ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

ছবি এঁকে উপার্জনের অর্থ অসহায়দের দিচ্ছেন রুমকি  

তানজিন রোবায়েত রোহান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪২, ২৭ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ১২:৩৫, ২৭ অক্টোবর ২০২০
ছবি এঁকে উপার্জনের অর্থ অসহায়দের দিচ্ছেন রুমকি  

জান্নাতুল কাউসার রুমকি। তিনি পড়াশোনা করছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চতুর্থ বর্ষে।

করোনা মহামারিতে ক্যাম্পাস বন্ধ। ঘরবন্দি এই সময়টা রুমকি হেলাফেলায় কাটাননি। তিনি তার প্রতিভা রঙ-তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলেছেন। কখনো আঁকছেন সাগর-নদীর ছবি, কখনো বন-জঙ্গলের, আবার গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যকে রঙে রঙে দিয়েছেন রূপের বাহার।

অনেকেই প্রকৃতিকে ভালোবাসেন, প্রকৃতির স্নিগ্ধ আবহাওয়াকে কাছে টানের। এমন প্রকৃতিকে ভালোবেসে রঙ-তুলির আঁচড় দিয়ে ভিন্নরকম এক শৈল্পিক কারুকাজ প্রদর্শন করতে কজনই বা পারেন! চিত্রকর্মের বদৌলতে কত জনই তো হয়েছেন রথী থেকে মহারথী। দুর্বিক্ষের ভাবনায় চিত্রকর্মে রূপ দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শিল্পী ‘জয়নুল আবেদীন’। মূলত মানুষ তো বাঁচে তার কর্মে। 

রুমকি বিভিন্ন বিষয়বস্তুকে রঙ-তুলির আঁচড়ে সাজিয়ে তুলছেন এক অপরূপ সৌন্দর্যে। গাছ, মাছ, প্রাকৃতির বিভিন্ন দৃশ্য, প্রজাপতি, আকাশের তারা, সুন্দরবনের হরিণ ও ফুলসহ নানাবিধ ছবিও আঁকেন। এছাড়াও তিনি হাতের তৈরি বিভিন্ন গহনা, কাপড়ের উপর নকশা, হাতের কাজ ইত্যাদি করে থাকেন। 

একজন চিত্রশিল্পী রঙ-তুলি দিয়ে সবকিছুতে নতুন মোড় দিতে পারেন। সমাজ, দেশ ও প্রকৃতিকে দেখতে শেখান একটু ভিন্ন আঙ্গিকে। একটি সুন্দর ছবি শুধু আমাদের চোখে প্রশান্তিই দেয় না, খুলে দেয় মনের ভাবনার দুয়ার। তেমনিভাবে রুমকি চিত্রকর্মের সাহায্যে দাঁড়িয়েছেন অসহায়ের পাশে। 

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তানিন মেহেদি নামে এক শিক্ষার্থী ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে রুমকি তার চিত্রকর্ম থেকে আয় করা ৯০ শতাংশ টাকাই দিয়েছেন তার চিকিৎসার জন্য। আর বাকি ১০ শতাংশ টাকা রেখেছেন চিত্রকর্ম আঁকার সরঞ্জাম কিনতে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থীর নিজস্ব উদ্যোগের নাম দিয়েছেন ‘আয়নাঘর’। এই ব্যানারে তার চিত্রকর্মগুলো প্রদর্শিত হচ্ছে। এ পর্যন্ত তিনি নান্দনিক নকশায় ১৭ রকমের চিত্রকর্ম বানিয়েছেন বলে জানা যায়। 

রুমকি বলেন, ‘আমি সাধারণত প্রকৃতি নিয়ে আঁকাআঁকি করতে পছন্দ করি। প্রকৃতির সবুজ আমাকে খুব বেশি টানে। বড় হওয়া চট্টগ্রামে। আগেও আমি বিভিন্ন কাজ করেছি। আমার হাতে তৈরি গহনা ও হাতে আঁকা জামা-কাপড় নিয়ে কাজ করা হয় বেশি। আমার উদ্যোগের নাম ‘আয়নাঘর’। তবে চিত্রকর্ম নিয়ে আগে কাজ করলেও এর সাহায্যে চ্যারিটির উদ্যোগ এই প্রথম। এর আগে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দুইটা চ্যারিটি মেলা করেছিলাম।’

রুমকির এই আয়নাঘরে কাজ করছেন তার মতো অনেক স্বপ্নবাজ তরুণ শিক্ষার্থী। 

‘এখন কম পরিসরেই চিত্র আঁকা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুযোগ-সুবিধা ও কোনো প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আমার এই চিত্রকর্মকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারবো’, বলেন রুমকি। 

লেখক: শিক্ষার্থী, ইবনে তাইমিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

কুমিল্লা/মাহি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়