ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

অভিনেত্রীর জীবন-মরণের শখ

আমিনুল ইসলাম শান্ত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৩০, ৩০ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অভিনেত্রীর জীবন-মরণের শখ

ফারজানা রিক্তা

বিনোদন ডেস্ক: মডেল-অভিনেত্রী ফারজানা রিক্তা। গুণী নির্মাতা অমিতাভ রেজা পরিচালিত একটি বিজ্ঞাপনচিত্রের মাধ্যমে শোবিজ অঙ্গনে পা রাখেন। তারপর অনেক নাটক-টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন তিনি। পাশাপাশি তার ‘আলতাবানু’ সিনেমাটি মুক্তির পর দর্শকের কাছ থেকে ঢের প্রশংসা কুড়ায়।

রিক্তার আরেক পরিচয় তিনি একজন ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার। জীবজন্তুর ছবি তোলাই তার শখ। ছবি তুলে বেশকিছু পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি বর্তমানে অজগর নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রজেক্টে কাজ করছেন রিক্তা। কক্সবাজারের উখিয়াতে কুমিরের একটি ফার্মের ইনচার্জ হিসেবে রয়েছেন বন্যপ্রাণী গবেষক ও আলোকচিত্রী আদনান আজাদ আসিফ। এই প্রজেক্টে উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন এই অভিনেত্রী। 

 

 

ফটোগ্রাফির সঙ্গে ‍যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে ফারজানা রিক্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, “আদনান আজাদ আসিফ আমার ফটোগ্রাফির বস। সে আমার ওস্তাদ। তার জন্যই আমার ফটোগ্রাফির প্যাশন তৈরি হয়। কথায় আছে না, ‘সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে’? বিষয়টি ঠিক তেমনি হয়েছে। আদনান ফটোগ্রাফির পাশাপাশি জীবজন্তু নিয়ে গবেষণাও করছে। শুটিংয়ের বাইরে যখনই সময় পাই তখনই আদনানের সঙ্গে বনজঙ্গলে ঘুরে বেড়াই।’’

রিক্তার তোলা বেশ কিছু ছবির মধ্যে রয়েছে মুখপোড়া হনুমান, ঘরগিন্নি সাপ, শঙ্খিনী সাপ, জলপিপি প্রভৃতি। মুখপোড়া হনুমানের ছবিটির বিষয়ে রিক্তা বলেন, ‘শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া থেকে ছবিটি তুলেছিলাম। এই ফ্রেমটি ক্যামেরাবন্দি করার জন্য একদিন লেগে গিয়েছিল। আসলে ওরা তো মানুষ না যে চাইলেই পোজ দিবে। এই ধরনের মুভমেন্ট পাওয়ার জন্য আমাকে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয়েছে।’

 

 

একটি ছবিতে দেখা যায় গাছের ডাল পেঁচিয়ে আছে একটি ঘরগিন্নি সাপ। ছবিটি কক্সবাজারের উখিয়া থেকে তুলেছিলেন রিক্তা। শুধু তাই নয় সাপটি নিজ হাতেই ধরেছিলেন তিনি।

‘শঙ্খিনী সাপের খাবারই হচ্ছে সাপ। কোনো এক বর্ষার রাতে সাপের ছবি তোলার জন্যই বের হয়েছিলাম। লোকেশন ছিল উখিয়ার একটি পাহাড়। সে রাতেই এমন দৃশ্য বন্দি করার সৌভাগ্য হয়েছিল’ একটি সাপ আস্ত আরেকটি সাপকে গিলে খাচ্ছে। যে সাপটি খাচ্ছে সেটির নাম শঙ্খিনী। আর যেটিকে খাচ্ছে সেটা ঢোরা সাপ নামেই বেশি পরিচিত— এমন একটি ছবির বর্ণনা দিয়ে বলেন রিক্তা।

 

 

কোনো এক শীতের মৌসুমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জলপিপি পাখির ছবিটি তোলেন রিক্তা। পশুপাখির সঙ্গে তার এখন আত্মিক সম্পর্ক। রিক্তার ভাষায়, ‘বন্যপ্রাণির সঙ্গে একটি বন্ধন তৈরি হয়ে গেছে। এদের প্রতি ভীষণ মায়া জমেছে। এখন চাইলেই এদের ছেড়ে থাকতে পারি না।’

 

 

‘পশুপাখি সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে মূলত কাজ শুরু করেছিলাম, ফটোগ্রাফার হিসেবে না। পশুপাখির অভ্যাস, নানা বৈশিষ্ট্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সেগুলো যখন জঙ্গলে ছেড়ে দিই তখন দুই চারটা ছবি তুলে রাখি। এর উদ্দেশ্য এটাই যে, এই জন্তু বা পাখিটি আমি দেখেছি এবং এর ছবি তুলেছি। শখের বশে অভিনয়ের পাশাপাশি পশুপাখি নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু সেই শখটাই এখন জীবন-মরণের শখ হয়ে গেছে। অভিনয় ছেড়ে দিলেও পশুপাখি ছাড়তে পারব না’, বলেন রিক্তা।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ আগস্ট ২০১৯/শান্ত/মারুফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়