ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

এমারেল্ড অয়েলকে উৎপাদনে ফেরাতে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০১:০৯, ৩ মার্চ ২০২১  
এমারেল্ড অয়েলকে উৎপাদনে ফেরাতে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ

চার বছর ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকা শেয়ারবাজারে খাদ্যর অানুসঙ্গিক খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এমারেল্ড অয়েলের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এরই ধারাবাহিকতায় কোম্পানিটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের বাদ দিয়ে নতুন ৫ জন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

কোম্পানিটিকে উৎপাদনে ফিরিয়ে আনা ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে ‘জেড’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানিতে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই ৫ জন স্বতন্ত্র পরিচালক কোম্পানিটির আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে কাজ করবেন বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে। 

মঙ্গলবার (২ মার্চ) এ সংক্রান্ত একটি চিঠি কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সব পরিচালকদের কাছে পাঠিয়েছে বিএসইসি।

এমাল্ডে অয়েলের জন্য বিএসইসির মনোনীত স্বতন্ত্র পরিচালক হলেন, সরকারের সাবেক সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক, ড. প্রশান্ত কুমার বেনার্জি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম সারওয়ার, সজিব হোসাইন (সিএফএ) এবং সহকারী অধ্যাপক ড. সন্তুষ কুমার দেব। এর মধ্যে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবে সরকারের সাবেক সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক।

‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানির জন্য গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর বিএসইসির জারি করা নির্দেশনার ২ নম্বরে উল্লেখ রয়েছে, ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে যাওয়ার ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠন করা হবে। পুনর্গঠিত পর্ষদে বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডার পরিচালকরা পুনরায় পরিচালক হওয়ার সুযোগ পাবেন। এছাড়া, কমিশন এক বা একাধিক স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেবে। ওই নির্দেশনার আলোকেই কোম্পানিটিতে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।

কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১ জানুয়ানি এমাল্ডে অয়েল ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন করছে। একইসঙ্গে গত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে কোম্পানিটির সব ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘ সময় ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করা কোম্পানিটির আর্থিক অবস্থার উন্নতি করতে ব্যর্থ হয়েছেন স্বতন্ত্র পরিচালকসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা।

এছাড়া, কোম্পানিটি আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করতেও ব্যর্থ হয়েছে। আর ২০১৫ সালে তালিকাভুক্তির পর থেকে টানা ৫ বছর কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দেয়নি। এখন পর্যন্ত স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত থাকা সত্ত্বেও সিকিউরিটিজ আইন যথাযথভাবে পরিপালন করছে না এবং প্রতিনিয়তই আইন লঙ্ঘন করে যাচ্ছে কোম্পানিটি। আর ২০১৬ সালের পর থেকে কোম্পানিটির ব্যর্থতার কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, ‘পুঁজিবাজারে উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করে দুর্বল কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হচ্ছে। নানা কারণে বর্তমানে উৎপাদন কার্যক্রম নেই এমন কোম্পানিগুলোকে পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এমারেল্ড অয়েল কোম্পানি বাণিজ্যিক উৎপাদনে গেছে ২০১১ সালে। কোম্পানিটি স্পন্দন নামে রাইস বান অয়েল উৎপাদন ও বাজারজাত করে থাকে। কোম্পানিটির উৎপাদনে যাওয়ার তিন বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০১৪ সালের মার্চ থেকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তি হয়। কোম্পানিটি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) ২ কোটি শেয়ার ছেড়ে পুঁজিবাজার থেকে ২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। বর্তমানে কোম্পানিটি ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন করছে। কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৩০.৪৫ শতাংশ পরিচালক, ১৬.০৮ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং ৫৩.৪৭ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার রয়েছে।

ঢাকা/এনটি/নাসিম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়