ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

আম নিয়ে দুশ্চিন্তায় বাগানমালিকরা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৩২, ৬ মে ২০২১   আপডেট: ১৭:৩৯, ৬ মে ২০২১
আম নিয়ে দুশ্চিন্তায় বাগানমালিকরা

আম উৎপাদনে বিশ্বে অষ্টম বাংলাদেশ। এ দেশে বছরে ২৪ লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়। এর সিংহভাগই বাজারে আসে জ্যেষ্ঠ মাসে। এজন্য প্রতিবছর এ সময়ে আমচাষিরা ব্যস্ত থাকেন বাগান বিক্রি নিয়ে। স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে কয়েক হাত বদল হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি হতো আমবাগান। কিন্তু এ বছর তা কম হচ্ছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বাগানমালিকরা।

এখন বাজারে যেসব আম পাওয়া যাচ্ছে তা রাজশাহী বা চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম নয় বলে ওই অঞ্চলের চাষিরা জানিয়েছেন। তাদের মতে, এগুলো পাহাড়ি অঞ্চলের আম বা বারোমাসি আম। এখন যেসব আম পাওয়া যাচ্ছে, তা কৃত্রিম উপায়ে পাকানো। আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ে আম পরিপূর্ণভাবে বাজারে আসবে।

এ বছর অতি খরায় আমের রং ও আকার ভালো না হওয়ায় ক্রেতারা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। অন‌্যদিকে, লকডাউনের কারণে আম পরিবহন নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। 

কৃষকরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময় খরা চলতে থাকায় আমের গায়ে পোকা ও দাগ দেখা দিচ্ছে। বোঁটায় ব্যাকটেরিয়া আক্রমণের কারণে ঝরে পড়ছে আম। ওষুধ ব্যবহারেও কাজ হচ্ছে না।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ম্যাংগো প্রডিউসার মার্চেন্টস অ‌্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি মো. মনোয়ারুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে জানান, খরায় আমবাগানে খরচ বেড়েছে। বৃষ্টি না থাকায় আমের আকার ছোট হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত দাম পাবেন কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন বাগানমালিকরা। বৃষ্টি না হলে অনেক ক্ষতি হবে।

তিনি জানান, গত বছর করোনা ও ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন বাগানমালিকরা। এ বছর সে ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার আশায় ছিলেন তারা। কিন্তু প্রয়োজনের সময় বৃষ্টি না হওয়ায় এবং অতিরিক্ত তাপমাত্রায় আম ঝরে পড়ছে। অন‌্যদিকে, লকডাউনের কারণে মৌসুমি ক্রেতারা রাজশাহী অঞ্চলে আসতে পারছেন না।

বছরে ২৪ লাখ মেট্রিক টন আম উৎপদন করে বিশ্বে অষ্টম স্থানে বাংলাদেশ। গত ১০ বছরে দেশে আম উৎপাদন বেড়েছে ১২ লাখ মেট্রিক টনের বেশি। আম উৎপাদনে প্রথম অবস্থানে ভারত। তাদের উৎপাদনের পরিমাণ দেড় কোটি মেট্রিক টন। দ্বিতীয় স্থানে চীন। তাদের উৎপাদন ৪৩ লাখ মেট্রিক টন। খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, ইপিবি, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিবিএস, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ব্যাপক কর্মসূচির ফলে এখন সারা দেশেই আম চাষ হচ্ছে। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে হিমসাগর, গোপালভোগ, ল্যাংড়া ও ফজলি আমের চাষ বেশি হয়। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে ব্যাপকভাবে আম্রপালি চাষ হচ্ছে।
সরকারি হিসেবে গত পাঁচ বছরের মধ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে ১ কোটি ২৩ লাখ মেট্রিক টন দেশি ফল উৎপাদন হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ২১ লাখ টনের কিছু বেশি। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ কোটি ২১ লাখ টন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ কোটি ২০ টন এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ১০ লাখ টন।

ঢাকা/শিশির/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়