ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ক্রেতার মৃত্যুতে ওয়ালটন প্লাজার কিস্তি মওকুফ, ৪০ হাজার টাকা সহায়তা

নূর আহমদ, সিলেট || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:১৪, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ১১:১৫, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩
ক্রেতার মৃত্যুতে ওয়ালটন প্লাজার কিস্তি মওকুফ, ৪০ হাজার টাকা সহায়তা

ছবি: রাইজিংবিডি

দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্যের ব্র্যান্ড ওয়ালটন গ্রুপের সিলেট নগরীর সুবিদবাজার প্লাজা থেকে কিস্তিতে পণ্য (ফ্রিজ) কিনেছিলেন সুরুজ আলী (৫২)। 

পণ্য কেনার পর পুরো কিস্তি পরিশোধের আগেই অসুস্থতাজনিত কারণে মারা যান তিনি। এরপর পরবর্তী কিস্তি পরিশোধ তো দূরে থাক উল্টো ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষা নীতি’তে মৃতের পরিবারের হাতে ৪০ হাজার ২০০টাকা তুলে দিয়েছে ওয়ালটন গ্রুপ। মৃতের পরিবারের পক্ষে তার স্ত্রী সারমিন বেগমের হাতে ওই টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়েছে। রোববার মৃতের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সাহেবেরগাও গ্রামে আনুষ্ঠানিকভাবে স্ত্রীর হাতে চেক তুলে দেওয়া হয়।

২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর সিলেট নগরীর সুবিদবাজার ওয়ালটন প্লাজা থেকে ২৬ হাজার ৬৯০ টাকা দামের ফ্রিজ কিস্তিতে কেনেন সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সাহেবেরগাও গ্রামের সুরুজ আলী। কেনার সময় কোম্পানির নিয়ম অনুযায়ী প্রাথমিক জমার টাকা পরিশোধ করেন। এরপর নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করছিলেন। তখন ওই প্লাজা থেকে ওয়ালটন কিস্তি সুরক্ষা কার্ড গ্রহণ করেন। কিস্তি চলাকালীন চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি সুরুজ আলী অসুস্থতাজনিত কারণে মারা যান। এরপর মারা যাওয়ার পনের দিনের মধ্যে পরিবারের পাশে আর্থিক সহায়তা নিয়ে দাঁড়িয়েছে ওয়ালটন।

সুরুজ আলীর স্ত্রী সারমিন বেগম ওয়ালটনের কিস্তি সুরক্ষা সহায়তা পেয়ে অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘স্বামী মারা যাওয়ার পর ওয়ালটনের কিস্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। তিনি ২৬ হাজার ৬৯০ টাকার মধ্যে ১৬ হাজার ৯৫০ টাকা পরিশোধ করে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। প্লাজার লোক আমাদের সঙ্গে দেখা করে ফ্রিজের কাগজপত্র নিয়ে যায়। ফ্রিজের বাকি কিস্তি আর দিতে হয়নি। আমাদের আর্থিক সহায়তা করেছে। ওয়ালটনের এই সহায়তায় আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’

ওয়ালটন সিলেট এর ডিভিশনাল ক্রেডিট ম্যানেজার মাকসুদ আলম বলেন, ‘সুরুজ মিয়া ২৬ হাজার ৬৯০ টাকার মধ্যে ১৬ হাজার ৯৫০ টাকা পরিশোধ করে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তার কাছে কিস্তি বাবদ পাওনা ছিলো ৯ হাজার ৭৪০ টাকা। তার কাছ থেকে ওয়ালটন ঘোষিত কিস্তি ক্রেতা সুরক্ষা নীতি অনুযায়ী ৯ হাজার ৭৪০ টাকা সমন্বয় করে সুরুজ মিয়ার স্ত্রীর হাতে ৪০ হাজার ২০০ টাকা তুলে দিয়েছি।

তিনি বলেন, কিস্তিতে পণ্য ক্রয়ে ক্রেতাদের আস্থা এবং ভালোবাসা বেড়েছে। এই উদ্যোগের ফলে আজ আমরা এক মৃত ক্রেতার পরিবারের হাতে আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দিয়েছি।

চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন সিলেট নর্থ এর রিজিওনাল হেল্প ম্যানেজার সোহেল রানা, রিজিওনাল ক্রেডিট ম্যানেজার মনতায আহমদ, সিলেট সাউথ এর আরএসএম মো. দেলোয়ার হোসেন, সিলেট সাউথ এর আরসিএম মো. নাজমুল হোসাইন অনিক, ওয়ালটন প্লাজা সুবিদবাজার শাখার ম্যানেজার মো. জাকির হোসেন, ওয়ালটন প্লাজা মদীনা মার্কেট শাখার ম্যানেজার কেশব দাস রাজা, ওয়ালটন প্লাজা আম্বরখানা শাখার ম্যানেজার মো. খুরশেদ আলম, ওয়ালটন প্লাজা সোবহানীঘাট শাখার ম্যানেজার সুজন কর্মকার, ওয়ালটন প্লাজা ছাতক শাখার ম্যানেজার আল আমিন রাজন, ওয়ালটন প্লাজা ইসলামপুর শাখার ম্যানেজার মো. সাজ্জাদুল চৌধুরী, ছাতকের কালারুকা ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান মো. তাজ উদ্দিনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর ওয়ালটন গ্রাহকদের জন্য ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষা নীতি’ এবং ‘ওয়ানস্টপ সার্ভিস’ চালু করেছে। কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষা নীতির আওতায় যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা থেকে কিস্তিতে পণ্য ক্রয়কারীদের কিস্তি সুরক্ষা কার্ড দেওয়া হয়। পণ্যমূল্যের ভিত্তিতে কিস্তি চলমান থাকা অবস্থায় ক্রেতার মৃত্যু হলে ৫০ হাজার থেকে ৩ লাখ এবং তার পরিবারের কোনো সদস্য মারা গেছে ২৫ হাজার থেকে দেড় ১ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রদান করবে ওয়ালটন প্লাজা। তবে মৃত্যুকালীন সংশ্লিষ্ট পণ্যের অনাদায়ী কিস্তির টাকা সমন্বয়ের পর অবশিষ্ট টাকা ক্রেতা বা তার পরিবারকে প্রদান করে ওয়ালটন গ্রুপ।

পড়ুন: গ্রাহকের স্বামীর মৃত্যুতে ওয়ালটন প্লাজার কিস্তি মওকুফ, ২৫ হাজার টাকা সহায়তা

/নূর/সাইফ/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়