ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

আখাউড়ায় পাহাড়ি ঢলে ১৫ গ্রাম প্লাবিত, শতাধিক পরিবার পানিবন্দি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:১৩, ১৮ জুন ২০২২  
আখাউড়ায় পাহাড়ি ঢলে ১৫ গ্রাম প্লাবিত, শতাধিক পরিবার পানিবন্দি

ছবি: রাইজিংবিডি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় টানা বৃষ্টি ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ভারী বর্ষণের কারণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন এবং মনিয়ন্দ ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে মনিয়ন্দ ইউনিয়নের কর্নেল বাজার এলাকায় হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

ক্ষতিগ্রস্ত জামাল হোসেন ও সোহাগ মিয়া বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আখাউড়া উপজেলার কালনন্দি খাল এবং হাওড়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আখাউড়া দক্ষিণ এবং মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন এসব গ্রামের লোকজন। 

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর মধ্যে আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের আবদুল্লাহপুর, বঙ্গেরচর, বাউতলা, সেনারবাদী, উমেদপুর এবং মনিয়ন্দ ইউনিয়নের জয়নগর, খলাপাড়া, আইড়ল, ষোলঘর, লস্কপুর, খাড়কুট, তুলাইশিমুল, বড়লৌহঘর ও বান্ডুসার গ্রামে শতাধিক পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। 

এদিকে, বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলী জমি, গাছ পালা এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি। 

ক্ষতিগ্রস্ত মর্জিনা বেগম জানান, উজান থেকে নেমে আসা পানি তার বসতঘরে প্রবেশ করেছে। তিনি অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনও ধরনের সহায়তা পাননি। 

উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন বলেন, তার এলাকার পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তারা ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করছেন।

উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহাবুবুল চৌধুরী দীপক বলেন, তার এলাকার ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তবে সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা এখন পর্যন্ত সব এলাকায় পৌঁছায়নি। জেলা এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

এদিকে হাওড়া নদীর বাঁধ ভাঙার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি পানিবন্দি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। পরে জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের জানান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত ২৮টি পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পানি কমে যাওয়ার পর বাঁধ মেরামত কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা জানান, উজানে বর্ষণের ফলে আখাউড়া-আগরতলা আন্তর্জাতিক সড়কের একাংশ তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি আখাউড়া স্থলবন্দরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেকগুলো তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে যেকোনও মুহূর্তে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

মাইনুদ্দীন রুবেল/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়