ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

শততম মঞ্চে ‘বীরাঙ্গনার বয়ান’

আমিনুল ইসলাম শান্ত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শততম মঞ্চে ‘বীরাঙ্গনার বয়ান’

‘বীরাঙ্গনার বয়ান’ নাটকের দৃশ্য

বিনোদন ডেস্ক: ‘মিলেটারি আর রাজাকারের অত্যাচারে কখন যে কবর খোঁড়া শুরু করছি, মনে নাই। তারপর থেইকা একটার পর একটা কবর খুঁড়তেই আছি। এ আমার মায়ের কবর, এ আমার বইনের কবর, এ আমার স্বজনের কবর, এ আমার মতো নির্যাতিত নারীর কবর। সবার কবর তো খুঁড়লাম, আমার কবর খুঁড়ব কেডা?’— এমন মর্মস্পর্শী-হৃদশিহরিত সংলাপগুলো আলোচিত ‘বীরাঙ্গনার বয়ান’ নাটকের।

রওশন জান্নাত রুশনী রচিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এ আখ্যানটি নির্দেশনা দিয়েছেন দেবাশীষ ঘোষ। এতে একক অভিনয় করেছেন নাট্যকার রওশন জান্নাত রুশনী। নাট্যসংগঠন শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্রের সাড়া জাগানো এ নাটকের শততম মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আজ শুক্রবার বিকাল ৫টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে নাটকটির শততম মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধ্যা ৭টায় নাটকটির ১০১তম প্রদর্শনী হবে।

এ উপলক্ষে দল থেকে নানা আয়োজন করা হয়েছে। বেলা ৩টায় রয়েছে ‘মুক্তিযুদ্ধের নাটকে নারীর জীবন যুদ্ধ’ শীর্ষক সেমিনার। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন ড. ইউসুফ ইকবাল দীপু। বিকাল ৪টায় রয়েছে আলোচনা সভা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন  সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন মঞ্চসারথি আতাউর রহমান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজীদ।

শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্রের দল প্রধান খোরশেদুল আলম জানান, নাটকটির ৯৯টি প্রদর্শনী শেষ হয়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, দিল্লীসহ ২০টি জেলায় ৩৬টি এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ৬৩টি প্রদর্শনী হয়েছে। বিদেশের মঞ্চে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের নাটকের এত অধিক সংখ্যক মঞ্চায়ন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে বিশ্ব জনমত গঠন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত করছে বলে দুই দেশের নাট্যজনরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্র সংস্কৃতির বিকাশে বন্ধু প্রতীম দু’দেশের নাট্যাঙ্গনের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে বলেও জানান তিনি।

নাটকের গল্প প্রসঙ্গে নির্দেশক দেবাশীষ ঘোষ জানান, একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আল শামস বাহিনী বাংলাদেশের অসংখ্য নারীর উপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। সেসব নিষ্ঠুর নির্যাতনে লাঞ্ছিত ও স্বজনহারা নারীদের জীবনে সংঘটিত ভয়ানক অত্যাচারের কাহিনি যশোর জেলার বীরাঙ্গনা বীরমাতা হালিমার জবানিতে উঠে এসেছে। হালিমা কোনো একক নাম নয়; একাত্তরের নির্মমতার শিকার লাখ লাখ বীরনারীর প্রতিচ্ছবি।

নাটকের কাহিনি বিন্যাসের প্রয়োজনে হালিমার জবানিতে আরো কয়েকজন বীরমাতার কাহিনি একসূত্রে গেঁথে সেইসব বর্বরতার চিত্র দর্শকদের সামনে দৃশ্যমান করা হয় নাটকে। মূলত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ’৭৫ পরবর্তী সময়ে বীরাঙ্গনা নারীদের সামাজিক অবস্থান বর্তমান প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিকে জোরদার করার লক্ষ্যে নির্মিত হয়েছে নাটকটি।

নাটকটির আবহ সংগীত করেছেন তন্ময় ব্যানার্জী ও ইনতিশা তাশদীদ তাহা। খোরশেদুল আলমের সেট পরিকল্পনায় নাটকটির আলোকায়ন করেছেন আব্দুল হাদী।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯/শান্ত

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়