ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

পঞ্চম শ্রেণি পাসেই ‘ডাক্তার’ 

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৭, ৬ আগস্ট ২০২২   আপডেট: ২২:১৬, ৬ আগস্ট ২০২২
পঞ্চম শ্রেণি পাসেই ‘ডাক্তার’ 

নামের আগে দেওয়া আছে ডাক্তার। নিয়মিত দেখছেন রোগী, লিখছেন প্রেসকিপশন। আবার ওষুধও বেচেন তিনিই। আর শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি। নাম তার নুরুজ্জামান বাবুল ওরফে ‘ডা. বাবুল’। কথিত এই ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নে একটি ওষুধের দোকানের সাথেই ডাক্তারের চেম্বারের সাইনবোর্ড। লেখা- ‘ডাক্তার নুরুজ্জামান বাবুল, ডিএমএফ ঢাকা, মেডিসিন চিকিৎসক’। এখানে প্রতিদিন সকাল ৮টা হতে দুপুর ২টা ও বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রোগী দেখা হয় বলে চলছে মাইকিং। 

বাবুলের কাছে চিকিৎসা নেওয়া ভুক্তভোগী আ. রাজ্জাক বলেন, আমার জ্বর হয়েছিল। চিকিৎসা নিতে গেলে বাবুল আমাকে কিছু হাই এন্টিবায়োটিক ওষুধ দিয়ে দেয়। তবে আমার পরিচিত বড়ভাই ওষুধগুলো দেখে খেতে মানা করেন এবং অন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। সেই ডাক্তারের দেওয়া প্যারাসিটামল খেয়ে আমি সুস্থ হই।

আরেক ভুক্তভোগী রাবেয়া খাতুন বলেন, আমি মাথা ব্যথার কথা জানিয়ে তার কাছে ওষুধের পরামর্শ চাই। তিনি অনেকগুলা ওষুধ লিখে দেয়। তবে সুস্থতার বদলে আমি আরও অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরে শহরের এক মেডিসিন ডাক্তারের শরণাপন্ন হই। সেই ডাক্তার জানায়, আগের ওষুধগুলো ভুল ছিল।

এলাকার ব্যবসায়ী আলতাফুর বলেন, বাবুল আমাদের সামনেই বড় হয়েছে। আমরা জানি সে প্রাইমারি স্কুলের গণ্ডি পার হয়নি। তাই আমরা তার কাছে চিকিৎসা নেই না। তবে অনেকে অজান্তে চিকিৎসা নিতে এসে প্রতারণার শিকার হচ্ছে। চিকিৎসার মতো এরকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সাবধান থাকা উচিত। দ্রুতই এই ভুয়া ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে বড় বিপদ হতে পারে।

এই বিষয়ে কথা হয় কথিত ডাক্তার বাবুলের সাথে। ডাক্তারি পড়ালেখা বা কোনও প্রকার প্রশিক্ষণের কাগজ দেখতে চাইলে, নেই বলে অকপটে স্বীকার করেন বাবুল। সেই সাথে চেম্বারের পাসে থাকা ওষুধের দোকানের লাইসেন্সও নেই বলে স্বীকার করেন তিনি। রাইজিংবিডিকে তিনি বলেন, যেখানে ব্যানার করেছি ভুল করে ডা. লিখে ফেলছে। যেহেতু আমি চিকিৎসা দিতে পারি, রোগী দেখতে দোষের কী? আমি যা চিকিৎসা দিচ্ছি, তাতে মানুষের উপকার হচ্ছে।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোহাম্মদ সামসুজ্জোহা জানান, চিকিৎসার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে কোনও সমঝোতার সুযোগ নেই। বিষয়টি জানা ছিল না। দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

মঈনুদ্দীন/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়