্পর্কে কিছুই না জানেন (আপনাকে বলছি না) তবে জহির রায়হান সম্পর্কে জানতে চান কেন? আপনারা যখন আমাকে নক করেন, আমি সব সময় আপনাদের ডাকে সাড়া দিই। কেউ বলতে পারবেন না, আমি কারো ফোন ধরি না কিংবা কথা বলি না। কিন্তু এমন ঘটনায় সত্যি আমি খুব আহত হয়েছি। জহির আমার স্বামী এজন্য আহত হয়েছি বিষয়টি তা নয়। তিনি এমন একজন ব্যক্তি যাকে নিয়ে লিখতে বসলে লেখা শেষ হবে না। দেশের যখন উত্তাল অবস্থা তখন আমজাদ হোসেন ও জহির রাহান ভাবলেন, কিছু একটা করতে হবে। তখন জহির রায়হান আমজাদ হোসেনের কাহিনি নিয়ে ‘জীবন থেকে নেয়া’ বানালেন। এত বছর পর এ কথা শুনতে হচ্ছে কেন?’

 

সুচন্দা আরো বলেন, ‘জহির রায়হান ভাষা আন্দোলনের সময় জেল খেটেছে, গণঅভ্যত্থানে ছিল, সাহিত্যে অবদান রাখল, দেশ ও দেশের বাইরে তার কাজ ছড়িয়ে পড়েছে যে সময় তখন এমন কথার অর্থ বোধগম্য নয়। এভাবে মানুষ মানুষকে ছোট করে? এভাবে ইতিহাস বদলে দেয়?’

 

এ সময় এই প্রতিবেদককে তিনি আরো বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাকে কেন কথা বলতে হচ্ছে? আপনারা সাংবাদিক, আপনাদের কি এ বিষয়ে কোনো কিছু বলার নেই? আপনার যে সত্যটা জানেন তা লেখেন। আমাদের দেশে বহু গুণীজন রয়েছেন, বহু গুণী চলচ্চিত্র নির্মাতা রয়েছেন, আপনারা বাদ দেন জহির রায়হানকে। ভুলে যান জহির রায়হান নামে কেউ ছিল, মুছে ফেলুন তার নাম। ‘জীবন থেকে নেয়া’র মতো সিনেমা আর কেউ কোনোদিন নির্মাণ করতে পারবে না। জহির রায়হান সম্পর্কে বুঝতে হলে আগে জানতে হবে, তারপর লিখতে হবে।’

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ডিসেম্বর ২০১৬/শান্ত/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়