ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

তিনি সবার প্রিয় ঘোল সালাম

শাহীন আনোয়ার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪৪, ১৩ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ১৫:৪৭, ১৩ এপ্রিল ২০২১
তিনি সবার প্রিয় ঘোল সালাম

দুধের স্বাদ ঘোলে না মিটলেও এই গরমে একটু প্রশান্তির জন্য ঘোলের চাহিদা এখনো রয়েছে ঢের। ঘোল বিক্রি করে চলে সালামের সংসার।

পুরো নাম আব্দুস সালাম। বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরের ধোয়াইল গ্রামে। ঘোল সালাম নামেই তিনি পরিচিত। গ্রীষ্মের তিন মাস তিনি ঘোল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। 

আধুনিক সময় নানা খাবারের ভিড়ে ঘোল এখন বিলুপ্তির পথে। তার পরও গ্রামগঞ্জে প্রচণ্ড গরমে তৃষ্ণা মেটাতে ঘোলের চাহিদা রয়েছে আদিকাল থেকে।

দুধ দিয়ে তৈরি এই বিশেষ পানীয় তৈরি ও বিক্রির ব্যবসা সালাম বংশানুক্রমে আজও ধরে রেখেছন। তার বাপ-দাদারা এই ব্যবসা করতেন। পরিবারের সবাই ছেড়ে দিলেও তিনি শেষ প্রতিনিধি হিসেবে ধরে রেখেছেন। তারপর আর কেউ এ ব্যবসা করবেন না বললেন ছালাম। 

সবাই ঘোল তৈরি করতে পারেন না। প্রয়োজন হয় দীর্ঘ অভিজ্ঞতা। গাভীর দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করে তারপর ঠান্ডা করতে হয়। তার ভেতর টক দই দিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিয়ে নাড়তে হয়। এক সময় দুধ থেকে মাখন আলাদা হয়ে যায়। মাখন দিয়ে তৈরি করা হয় খাঁটি ঘি। দুধ মিশ্রিত ঘন পানি ঘোলে পরিণত হয়। 

ঘোলকে এলাকা ভেদে মাঠা বলা হয়। সব পানিত ঘোল হয় না। আয়রন মুক্ত পানি দরকার হয়। এ জন্য দূর থেকে নদীর স্বচ্ছ পানি সংগ্রহ করত হয়। পানি জ্বাল দিয়ে বিশুদ্ধ করে ব্যবহার করা হয়। দই তৈরির পর মাটির পাত্র সংরক্ষণ করত হয়।এরপর ঘোল ভালো করে মিশিয়ে হালকা লবণ দিয়ে কাঁচের গ্লাসে পরিবেশন করা হয়। 

সালাম মিয়ার ঘোল এলাকায় নাম করা। ঘোলের কারণে তাকে সবাই চেনেন। তার ঘোলের কদর সর্বত্র। হাঁড়িতে ঘোল আনার সঙ্গে সঙ্গেই বিক্রি হয়ে যায়। অনেকে আগে থেকেই অর্ডার দিয়ে রাখেন। 

প্রতি গ্লাস ঘোল বিক্রি হয় ১০-১৫ টাকায়। কাঁধে করে মাটির হাঁড়িতে হাঁক ছেড়ে ঘোল বিক্রি করে বেড়ান তিনি। খরচ বাদে প্রতিদিন ৩০০-৪০০ টাকা আয় হয়। নিঃসন্তান স্ত্রী আমেনা বেগমকে নিয়ে চলে তার সংসার। 

ঘোল শরীর ঠান্ডা রাখে। রোগমুক্তির পর ঘোল পান উপকারী। এছাড়া গরম লাগা, কোষ্টকাঠিন্যসহ নানা অসুখে ঘোল উপকারী। 

আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমার পূর্ব পুরুষ দই, মিষ্টি ও ঘোল তৈরির কাজ করতেন। আমার বাবা আজগর আালীর কাছ থেকে আমি ঘোল তৈরির কাজ শিখেছি। অন্য চাচা ও ভাইয়েরা এই পেশায় আসেননি। গরমের তিন মাস চলে এই কাজ। বাকি সময় অন্য কাজ করে সংবার চালাই।’

মাগুরা/মাহি 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়