‘চাই’ বানিয়ে জীবিকা নির্বাহ
অলোক সাহা || রাইজিংবিডি.কম
রমজানকাঠি গ্রামে ‘চাই’ বানাতে ব্যস্ত একটি পরিবার
অলোক সাহা, ঝালকাঠি : ঝালকাঠিতে ‘চাই’ বানিয়ে জীবিকা নির্বাহ চলছে অন্তত ৫০ পরিবারের। একই গ্রামের এই ৫০ পরিবার বর্ষার এ সময়ে ‘চাই’ বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছে। ‘চাই’ হচ্ছে বাঁশ দিয়ে তৈরি একপ্রকার মাছ ধরার ফাঁদ।
ঋতু চক্রে বাংলাদেশে এখন বর্ষাকাল। খাল-বিল, মাঠ-ঘাট পানিতে ভরপুর। বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলের যে দিকে চোখ যায় শুধু পানি আর পনি। আর এই ভরপুর পানিতে মাছ শিকার হয়ে ওঠে অনেকেরই জীবিকা নির্বাহের উপায়। নদী-খাল বেষ্টিত ঝালকাঠির গ্রামীণ জনপদে এ মৌসুমে মাছ শিকারে ‘চাই’ বেশ জনপ্রিয়। ঝালকাঠির স্থানীয় ভাষায় এই ‘চাই’ কে বুচনা বা খলনিও বলা হয়।
এ সময়ে ঝালকাঠির দক্ষিনের রমজানকাঠি গ্রামের অন্তত ৫০ পরিবার এই মাছ ধরার ফাঁদ তৈরি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছেন। রমজানকাঠি ঝালকাঠি সদরের গাভা রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের একটি গ্রাম। জেলা শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরের এই গ্রামের শিশু থেকে বৃদ্ধ প্রায় সকলেই এখন ‘চাই’ তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বাদ যাচ্ছেন না নারীরাও। তারাও তাদের সংসারের কাজের ফাঁকে মাছ ধরার ফাঁদ বানিয়ে সহযোগীতা করছেন পুরুষদের।
এখানকার তৈরি মাছ ধরার এই ফাঁদ ঝালকাঠি জেলার বিভিন্ন হাট বাজারসহ পার্শ্ববর্তী বরিশাল ও পিরোজপুর জেলায়ও বিক্রি হচ্ছে। এখানে এক মৌসুমে কয়েক লাখ টাকার মাছ ধরার ফাঁদ বিক্রি হয়। যা বিক্রি করে এ সময় এসব পরিবারের জীবন-জীবিকাও চলে।
রমজানকাঠি গ্রামের হাওলাদার (৪০) বলেন, ‘আমরা বছরের ছয় মাস এই চাই বুচনা বানিয়ে সংসার চালাই। আর বাকি ছয় মাস কোন কাজ না থাকায় বসে কাটাতে হয়। নগদ অর্থ না থাকায় বিভিন্ন এনজিও থেকে চড়া সুদে লোন নেই এবং ফরিয়াদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে আমাদের কাজ করতে হয়। যার ফলে কম দামে ফরিয়াদের কাছে ‘চাই বুচনাই’ বিক্রি করতে হচ্ছে।’
রাইজিংবিডি/ঝালকাঠি/৩০ জুলাই ২০১৫/অলোক/টিপু
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন