ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে কাজ করবে ঢাকা চেম্বার

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৭, ২১ জানুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ১৮:৫৭, ২১ জানুয়ারি ২০২৩
অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে কাজ করবে ঢাকা চেম্বার

ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধার্থে সরকার দেশে অনেকগুলো অর্থনৈতিক অঞ্চল করেছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে রাস্তাসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনো দুর্বল। ব্যবসায়ীদের স্বার্থে ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং ইউটিলিটি সেবার উন্নয়নে কাজ করবে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

শনিবার (২১ জানুয়ারি) দেশের সমসাময়িক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং ২০২৩ সালে ডিসিসিআই’র বর্ষব্যাপী কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার।

রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই অডিটোরিয়াম সংবাদ সম্মেলনে ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর (আরমান), সহ-সভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলীসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে ডিসিসিআই’র সভাপতি জানান, এবছর সিএমএসএমই, মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, বেসরকারি ও বৈদেশিক বিনিয়োগ, আর্থিক খাত, কর ব্যবস্থাপনা, এলডিসি থেকে গ্রাজুয়েশন, অর্থনৈতিক কূটনীতি, অবকাঠামো ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রভৃতি বিষয়ের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবে ডিসিসিআই।

তিনি বলেন, ঢাকা চেম্বারের পক্ষ থেকে বেশকিছু অর্থনৈতিক অঞ্চলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অবকাঠামো নির্মাণ হলেও কোনোটিতে রাস্তাঘাট সংস্কার হয়নি আবার কোনোটিতে পানি-বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়নি। এসব বিষয় দ্রুত সমাধানে ডিসিসিআই কাজ করবে। তাতে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে উৎপাদন অব্যাহত থাকবে, বিদেশিরাও বিনিয়োগে আকৃষ্ট হবে।

বৈশ্বিক মন্দার কারণে স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত হওয়ার বিষয়ে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, আমরা বৈশ্বিক পরিস্থিতির বাইরে নই। ২০২৩ সালে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বিদ্যমান কর্মসংস্থানের সুযোগ ধরে রাখাটাও একধরনের সফলতা হবে।

তিনি বলেন, প্রতিবছর আমাদের দেশে প্রায় ২০ লাখ তরুণ শিক্ষাজীবন শেষ করে চাকরির বাজারে প্রবেশ করে। তবে, বিপুল এ জনগোষ্ঠীকে দক্ষ ও উপযোগী করে কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়া বেশ চ্যালেঞ্জের বিষয়। এদের অনেকেই হয়ত চাকরি পাবে। তবে, অবশিষ্টদের মধ্যে একটি বড় অংশ উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলবে।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, সরকার সম্প্রতি শুধু শিল্প খাতে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করেছে, বাসা-বাড়ি এবং কৃষি খাতের জন্য তা প্রযোজ্য নয়। দেশের ব্যবসায়ী সমাজ শিল্প খাতে পণ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে উচ্চ মূল্যে হলেও নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ পেতে চায়, যেন স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আমাদের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়। এটা সত্য যে, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি আমাদের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ওপর কিছুটা হলেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারণ, এটি পণ্য উৎপাদন ব্যয় বাড়াবে।

সামীর সাত্তার বলেন, কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (সিএমএসএমই) জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ২৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে। কিন্তু, এ তহবিল থেকে মাঝারি উদ্যোক্তারা সহজে অর্থায়ন সুবিধা পেলেও কুটির, মাইক্রো ও ক্ষুদ্ররা বঞ্চিত। বৈশ্বিক অস্থিতিশীল বাজারে এসব উদ্যোক্তাকে সহায়তা করতে ঋণের সজলভ্যতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিদ্যমান জটিল পরিস্থতিতে তাদেরকে সহজ শর্তে অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

ব্যবসায়ীদের ওপর কর আরোপের বিষয়ে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, দেশে ৭৫ লাখ টিআইএনধারী ব্যক্তির মধ্যে মাত্র ২৫ লাখ রিটার্ন দাখিল করছে। তাদের সংখ্যা আরও বাড়ানোর জন্য কাজ করবে ডিসিসিআই। তবে, এক্ষেত্রে এনবিআরকে রাজস্ব আহরণে করদাতাদের ওপর প্রতিবছর করের বোঝা না চাপিয়ে নতুন নতুন খাত অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, যাতে করদাতারা সহজে এবং আগ্রহ সহকারে কর দিতে পারেন।

অর্থনৈতিক কূটনীতিতে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সামীর সাত্তার বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য রাজনৈতিক কূটনীতি থেকে বেরিয়ে অর্থনৈতিক কূটনীতিতে অগ্রসর হওয়া। আমরাও চাই, এ বিষয়টি যাতে আমাদের কূটনীতিকরা তাদের অবস্থান থেকে ভালোভাবে কাজ করেন। আমাদের পণ্যের বাণিজ্য বাড়াতে তারা কাজ করেন।

এনএফ/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়