ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে দেশের বেশি ক্ষতি হবে’

রেজা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩১, ২৭ আগস্ট ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে দেশের বেশি ক্ষতি হবে’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে দাবি করেছেন সেটিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘ওই প্রকল্পে দেশের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হবে।’

 

শনিবার রাতে গুলশানে বিএনপি নেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ মন্তব্য করেন তিনি। জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের নেতারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

 

সুন্দরবনের অদূরে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পকে ‘দেশ ও গণবিরোধী’ অভিহিত করে গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রকল্প বাতিল করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

 

তার ওই বক্তব্যের দু’দিন পর শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ওই প্রকল্পে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না।

 

রামপাল নিয়ে নিজের সংবাদ সম্মেলনে কোনো ‘ভুল তথ্য দেননি’ দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘উনি বলুক যে, আমি যে তথ্যগুলো দিয়েছি কোনটা ভুল বা মিথ্যা। কোনো তথ্য ভুল বা মিথ্যা নয়। যদি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র হয়, তাহলে দেশের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হবে। আমাদের বড় ক্ষতি হবে।’

 

বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ‘আমরা তো বলি নাই, আমাদের বিদ্যুৎকেন্দ্র চাই না, প্রকল্প বন্ধ করতে হবে। আমরা বলেছি, এখানে চাই না, এখান থেকে সরিয়ে নিতে হবে। আরো অনেক জায়গায় আছে যেখানে করার মতো পরিস্থিতি হবে সবকিছু মিলিয়ে।’

 

তিনি বলেন, ‘সুন্দরবন জাতীয় সম্পদ। এটা বিএনপি, আওয়ামী লীগ বা অন্য কোনো দলের নয়। জাতীয় সম্পদ রক্ষা করতে হবে। সুন্দরবন যে শেষ হয়ে যাবে, এটা কি আমাদের জন্য ভালো হবে? ’

রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র করার বিষয়ে দৃঢ় থাকায় বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘যে দল এটা করছে এরা হলো রাষ্ট্রবিরোধী। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কাজ করছে। এর জবাব ক্ষমতায় থেকে হয়তো দিতে হচ্ছে না, কিন্তু ক্ষমতার বাইরে গেলেই মানুষের কাছে এর জবাব দিতে হবে। এটা তাদের পৈতৃক সম্পত্তি নয়।’

 

জঙ্গিদের জীবিত ধরা হচ্ছে না কেন?

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমাদের দেশের পুলিশ বাহিনী অনেক দক্ষ। একটি বাড়ি থেকে জঙ্গিদের জীবিত ধরতে পারল না? তাহলে কী ট্রেনিং দিল ? কেন জঙ্গিদের জীবিত ধরা হচ্ছে না?’  জঙ্গিদের জীবিত ধরা হলে সত্যিকারের তথ্য পাওয়া যেতো। জঙ্গিবাদের যে শিকড় সেটি নির্মূল করা সম্ভব হতো।’

 

বিএনপির শাসনামলে জঙ্গিদের জীবিত ধরা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপির আমলে অপরাধীদের জীবিত ধরা হয়েছে। সবচেয়ে বড় অপরাধী বাংলাভাইকে ধরেছি। শায়খ আবদুর রহমান, যে কি না মির্জা আজমের বোনোর জামাই। তাকে জীবিত ধরতে চেয়েছি, ধরেছিও।’

 

রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরায় হামলার ঘটনায় তেমন তদন্ত হয়নি দাবি করে বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ‘জনগণের কাছে এটা পরিষ্কার করা হয়নি। ওই ঘটনায় কারা এর সঙ্গে জড়িত, কীভাবে এসব ঘটল?  এটা যেতে না যেতেই কল্যাণপুরে আরেকটি ঘটনা ঘটল। তাদের পেছন থেকে গুলি করে মারা হল। বোঝাই যায় এটা সাজানো ঘটনা।’

 

যশোরের উদীচি, রমনার বটমুলে এবং সিপিবি সমাবেশে হামলার মতো ঘটনার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের শাসনামল থেকে জঙ্গিবাদের সূত্রপাত হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, তখনও সত্যিকারের জঙ্গিদের ধরা হয়নি। এর ফলেই অপরাধ বেড়েছে।

 

এ সময় তিনি আরো বলেন, ‘ইংলিশ মিডিয়াম অনেক স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ মাথা ব্যাথা হচ্ছে মাথা কেটে দাও। এটা তো হতে পারে না। স্কুল বন্ধ করবে কেন? বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিচ্ছে। তাহলে এসব ছেলেদের কী হবে? তারা তো খারাপ পথেই যাবে।’

 

 ‘দেশ রক্ষায়’ সব ধর্ম-বর্ণের মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান বিএনপি নেত্রী।

 

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের নেতারা এসময় উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি নেতাদের মধ্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী প্রমুখ।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ আগস্ট ২০১৬/রেজা/ ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়