ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর হবে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:২৫, ২৩ জানুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ২১:২৫, ২৩ জানুয়ারি ২০২৩
অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর হবে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর

আসন্ন রমজানে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, রোজার সময় কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। কৃত্রিমভাবে পণ্যমূল্য বাড়িয়ে ভোক্তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত দাম আদায় করে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবে অধিদপ্তর।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের (আদা, রসুন, হলুদ ও শুকনো মরিচ) সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে আমদানিকারক, পাইকারি এবং খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি আমিন হেলালী, ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর ভূঁইয়া, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিনিধি, ডিজিএফআই’র প্রতিনিধি, এনএসআই’র প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী।

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, সরবরাহ সঙ্কটের অজুহাত দেখিয়ে আসন্ন রমজানে যেন পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো না হয়, সে বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সতর্ক থাকতে হবে। ডলারের তুলনায় বাজারে পণ্যের দাম আরও বেশি বাড়ানো হয়েছে। দাম নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে বাজার আরও অস্থিতিশীল হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, রমজানের আগে আমাদের দেশি পেঁয়াজ উঠবে। তাই, পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। ৫০ টাকার মধ্যেই থাকবে দাম। কিন্তু, আদা-রসুনের বাজার অস্থিতিশীল। রমজান আসার আগেই দাম বাড়তে শুরু করেছে। হঠাৎ করে আদা-রসুনের দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত কেজিতে বাড়ছে।

এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, কিছু পণ্য আমদানিনির্ভর। ডলারের দাম বৃদ্ধি অনুসারে ২৫ শতাংশ দাম বাড়তে পারত। কিন্তু, ডলারের বাজারের তুলনায় পণ্যের দাম অতিরিক্ত বেশি বাড়ানো হয়েছে।

এ সময় সভায় উপস্থিত ব্যবসায়ীরা তাকে জানান, প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য অস্থিতিশীল ও সরবরাহ সংকট হওয়ার কারণ এলসি খোলার ক্ষেত্রে সমস্যা, অসাধু ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে পণ্য মজুত করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা ও আগের দামে কেনা পণ্য বর্ধিত নতুন দামে বিক্রি করা।

এর পর মহাপরিচালক বলেন, যেসব সাজেশন ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এসেছে, তা সুপারিশ আকারে একটি লিখিত প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

আদা-রসুনের দাম বৃদ্ধি বিষয়ে তিনি বলেন, গত সপ্তাহে আমাদের টিম আদা-রসুনের বাজার নিয়ে কাজ করেছে। আমরা কারওয়ানবাজার ও শ্যামবাজারে পাইকারি, খুচরা এবং আড়তে খোঁজ নিলাম। আন্তর্জাতিক এলসি খোলার বিষয়ে খোঁজ নিলাম। যেমন: আদা, রসুন, শুকনা মরিচ এবং হলুদ—এগুলোতে আমদানিনির্ভরতা আছে। সম্পূর্ণভাবে দেশি উৎপাদন দিয়ে বাজার চালানো সম্ভব না। এখানে যদি ইম্পোর্ট কমে যায়, দেশীয় যে উৎপাদন সেখানে কিন্তু ঘাটতি পড়বে। সামনে রমজানের পরে আবার কোরবানি। তাই, এসব পণ্য যদি রপ্তানি স্মুথ না রাখতে পারি, তাহলে স্থানীয় উৎপাদন দিয়ে এ বাজার ধরে রাখা যাবে না। তাই, আমদানি স্বাভাবিক না থাকলে রমজানে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।

এ সময় তিনি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেন। ব্যবসায়ীদের সব আইন মেনে ব্যবসা করা, সঠিক মূল্যে ভোক্তাদের নিকট পণ্য বিক্রয় করা, ক্রয়- বিক্রয়ের ভাউচার দোকানে সংরক্ষণ করা ও কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি না করার আহ্বান জানান জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

হাসনাত/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়