ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

‘শিশুরা জানে না চাঁদ মামার গল্প’

কাব্য সাহা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২১, ১৯ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
‘শিশুরা জানে না চাঁদ মামার গল্প’

মনে পড়ে, ছেলেবেলায় কত দুরন্তপনা করে বেড়িয়েছি। সেই সব দুরন্তপনার মধ্যে অন্যতম ছিল লুকোচুরি খেলা, যেখানে একজন গোয়েন্দা (পুলিশ) হয়ে এক বা একাধিক (একটি দলকে) চোরকে ধরার জন্য খুঁজে বেড়াতো। চোরদের ভেতর এক বা দুজনকে খুঁজে পেলেও বাকিরা গোয়েন্দাকে (পুলিশ) বোকা বানাতো, কারণ খেলার নিয়ম ছিল পুলিশকে যদি কেউ ছুঁয়ে দিতে পারে, তাহলে আবার চোরদের খুঁজে বের করতে হবে। আর বাধ্য হয়ে তাকে আবার চোরদের খুঁজে বেড়াতে হতো।

আজ সেসব ছেলেবেলার খেলা হারাতে বসেছে আধুনিকতার ছোঁয়ায়। এখন যান্ত্রিকতার মধ্যেই কাটে হাজারো শৈশব। বর্তমান সময়ে একটি শিশু কান্না করলে পরিবার তার কান্না রোধের জন্য হাতে তুলে দেয় ডিজিটাল যন্ত্র (স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ট্যাব), ফলে শিশুটি ছোট থেকেই অভ্যস্ত হতে শেখে যান্ত্রিকতার ছোঁয়ায়। সে একটু বড় হয়ে কখনো খুঁজে না তার সমবয়সী কাউকে, মেতে উঠতে চায় না দুরন্তপনায়। কারণ, তার নির্ভরতা বা সক্ষতা গড়ে উঠছে যন্ত্রকেন্দ্রিক।

ছোটবেলায় রাতে বিদ্যুত চলে গেলে সমবয়সীরা চাঁদের আলোয় একসঙ্গে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছি লুকোচুরি বা গোল্লাছুটের মতো নানা রকম খেলায়। চাঁদের আলোয় পরিবারের সবাই একত্রিত হয়ে শুনেছি কতো শিক্ষণীয় গল্প। এখন আর সেই চাঁদ মামার গল্প হয় না।

কিন্তু এখন সেই সব বিলুপ্তপ্রায়। এখন বিদ্যুত চলে গেলে পরিবারের সবার হাতেই থাকে ডিজিটাল যন্ত্র (স্মার্টফোন, ল্যাপটপ) এবং তাদের স্থান হয় চার দেয়ালের বন্দি ঘরের এক এক কোণে, আর গল্প শোনা হয়ে ওঠে না পরিবারের ছোট সদস্যদের।

আজকের শিশুদের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে চলার জন্য আক্ষেপ নেই। তাদের কাছে শৈশবের কোনো স্মৃতি নেই। তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে চাঁদের আলোয় বলবার মতো কোনো গল্প নেই, শিশু-কিশোরদের নেই কোনো আঁধার রাতে দল বেঁধে আম চুরির গল্প।

তাদের শৈশব-কৈশর কাটছে ভার্চুয়াল জগতের মুখোশে, যেখানে বন্ধুর জন্য ভালোবাসা নেই। নেই হঠাৎ করে দুরন্তপনায় মেতে উঠবার কোনো স্মৃতি।

করোনা মহামারিতে আমরাও আজ আবদ্ধ হয়ে পরেছি ডিজিটাল তথা যান্ত্রিকতায়। তবুও আমাদের জীবনে আবার ফিরে আসুক সেই শৈশব, আবারো মেতে উঠতে চাই মায়া জড়ানো শৈশবের সেই দুরন্তপনায়। যা শুধুই এখন অতীত আর নিছক কল্পনা মাত্র!

লেখক: শিক্ষার্থী, ফার্মেসি বিভাগ, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।


এসইউবি/হাকিম মাহি  

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়