টিনের বেড়া দিয়ে গভীর নলকূপ বন্ধ, বোরো আবাদ অনিশ্চিত

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে একটি গভীর নলকূপের চারদিকে টিনের বেড়া দিয়ে সেচ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শহিদুল ইসলাম ডন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। নলকূপটির অপারেটর আব্দুল সালাম আকন্দের সঙ্গে পূর্ব শত্রুতার জেরে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন তিনি।

এদিকে সৃষ্ট জটিলতার কারণে চলতি বোরো মৌসুমে ওই নলকূপের আওতায় থাকা ১৩০ বিঘা জমিতে সেচ দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে বরো আবাদ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন শতাধিক কৃষক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কৃষকদের আত্মনির্ভশীলের লক্ষ্যে সাদুল্লাপুর উপজেলা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্র্তপক্ষ গোপালপুর মৌজাস্থ সরকারি সম্পত্তিতে একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করে। এতে অপারেটর হিসেবে নিয়োগ পান গোপালপুর গ্রামের মৃত তছির উদ্দিন আকন্দের ছেলে আব্দুল সালাম আকন্দ। এরপর থেকেই গভীর নলকূপের পানিতে জমি সেচ দিয়ে ফসল ফলাতে শুরু করেন সেখানকার কৃষকরা। এতে অধিক ফসল পেয়ে লাভবান হতে শুরু করেন চাষিরা। 

এদিকে নলকূপটির কাছেই রয়েছে একই গ্রামের মৃত খেতাব উদ্দিনের ছেলে শহিদুল ইসলাম ডনের জমি। সালাম আকন্দের সঙ্গে শত্রুতার জেরে গভীর নলকূপটির চারদিকে টিনের বেড়া দিয়ে সেচ বন্ধ করে দেন শহিদুল। এ কারণে আটকে গেছে সেচ কার্যক্রম। ফলে বিপাকে পড়েছে অপারেটর সালামসহ শতাধিক কৃষক। ইতোমধ্যে বোরো আবাদের জন্য কৃষকরা প্রায় ১৩০ বিঘা জমি প্রস্তুত করলেও হঠাৎ সেচ কার্যক্রম বন্ধ হওয়া থমকে গেছে চারা রোপণের কাজ। 

স্থানীয় কৃষক মোজাহার মিয়া, আবুল হোসেন ও আশরাফ আলী জানান, ওই নলকূপটি স্থাপনের পর থেকে এখানকার শত শত কৃষক তাদের জমিতে সেচ দিয়ে অধিক ফলন ঘরে তুলতে পেরেছেন। এতে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এ বছরেও বোরো আবাদের জন্য জমি প্রস্তুতসহ চারা উৎপাদন করা হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে শহিদুল ইসলাম ডন নলকূপের চারপাশে টিনের বেড়া দিয়ে সেচ কার্যক্রম জোর করে বন্ধ করে দিয়েছেন। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বোরো আবাদ করতে না পারার দুশ্চিন্তা ঘিরে বসেছে চাষিদের মনে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম ডন বলেন, ‘স্থাপিত ওই গভীর নলকূপের জায়গাসহ পাশের জমি আমার। তাই আমার জায়গায় আমি ঘিরা দিয়েছি। এতে করে সেচ কার্যক্রম চলবে কিনা সেটি আমার দেখার বিষয় নয়।’

গভীর নলকূপটির অপারেটর আব্দুল সালাম আকন্দ বলেন, ‘নলকূপের ২ শতক জায়গা সরকারের। কৃষকদের স্বার্থে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্র্তপক্ষ সেখানে গভীর নলকূপ স্থাপন করেছে। কিছুদিন ধরে শহিদুল ইসলাম ডনের সঙ্গে আমার পারিবারিক দ্বন্দ চলছে। এরই জেরে নলকূপটির চারপাশে টিনের বেড়া দিয়ে সেচ বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। ফলে কৃষকরা পানির অভিাবে জমিতে সেচ দিতে পারছেন না। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে কৃষকরা।’ 

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাদুল্লাপুর জোনের কর্মকর্তা আবুল বাশার বলেন, ‘নলকূপটি বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’