ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

চলে গেলেন বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু

এনএ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৫, ২৬ নভেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
চলে গেলেন বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু

কিউবার অবিসংবাদিত নেতা ফিদেল কাস্ত্রো সারা বিশ্বের বিপ্লবী মানুষের সঙ্গী ছিলেন। যেখানেই অত্যাচার হয়েছে তার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। নিজ দেশের নাগরিকদের বিপ্লবের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে শুক্রবার চিরবিদায় নিলেন বিপ্লবের এই মহান নেতা।

 

১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যখন মুক্তিযুদ্ধ চলছিল সে সময় কিউবায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন ফিদেল কাস্ত্রো। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে তার অকুণ্ঠ সমর্থনের কথা জানান। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আলজিরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সে জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন কাস্ত্রো। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে এ সময় তার সখ্য গড়ে ওঠে।

 

স্বাধীনতা আন্দোলনে সরাসরি নেতৃত্ব দেওয়া দুই নেতার আলোচনার পর ফিদেল কাস্ত্রো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হয়ে বলেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি। কিন্তু আমি শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব ও সাহস ও দৃঢ়তায় তিনি হিমালয়।’ বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে কাস্ত্রো বঙ্গবন্ধুকে বেশ কিছু পরামর্শও দিয়েছিলেন।

 

মুক্তিযুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকার কারণে ফিদেল কাস্ত্রোকে বাংলাদেশ সরকার ২০১৩ সালে ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননায়’ ভূষিত করে।

 

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ঘটনায়  ফিদেল কাস্ত্রো খুব দুঃখ পান। তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিবের মৃত্যুতে বিশ্বের শোষিত মানুষ হারাল তাদের এক মহান নেতাকে আর আমি হারালাম একজন অকৃত্রিম বিশাল হৃদয়ের বন্ধুকে।’

 

কিউবা বিপ্লবের প্রধান নেতা কাস্ত্রো ১৯৫৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৭৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এরপর ১৯৭৬ সালে কিউবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ৩০ বছর এ দায়িত্ব পালন করেন।

 

১৯৫৯ সালের জানুয়ারি মাসে কিউবায় অবসান ঘটে মার্কিন সমর্থিত স্বৈরশাসক ফুলহেনসিও বাতিস্তার কয়েক দশকের শাসনের । রাজধানী হাভানায় ঢুকেছিল বামপন্থী বিপ্লবীদের দল। তারপর থেকে দীর্ঘদিন  যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু ছিল কিউবা। ফিদেল কাস্ত্রোর প্রায় অর্ধ শতাব্দীর শাসনামলে ১০ মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার পালাবদল ঘটে। তবে সেই  যুক্তরাষ্ট্র ও কিউবার মধ্যে বৈরিতা আজ আর নেই, ওয়াশিংটনকে বন্ধু বলেই গ্রহণ করেছে কাস্ত্রোর দেশ।

 

২০০৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ছোট ভাই রাউল কাস্ত্রোর হাতে স্বেচ্ছায় ক্ষমতা হস্তান্তর করে অন্তরালে চলে যান কাস্ত্রো। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত খুব একটা জনসম্মুখে আসেননি। আজ বিদায় নিলেন বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের সেই অকৃত্রিম বন্ধু।

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ নভেম্বর ২০১৬/এনএ/টিআর/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়