ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

কুয়াকাটায় যত্রতত্র অস্থায়ী শুঁটকি পল্লী

মো. ইমরান, পটুয়াখালী  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০২, ১৯ জানুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ১৫:০৫, ১৯ জানুয়ারি ২০২৩
কুয়াকাটায় যত্রতত্র অস্থায়ী শুঁটকি পল্লী

প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত হওয়ায় কুয়াকাটার শুঁটকির রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। তবে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাত করণের নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় সৈকতের যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অস্থায়ী শুঁটকি পল্লী। এতে দুষিত হচ্ছে পরিবেশ। 

তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় স্থায়ী শুটকি পল্লী নির্মানের দাবি ব্যবসায়ী ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা কর্মীদের। 

সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, নির্দিষ্ট শুঁটকি পল্লী না থাকায় গত বছর শীত মৌসুমে কুয়াকাটা সৈকতের মীরা বাড়ি পয়েন্টে অস্থায়ী ভাবে গড়ে ওঠে শুঁটকি পল্লী। এর আগের বছর ছিলো কম্পিউটার সেন্টার পয়েন্টে। এবছর এ পল্লী গড়ে উঠেছে লেম্বুর বনসহ সৈকতের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে। যত্রতত্র শুঁটকি পল্লী গড়ে ওঠায় মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের। তবে কোন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই শুধুমাত্র কাঁচা মাছে লবণ মেখে সৈকতে বাঁশের মাচা বানিয়ে রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হচ্ছে শুঁটকি। এসব পল্লীতে পাওয়া যায় পোয়া, সোনাপাতা, মধুফাইস্যা, রূপচাঁদা, শাপলাপাতা, চাপিলা, ফাইস্যা, লইট্টা, চিংড়ি, ছুড়ি, হাঙ্গর, ভোল ও কোড়ালসহ অন্তত ৫০ প্রজাতির মাছের শুটকি। তাই প্রতিনিয়ত শুঁটকি পল্লীতে পর্যটকসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ী ক্রেতা ভিড় জমাচ্ছেন ।

সাতক্ষীরা থেকে আসা পর্যটক রাহায়েল আহমেদ জানান, সৈকতে ঘুরেছি। বেশ কিছু স্থান থেকে শুঁটকির পঁচা গন্ধ ভেসে এসেছে। তবে শুঁটকি পল্লীতে গিয়ে খুব ভালো লেগেছে। বেশ কিছু লইট্টা শুঁটকি পরিবারের জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছি। 

অপর পর্যটক মুরাদ সরকার বলেন, এখানের শুটকির নাকি আলাদা স্বাদ। তাই পরিবারের জন্য বেশ কয়েক পদের প্রায় ৮ কেজি শুটকি কিনেছি।

লেম্বুর বনে অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা শুঁটকি পল্লীর ব্যবসায়ী হানিফ মিয়া বলেন, আমি সৈকতে ৩০ বছর পর্যন্ত শুঁটকির ব্যবসা করছি। প্রতি বছরই আমাদের বিভিন্ন কারণে স্থান পরিবর্তন করতে হচ্ছে। এতে আমরা লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছি। তবে আমাদের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান করে দিলে ভালোভাবে ব্যবসা করতে পারতাম। 

ঝাউবাগান এলাকায় অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা শুঁটকি পল্লীর ব্যবসায়ী নজির হাওলাদার জানান, নির্দিষ্ট স্থান থাকলে আমরা বর্ষা মৌসুমেও শুঁটকির ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু এখনতো আমাদের বছরের ৬ মাস অলস সময় কাটাতে হয়। তাই সরকারের কাছে একটি নির্দিষ্ট শুঁটকি পল্লী গড়ে তোলার দাবি জানাচ্ছি। 

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কলাপাড়া শাখার সদস্য সচিব মেজবাহ মাননু জানান, যত্রতত্র শুঁটকি পল্লী গড়ে ওঠায় বাতাস দূষণ হচ্ছে। পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। আমরা বার বার প্রশাসনকে স্থায়ী শুঁটকি পল্লী নির্মাণ করে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছি। 

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ্য জানান, স্থায়ী শুঁটকি পল্লী নির্মাণের লক্ষ্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে শুঁটকি ব্যবসায়ীদের সমস্যা সমাধান হবে। 

ইমরান/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়