ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বর্ষায় অপরূপ বান্দরবান

এস বাসু দাশ, বান্দরবান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৪৮, ৬ আগস্ট ২০২২   আপডেট: ১৬:৫৯, ৭ আগস্ট ২০২২
বর্ষায় অপরূপ বান্দরবান

সারি সারি সবুজ পাহাড় ঘেরা মেঘের আড়ালে হারিয়ে যেতে নেই মানা। বৃষ্টির সময় প্রাকৃতি যেন তার সবটুকু রূপ ঢেলে দিয়েছে বান্দরবানকে। এই সারি সারি সবুজ গালিচার ওপর আপনার আগমনে যোগ হবে ভিন্নমাত্রা।

বর্ষায় এক ভিন্ন রূপেই দেখা যায় এই পর্যটন শহরকে। দেশের ভ্রমণপিপাসুরা ভ্রমণের জন্য শীত মৌসুম উপযুক্ত হিসেবে বেছে নেয়। হয়ত অনেকেই জানেন না, বৃষ্টির সময়ে পাহাড়ঘেরা জেলাটি যেন সবুজ কার্পেটের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। যেদিকে দু’ চোখ যাবে সবুজে সবুজে নতুন সাজে ধরা দেবে আপনার কাছে।

অবিরাম বর্ষণের জলধারার পরশে পাহাড়ের বৃক্ষরাজি নবযৌবন লাভ করে। মেঘ আর পাহাড়ের সম্পর্কের কথা তো নতুন করে বলার কিছুই নেই। তবুও বলতে হয়, পাহাড়ের সঙ্গে আকাশের সারি সারি মেঘ-ভেলার সর্ম্পক নতুন মাত্রা এনে দেয় এই ঝুম বরষার সময়। পাহাড়ের বুক চিরে শত শত ঝর্ণা ধারা আপনাকে নিয়ে যাবে যেন কোনো অচেনা রাজ্যে। এ ছাড়া শহরের কাছের নীলআচল, চিম্বুক, জীবননগর আর নীলগিরির ওপর দাঁড়িয়ে মেঘ স্পর্শ করার ইচ্ছে হলে আপনাকে অবশ্যই ভ্রমণের জন্য বেছে নিতে হবে বান্দরবানকে।

নিশ্চয় মন চাইছে মেঘের সঙ্গে লুকোচুরি খেলতে। তবে আর দেরি কেন, জীবনের ছক থেকে বেরিয়ে হারিয়ে যেতে পারেন নীলাচলের মেঘে ঢাকা পাহাড়ে, মেঘলা লেকের স্বচ্ছ জলে, ভাসাতে পারেন ডিঙ্গি নৌকা অথবা ঘুরে আসতে পারেন চিম্বুক পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর গ্রামে। ক্লান্ত শরীর বিশ্রাম দিতে পারেন তাদের মাচাং ঘরে। এছাড়া কৃষি প্রধান দেশের বিভিন্ন জেলার চাষাবাদের চেয়ে পাহাড়ে ভিন্ন চাষাবাদ জুমচাষ আপনার নজর কাড়বে নিঃসন্দেহে।

শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে দেখতে পাবেন মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স। আর ১৮শ’ ফিট উঁচু নীলাচল থেকে সবুজের চাদরে ঢাকা বান্দরবানকে। বান্দরবান-চিম্বুক রোডের ৮ কিলোমিটারে রয়েছে পাহাড়ি ঝর্ণা শৈলপ্রপাত। ঝর্ণা থেকে গড়িয়ে পড়া জলরাশির স্রোতের কারণে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা ঝর্ণায় না নামাই ভালো।

২৬ কিলোমিটার দূরে রয়েছে বাংলার দার্জিলিংখ্যাত চিম্বুক পাহাড়। এই ধরনের শত শত পাহাড় তার রুপ প্রদর্শনে ভিন্ন বাহার নিয়ে যেন আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। এই পাহাড়গুলোতে না উঠলে বান্দরবান ভ্রমণের মূল আনন্দই অধরা থেকে যাবে।

বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা ভারতের দার্জিলিংয়ে বেড়াতে যান। অথচ পর্যাপ্ত আধুনিক সুযোগ সুবিধা বাড়ালে এবং জেলার অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামো আরও উন্নত করা গেলে বান্দরবানের সৌন্দর্য ভারতের দার্জিলিংকেও হার মানাবে।

যাতায়াত: ঢাকা থেকে ট্রেনে বা বাসে চট্টগ্রাম; তারপর চট্টগ্রাম থেকে সোজা বান্দরবান। বাংলাদেশের অনেক জায়গা থেকে সরাসরি বান্দরবান যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে বান্দরবান পর্যন্ত সরাসরি নন এসি ভাড়া জনপ্রতি ৬৫০ টাকা, এসি ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। হানিফ পরিবহণ, দেশ পরিবহণ, ইউনিক, শ্যামলী, সেন্টমার্টিন ইত্যাদি বাস ছাড়ে ফকিরাপুল ও সায়েদাবাদ, কমলাপুর রেল স্টেশনের বিপরীত কাউন্টার থেকে।

চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান: বহদ্দারহাট টার্মিনাল থেকে পূরবী এবং পূর্বাণী পরিবহণ আছে। নন এসির ভাড়া জনপ্রতি ১৫০ টাকা ও এসির ভাড়া জনপ্রতি ২২০ টাকা। ৩০ মিনিট পরপর বান্দরবানের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

কোথায় থাকবেন: হোটেল ফোর স্টার, হোটেল হিলটন, হলিডে ইন, হোটেল হিলভিউ, নিলাদ্রী, হোটেল সাঙ্গু, হোটেল থ্রি স্টার, হোটেল প্লাজা, হোটেল গ্রীন হিল, হোটেল হিল বার্ড, হোটেল নাইট হ্যাভেন, গ্রিনপিক রিসোর্ট, হোটেল প্লাজা, ভেনাস রিসোর্ট, হোটেল হিল কুইন, বন নিবাস, গ্রিনল্যান্ড, সাইরু হিল রিসোর্ট, হোটেল রয়েল ছাড়াও অনেক হোটেল আছে। ভাড়া ৪০০ থেকে ২৫ হাজার পর্যন্ত।

/বকুল/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়