খুলনায় ৩ কারণে ট্রিপল মার্ডার, ক্লু উদঘাটন
নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম
বিকৃত যৌন লালসা, পরকীয়া এবং প্রতারণামূলক আর্থিক লেনদেনের কারণে খুলনার কয়রা উপজেলায় মা, বাবা ও শিশু কন্যাকে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে খুনিরা মা-মেয়েকে ধর্ষণও করে।
হত্যার সাড়ে তিন মাস পর পুলিশ এ ঘটনার ক্লু উদঘাটন করেছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৫ জনকে। সোমবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
গত বছরের ২৬ অক্টোবর উপজেলার বামিয়া গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুল্লাহ গাজী (৩৩), তার স্ত্রী বিউটি খাতুন (২৫) ও একমাত্র কন্যা হাবিবা খাতুন টুনিকে (১৩) কুপিয়ে হত্যা করে মৃতদেহ বাড়ির পুকুরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বলেন, বামিয়া গ্রামের মৃত কওছার গাজীর ছেলে জিয়াউর রহমান জিয়ার সঙ্গে কুদ্দুস গাজীর স্ত্রী রাজিয়া সুলতানার পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। কিন্তু হাবিবুল্লাহ গাজী তাতে বাধা দেন। এ কারণে হাবিবুল্লাহকে সরিয়ে দিতে জিয়াউর রহমান ও তার সহযোগী সামছুর নেতৃত্বে ছয়জন ২৫ অক্টোবর মধ্য রাতে হাবিবুল্লাহকে হত্যা করতে তার বাড়িতে যায়। বিষয়টি তার স্ত্রী বিউটি খাতুন ও কন্যা হাবিবা খাতুন টুনি টের পেলে দুর্বৃত্তরা প্রথমে মা-মেয়েকে ধর্ষণ করে। পরে বাবা, মা ও মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করে ওই বাড়ির পুকুরে লাশ ফেলে যায়। মরদেহ দীর্ঘ সময় পানিতে থাকার কারণে মেডিকেল পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি।
পুলিশ সুপার মাহবুব হাসান আরও জানান, ঘটনার পর নিহত হাবিবুল্লাহর মা কোহিনুর বেগম বাদী হয়ে কয়রা থানায় মামলা করেন। এ মামলা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্তকালে প্রাথমিকভাবে জিয়াউর রহমান, রাজিয়া সুলতানা, মো. রহমান, আব্দুল খালেক, কামরুল, বিল্লাল ও সামছুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মামলাটি কয়রা থানা থেকে জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবিতে পাঠানো হয়।
পুলিশ সুপার মাহবুব হাসান বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে গত ৮ জানুয়ারি যশোরের অভয়নগর এলাকা থেকে এ ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত আব্দুর রশীদ গাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি রোববার (৯ জানুয়ারি) কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সাইফুল ইসলাম বাবলু, আল-আমিন হোসেন, আসলাম সরদার, আব্দুল ওহাব ওরফে হক, তাসলিমা বেগম, শামীমুল ইসলাম অঞ্জন ও মোস্তফা কামালসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার মাহবুব হাসান বলেন, ক্লু উদঘাটন এবং আসামিরা গ্রেপ্তার হওয়ায় দ্রুত এ মামলার চার্জশিট দাখিল করা সম্ভব হবে।
নূরুজ্জামান/বকুল
আরো পড়ুন