ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

টি-টোয়েন্টিতেও পারল না বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ২৮ মার্চ ২০২১   আপডেট: ১৩:২০, ২৮ মার্চ ২০২১
টি-টোয়েন্টিতেও পারল না বাংলাদেশ

প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৬৬ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। হ্যামিল্টনে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ৩ উইকেটে ২১০ রান তুলে নিউ জিল্যান্ড। জবাবে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ১৪৪ রানের বেশি করতে পারেনি।  বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় ম্যাচটি শুরু হয়।

স্কোর

বাংলাদেশ ১৪৪/৮ (২০ ওভার)

আফিফ ৪৫, সাইফ উদ্দীন ৩৪* 

নিউ জিল্যান্ড ২১০/৩ (২০ ওভার)

কনওয়ে ৯২, ফিলিপস ২৪।

একপেশে ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের জয়

ফরম্যাট পাল্টেছে। পাল্টেছে নিউ জিল্যান্ড দল। বাংলাদেশ দলেও এসেছে একাধিক পরিবর্তন। কিন্তু মাঠে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স, খেলার ধরণ এবং ফলাফলে পরিবর্তন হয়নি। তিন ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও হার দিয়ে শুরু করলো বাংলাদেশ। 

একপেশে ম্যাচে নিউ জিল্যান্ড হারিয়েছে বাংলাদশেকে। ব্যাটিং বা বোলিং কিছুতেই নেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা। সিনিয়র ও অভিজ্ঘ ক্রিকেটাররা নিতে পারছেন না দায়িত্ব। মোস্তাফিজের বোলিং একেবারেই হতশ্রী। প্রতি ম্যাচেই রানের ফোয়ারা। অভিষিক্ত শরিফুল ভালো করতে পারেননি। সাইফ উদ্দিনও আপ টু মার্ক নন। ব্যাটিংয়ে লিটন, সৌম্য, মিথুনরা মাঠে যাচ্ছেন, ফিরছেন। মাহমুদউল্লাহরও একই অবস্থা। সব মিলিয়ে দলগতভাবে পারফরম্যান্সের কোনো ছাপ নেই। তাইতো একের পর হার সঙ্গী হচ্ছে বাংলাদেশের।  

ফার্গুসনের ইয়র্কারে বোল্ড আফিফ

৩৩ বলে ৪৫ রান করে সাজঘরে ফিরলেন আফিফ হোসেন। তার বিদায়ে সপ্তম উইকেট হারাল বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে রান মাত্র ১২২। দলের ব্যর্থতার মিছিলে ব্যতিক্রমী ছিলেন আফিফ। উইকেটের চারিপাশে শট খেলে রান পাচ্ছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।তার ইনিংসটি ছিল ৫ চার ও ১ ছক্কায় সাজানো। 

আফিফ-সাইফের পঞ্চাশ রানের জুটি

সপ্তম উইকেট জুটিতে সাইফ উদ্দিন ও আফিফ হোসেন ৫০ রানের জুটি গড়েছেন। ৩৭ বলে তাদের জুটির ৫০ রান পূর্ণ হয়। তাদের ব্যাটে প্রতিরোধ পেলেও দ্রুত রান তুলতে পারছেন না তারা। ফলে ধারাবাহিকভাবে আসকিং রান রেট বেড়েই যাচ্ছে। ১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ১১৩। জয়ের জন্য শেষ ৩০ বলে দরকার ৯৮।   

ব্যাটিংয়ে ধুকছে বাংলাদেশ

১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ৭৬। জয়ের জন্য শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশকে করতে হবে আরও ১৩৫ রান। নিউ জিল্যান্ডের প্রয়োজন ৪ উইকেট। ব্যাটিং বিপর্যয়ে দ্রুত উইকেট হারিয়েছে অতিথিরা। পাওয়ার প্লে’তে ৪ উইকেট হারানোর পর ইশ শোধির এক ওভারে বাংলাদেশ হারায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মাহেদী হাসানের উইকেট। দুইজনই ইনসাইড এজ হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন। 

৬ ওভারে ৪ ব্যাটসম্যান সাজঘরে

ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী লিটন ও সৌম্য। নিউ জিল্যান্ড সফরে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া নাঈম ভালো কিছুর আশা দেখালেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। মিথুন নিজের উইকেট উপহার দিয়েছেন। ২১১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় পাওয়ার প্লে’তে ৪ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। এ সময়ে রান তুলেছে মাত্র ৪৪।

টিম সাউদির বলে সাজঘরে ফেরেন লিটন (৪)। নাঈম লোকি ফার্গুসনকে চার মারার পর তার বলেই এলবিডব্লিউ হন ২৭ রানে। ১৮ বলে ৫ চারে নাঈম ঝড়ো ইনিংসটি সাজান। ষষ্ঠ ওভারে বোলিংয়ে এসে ইস শোধি তুলে নেন ২ উইকেট। সৌম্যকে (৫) ফিরতি ক্যাচে তালুবন্দি করার পর মিথুনকে বোল্ড করেন শোধি। সুইপ করতে গিয়ে বল মিস করে মিথুন ৪ রানে বোল্ড হন।   

জয়ের জন্য ৭৮ বলে ১৫৮ রান করতে হবে বাংলাদেশকে। 
 

অভিষেকে বিবর্ণ শরিফুল, নাসুম দুর্দান্ত

বল হাতে নাসুম ২ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা। অভিষেক দারুণভাবে রাঙিয়েছেন নাসুম। আরেক অভিষিক্ত শরিফুল সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ডকে সঙ্গী করেছেন। নাসুম ৪ ওভারে ৩০ রানে পেয়েছেন ২ উইকেট। অন্যদিকে শরিফুল ৪ ওভারে দিয়েছেন ৫০ রান। প্রতি ওভারেই হজম করেছেন বাউন্ডারি। বাংলাদেশের হয়ে অভিষেকে সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার রেকর্ডটি এখন তার দখলে। ২০০৯ সালে রুবেল হোসেন ভারতের বিপক্ষে অভিষেকে ৪ ওভারে ৪৯ রান দিয়েছিলেন। 

কনওয়ে-ইয়ংয়ে নিউ জিল্যান্ডের বিশাল সংগ্রহ

৯২ রানে অপরাজিত থাকলেন কনওয়ে। ৫২ বলে ১১ চার ও ৩ ছক্কায় সাজালেন ইনিংসটি। হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া ফিলিপস ৩০ বলে করলেন ৫৩ রান। ৪ মেরেছেন ২টি, ছক্কা ৪টি। দুইজনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে নিউ জিল্যান্ড দুইশর বেশি রান পেলেন। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬০ বলে ১০৫ রান তোলেন এ দুই ব্যাটসম্যান। শেষ দিকে ১০ বলে ২৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন গ্লেন ফিলিপ। ওপেনিংয়ে গাপটিল ২৭ বলে করেন ৩৫ রান। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নিউ জিল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে বিশাল পুঁজি।  

মাহেদীর শিকার ইয়ং

২৮ বলে ফিফটি। অভিষেকেই বাজিমাত ইয়ংয়ের। ডানহাতি ব্যাটসম্যান ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ নাস্তানাবুদ করে দিচ্ছিলেন। ১৭তম ওভারে তাকে ফিরিয়ে মাহেদী হাসান ফিরিয়ে আনেন স্বস্তি। ৩০ বলে ২টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৫৩ রান করে মিড উইকেটে আফিফের হাতে ক্যাচ দেন ইয়ং।

অভিষিক্ত নাসুমের আরেকটি উইকেট

নিজের তৃতীয় ওভারে আরেকটি উইকেট পেলেন অভিষিক্ত নাসুম। এবার তার শিকার মার্টিন গাপটিল। ডানহাতি আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান নাসুমের বলে এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ দেন। গাপটিলকে এগিয়ে আসতে দেখে বল কিছুটা টেনে দিয়েছিলেন নাসুম। টাইমিংয়ে গড়বড় করে গাপটিল ক্যাচ দেন সৌম্যর হাতে। ২৭ বলে ৩৫ রান করে গাপটিল ফেরেন সাজঘরে।

কাঁধের ইনজুরিতে নেই মুশফিক

কাঁধের ইনজুরিতে মুশফিকুর রহিমকে ছাড়া প্রথম টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। জানা গেছে, কাঁধের পুরোনো ইনজুরিতে নতুন করে চোট পেয়েছেন তিনি। শেষ ওয়ানডেতে তাসকিন আহমেদের বল হেনরি নিকোলসের ব্যাটের কানায় গেলে মুশফিকের গ্লাভস ছুঁয়ে বাউন্ডারিতে যায়। ড্রাইভ দিয়ে বল ধরার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু পারেননি। এরপর তাকে অস্বস্তিতে দেখা যায়। ম্যাচের বাকিটা সময় কিপিং চালিয়ে গিয়েছিলেন। নেমেছিলেন ব্যাটিংয়েও। কিন্তু ব্যথা না কমায় প্রথম টি-টোয়েন্টিতে নিজেকে সরিয়ে রেখেছেন মুশফিক। 

নাসুমের প্রথম ওভারেই সাফল্য

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ওভারেই নাসুম আহমেদ পেলেন উইকেটের স্বাদ। তিনি ফিরিয়েছেন নিউ জিল্যান্ডের অভিষিক্ত ওপেনার ফিন অ্যালেনকে।  নাসুমের করা ইনিংসের প্রথম ওভারের প্রথম চার বলে কোনো রান নিতে পারেননি আরেক ওপেনার মার্টিন গাপটিল। পঞ্চম বলে ১ রান নিলে ব্যাটিংয়ে আসেন অ্যালেন। তার স্কিড করা বল ভেঙে যায় ডানহাতি ব্যাটসম্যান অ্যালেনের উইকেট। নাসুমের সাফল্যে অভিষেক রঙিণ হলো না অ্যালেনের। 

বাংলাদেশ একাদশ

লিটন কুমার দাস, নাঈম শেখ, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিথুন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মাহেদী হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, সাইফ উদ্দিন, নাসুম আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম। 

নাসুম, শরিফুলের অভিষেক

প্রথমবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের স্বাদ পেতে যাচ্ছেন নাসুম আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম। নাসুম দীর্ঘদিন ধরে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে আসছেন। তার বাঁহাতি স্পিন সীমিত পরিসরে বেশ কার্যকরী। শরিফুল ২০২০ সালে যুব বিশ্বকাপ জিতেছেন। এরপরই জাতীয় দলের পাইপলাইনে যুক্ত হন।   

নিউ জিল্যান্ড একাদশ

টিম সাউদি (অধিনায়ক), ডেভন কনওয়ে (উইকেটরক্ষক), লকি ফার্গুসন, মার্টিন গাপটিল, ফিন অ্যালেন, হ্যামিশ বেনেট, মার্ক চ্যাপম্যান, ড্যারেল মিচেল, গ্লেন ফিলিপস, ইশ সোধি ও উইল ইয়ং।

টস

টস জিতে নিউ জিল্যান্ডের অধিনায়ক টিম সাউদি ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

নিউ জিল্যান্ড ৭ - ০ বাংলাদেশ

নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশ স্বাগতিকদের বিপক্ষে কখনোই কোনো ম্যাচ জিতেনি। বাংলাদেশ একাধিকবার নিউ জিল্যান্ডের বাইরে তাদেরকে ওয়ানডেতে হারালেও কখনোই টি-টোয়েন্টিতে পারেনি। দুই দলের সাত মুখোমুখিতে বাংলাদেশ হেরেছে প্রত্যেকটিতেই। মাহমুদউল্লাহর দল এবার টি-টোয়েন্টিতে ইতিহাস পাল্টাতে পারে কিনা সেটাই দেখার। 
 

ঢাকা/ইয়াসিন

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়