ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

এক সড়ক সংস্কারে ৩ প্রকল্প, একটিরও কাজ হয়নি 

নেত্রকোনা সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২৫, ১১ জানুয়ারি ২০২২   আপডেট: ১৯:২৭, ১১ জানুয়ারি ২০২২
এক সড়ক সংস্কারে ৩ প্রকল্প, একটিরও কাজ হয়নি 

নেত্রকোনার মদনের তিয়শ্রী ইউনিয়নের একটি কাঁচা সড়ক মাটি কেটে সংস্কারের জন্য প্রতিবছর বিভিন্ন প্রকল্প অনুমোদন করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না। এসব প্রকল্পের কোনটায় নামমাত্র মাটি কেটে আবার কোনটায় একেবারেই কোন কাজ না করে টাকা তুলে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মনসুর মিয়ার বিরুদ্ধে ।

প্রকল্পের বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাৎ করায় প্রকল্পের সভাপতি সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মনসুর মিয়ার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় সাধারণ প্রথম পর্যায়ে উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড ‘পাহাড়পুর পাকা রাস্তা হইতে জাগরণ বর্মণের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত’ প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। উক্ত প্রকল্পে মাটি ভরাটের জন্য সাড়ে ১২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫ লাখ ১২ হাজার টাকা।

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ওই রাস্তা মেরামত প্রকল্পের বরাদ্দকৃত টাকা নামে মাত্র কাজ করে সিংহভাগ টাকা আত্মসাৎ করেছেন সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মনসুর মিয়া। এছাড়া একই রাস্তা সংস্কারে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে টিআর কর্মসূচির আওতায় (নন সোলার) প্রকল্পের  ৫৮ হাজার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। এর সাথে ওই ওয়ার্ডে (টিআর) প্রকল্পের আরো ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

কোনো কাজ না করেই আগের প্রকল্পের সব বরাদ্দ আত্মসাৎ করায় এলাকাবাসী বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করাসহ আদালতে মামলা করেন। অদৃশ্য কারণে এগুলো ধামাচাপা পড়ে যাওয়ায় এলাকাবাসীর মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার পাহাড়পুর গ্রামে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। দেখা গেছে, বরাদ্দের তুলনায় রাস্তাটি অতি ছোট। রাস্তায় দায়সারা সামান্য মাটি কাটা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ শ্রমিক দিয়ে করানোর কথা থাকলেও তা করা হয়েছে ভ্যাকু দিয়ে।

ভেকুর চালক রিকন মিয়া জানান, এই রাস্তায় মোট ২৪ হাজার টাকার মাটি কাটিয়েছে প্রকল্প কমিটি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাহাড়পুর গ্রামের একাধিক ব্যক্তি বলেন, মনসুর মেম্বার বলেছে এই রাস্তার জন্য ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন। গত বছরও এই রাস্তার কাজের টাকা আত্মসাৎ করার পর এলাকাবাসী মামলা করেছিল। পরে কিছু মাটি কাটিয়েছিলেন।

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য মনসুর মিয়া জানান, প্রকল্পের কাজের একটি বিল পেয়েছি। মাটি কাটার কাজ এখনো চলমান রয়েছে।

জানতে চাইলে তিয়শ্রী ইউপি চেয়ারম্যান ফখর উদ্দিন আহমেদ জানান, পাহাড়পুর গ্রামের রাস্তাটি রিজার্ভ প্রকল্প। কে কাজ করছে তা আমার জানা নেই।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শওকত জামিল জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদ বলেন, পাহাড়পুর গ্রামের কাবিখা প্রকল্পের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। উক্ত প্রকল্পের একটি বিল দেওয়া হয়েছে। বাস্তবায়িত প্রকল্প পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জুয়েল/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়