ঘরে ঘরে পতাকা বিলাচ্ছেন নারী মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া
আবু নাঈম || রাইজিংবিডি.কম
২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তি উপলক্ষ্যে ঘরে ঘরে জাতীয় পতাকা পৌঁছে দিচ্ছেন পঞ্চগড়ের নারী মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া বেগম। একই সঙ্গে তিনি শিশুদেরকে মুক্তিযুদ্ধের গল্পও শোনাচ্ছেন।
গত কয়েকদিন থেকেই রোকেয়া বেগমের এ কার্যক্রম চললেও বুধবার (২৪ মার্চ) দুপুর থেকে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এ কাজ শুরু করেন।
এদিন পঞ্চগড় জেলা শহরের রওশনাবাগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করা হয়। এসময় তিনি স্থানীয় শিশু ও শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনান। সবার হাতে তুলে দেন লাল সবুজের পতাকা।
এতে উপস্থিত ছিলেন- জেলা মহিলা আ. লীগের সভানেত্রী রেজিয়া ইসলাম, বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষিকা সাদেকা আক্তার জাহান, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তোফায়েল ইসলাম তরুন প্রমুখ।
মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানাতেই এ উদ্যোগ নিয়েছেন রোকেয়া বেগম। এছাড়া মহান স্বাধীনতা দিবসের দিন যারা পতাকা ও ফেস্টুন নিয়ে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানাতে পারে না তাদের মাঝে তিনি তার নিজ উদ্যোগে জাতীয় পতাকা, ফেস্টুন ও মাস্ক বিতরণ করছেন। তিনি নিজ হাতে শিশু ও শিক্ষার্থীদের হাতে এসব তুলে দিচ্ছেন।
বীরমুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া বেগমের বাড়ি তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের মুনিগছ এলাকায়। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মাত্র ১৫ বছর বয়সে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
এদিকে জাতীয় পতাকা ও ফেস্টুন পেয়ে আনন্দে উল্লাসিত শিশুরা। শিশুরা বলে, ‘আমরা বীরমুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া বেগমের কাছে আজ মুক্তিযু্দ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর জীবন কাহিনী জানতে পারলাম। তিনি আমাদেরকে পতাকা ও ফেস্টুন দিয়েছেন। আমাদের অনেক ভালো লাগছে। আমরা এই পতাকা হাতে নিয়ে মাথায় ফেট্টি বেঁধে স্বাধীনতা দিবস পালন করব।’
মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া বেগম বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেই। সেসময় একজন নারী হয়ে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি। কিন্তু স্বাধীনতার মাত্র ৫০ বছর পরে এসে দেখছি নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সম্পর্কে অনেক কিছুই জানে না। অনেকেই আছে পতাকা কেনার সামর্থ্য নেই। তাই আমি উদ্যোগ নিয়েছি জেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযু্দ্ধের গল্প শোনাব এবং জাতীয় পতাকা ও ফেস্টুন বিতরণ করব। আমি যতদিন বেঁচে থাকবো এ কাজ করে যাব।’
জেলা মহিলা আ. লীগের সভাপতি রেজিয়া ইসলাম বলেন, ‘বীরমুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া বেগম আমাদের পঞ্চগড়ের নারীদের গর্ব ও অহংকার। তিনি যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। তার এমন উদ্যোগে আমাদের নতুন প্রজন্মসহ আমরাও স্বাধীনতার ইতিহাস জানতে পারছি।’
পঞ্চগড়/সনি
আরো পড়ুন