ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

আট জেলায় হচ্ছে হাই-টেক পার্ক

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩২, ৯ জানুয়ারি ২০২২  
আট জেলায় হচ্ছে হাই-টেক পার্ক

দেশের আট জেলায় হাই-টেক পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। ভারতীয় নমনীয় ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থে ‘জেলা পর্যায়ে আইটি/হাই-টেক পার্ক স্থাপন (১২টি জেলায়)’ প্রকল্পের অংশ হিসেবে দুটি আলাদা প্যাকেজের আওতায় প্রথমে আটটি জেলায় হাই-টেক পার্ক স্থাপন করা হবে। আট হাই-টেক পার্ক স্থাপনে ব্যয় হবে মোট ১ হাজার ২০৫ কোটি ১৮লাখ ৫৭ হাজার ২২১ টাকা।

সূত্র জানায়, প্রকল্পের অন্তর্গত দরপত্র প্যাকেজ ডব্লিউডি-এ‘র আওতায় রংপুর, নাটোর, জামালপুর, ময়মনসিংহ এবং দরপত্র প্যাকেজ ডব্লিউডি-বি‘র আওতায় ঢাকা, খুলনা, গোপালগঞ্জ ও বরিশাল জেলায় এসব হাই-টেক পার্ক স্থাপন করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ১৩ মার্চ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ পরিদর্শনকালে দেশের প্রতিটি জেলায় হাই-টেক পার্ক নির্মাণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ‘জেলা পর্যায়ে আইটি/হাই-টেক পার্ক স্থাপন (১২টি জেলায়)’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রকল্পটি গত ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল একনেক সভায় ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুন মেয়াদে অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ১ হাজার ৭৯৬ কোটি ৪০ লাখ ৭ হাজার টাকা। এর মধ্যে জিওবি ২৫২ কোটি ৪০ লাখ ৭ হাজার টাকা এবং প্রকল্প সহায়তা (ভারত সরকার) ১ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা।

প্রকল্পের আওতায় ১২টি স্থানে ভারতীয় ঋণে সব অত্যাধুনিক সুবিধাসম্বলিত স্টিল স্ট্রাকচার বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস বিল্ডিং নির্মাণের মাধ্যমে আইটি/হাই-টেক পার্ক স্থাপন করা হবে। প্রকল্পের সব ড্রইং ডিজাইন প্রস্তুত এবং এক্সিম ব্যাংক অব ইন্ডিয়া থেকে সম্মতির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর দরপত্র আহ্বান করা হয়। তবে, কোনো গ্রহণযোগ্য দরদাতা না পাওয়ায় ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে আইসিটি বিভাগ থেকে পুনরায় দরপত্র আহ্বানের সিদ্ধান্ত হয়।

দীর্ঘসময় অতিবাহিত হওয়া এবং করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ডিপিপি সংশোধন করা হয়। পরিকল্পনামন্ত্রী তাতে অনুমোদন দেন। প্রকল্পটির অনুমোদিত ব্যয় ১ হাজার ৮৪৬ কোটি ৯ লাখ টাকা (জিওবি ৩০২ কোটি ৯ লাখ টাকা ও প্রকল্প সহায়তা ১৫৪৪ কোটি টাকা)।

২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ডব্লিউডি-এ (রংপুর, নাটোর, জামালপুর ও ময়মনসিংহ) এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি ডব্লিউডি-বি (ঢাকা, খুলনা, গোপালগঞ্জ ও বরিশাল) দরপত্র পুনরায় আহ্বান করা হয়। তবে, করোনার কারণে বাংলাদেশ- ভারতের সীমান্ত বন্ধ থাকায় ভারতীয় ঠিকাদারের পক্ষে বাংলাদেশে সাইট ভ্রমণ করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে বিভিন্ন সময়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলোর আবেদন ও এক্সিম ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে প্যাকেজ দুটির সময় ১০ বার বাড়ানো হয়।

সর্বশেষ ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর দরপত্রগুলো উন্মুক্ত করা হয়। ডব্লিউডি-এ প্যাকেজের জন্য সুপ্রিম ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইন্ডিয়া লিমিটেড ও  লারসেন অ্যান্ড টাবরো লিমিটেড নামের দুটি প্রতিষ্ঠান এবং ডব্লিউডি-বি প্যাকেজের জন্য ইউআরসি কন্সট্রাকশন প্রাইভেট লিমিটেড, ইন্ডিয়া; সুপ্রিম ইন্ফ্রাস্ট্রাকচার ইন্ডিয়া লিমিটেড ও লারসেন অ্যান্ড টাবরো লিমিটেড দরপত্র জমা দেয়। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি দুটি প্যাকেজের জন্য লারসেন অ্যান্ড টাবরো লিমিটেডের নাম সুপারিশ করে। দরপত্র যাচাই-বাছাই শেষে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কারিগরি মূল্যায়ন প্রতিবেদন এক্সিম ব্যাংক অব ইন্ডিয়ায় পাঠালে তারা তাতে সম্মতি দেয়।

ডব্লিউডি-এ প্যাকেজের আওতায় রংপুর, নাটোর, জামালপুর ও ময়মনসিংহে আইটি/হাই-টেক পার্ক নির্মাণে ব্যয় হবে ৬০৯ কোটি ৪৭ লাখ ১৫ হাজার ২৭৮ টাকা। ডব্লিউডি-বি প্যাকেজের আওতায় ঢাকা, খুলনা, গোপালগঞ্জ ও বরিশাল জেলায় আইটি/হাই-টেক পার্ক নির্মাণে ব্যয় হবে ৫৯৫ কোটি ৭১ লাখ ৪১ হাজার ৯৪৩ টাকা। অর্থাৎ প্রকল্পের দুটি প্যাকেজ বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ২০৫ কোটি১৮লাখ ৫৭ হাজার ২২১ টাকা।

এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

হাসনাত/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়