দেশে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণে দ্বিতীয় খুলনা বিভাগ
মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম
প্রতীকী ছবি
দেশে অ্যান্টিবায়োটিকের অতিব্যবহার ও অপপ্রয়োগ বাড়ছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের তথ্য অনুযায়ী, খুলনা বিভাগের ৮১ শতাংশ রোগী অতিমাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করছেন। ফলে উপকারী ব্যাকটেরিয়া মারা যাচ্ছে।
দেশে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের দিক দিয়ে খুলনা বিভাগ দ্বিতীয় স্তরে রয়েছে। ময়মনসিংহ বিভাগের রোগীদের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের হার সবচেয়ে বেশি।
জানা যায়, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া পল্লী চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন ও ফার্মেসী মালিকদের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করে থাকেন রোগীরা। সামান্য জ্বর ও সর্দি কাশিতেও অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। বিশেষ করে শিশুদের ওপর এর প্রয়োগ সবচেয়ে বেশি।
এ প্রসঙ্গে খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মো. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘অতিমাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের ফলে লিভার ও কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। রোগীর পরিবারের অর্থ অপচয় হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে অল্প বয়সী রোগীদের স্বাস্থ্যহানি ঘটছে।’
খুলনা মেডিকেল কলেজের ডা. অপু বলেন, ‘অতিমাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারের ফলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। সামান্য সর্দি, জ্বরেও রোগী যখন অতিমাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করছেন, পরবর্তীতে তার শরীরে অনেক ওষুধ কাজ করছে না। ক্ষেত্র বিশেষ রোগ নির্ণয় করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’
খুলনার গাজী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. বঙ্গকমল বসু বলেন, ‘অ্যান্টিবায়োটিকের অতিমাত্রায় ব্যবহারে জীবাণু প্রতিরোধ করার জন্য হাতের অস্ত্র কমে আসছে। জীবাণুর দৌরাত্ম্য বাড়ছে।’
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জি এম শাফাত আল দ্বীন বলেন, ‘চিকিৎসা ব্যবস্থা সঠিক কাঠামোতে নেই। মেডিকেলের সঠিক জ্ঞানের অভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার হচ্ছে। ফলে রোগ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা হারিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য অতি ব্যবসায়ী মানসিকতার চিকিৎসক ও ওষুধ প্রস্তুত কোম্পানি দায়ী।’
বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আবু ঈসা নুর বলেন, ‘মাত্রাতিরিক্ত ও কম ডোজের অ্যান্টিবায়োটিকের কারণে উপকারী ব্যাকটেরিয়া মারা যাচ্ছে। ফলে সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।’
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিকেলর অফিসার ডা. আহমাদ হোসাইন বলেন, ‘পল্লী চিকিৎসক ও ফার্মেসী মালিকের পরামর্শে রোগীরা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করছে। এতে উপকারী ব্যাকটেরিয়া মারা যাচ্ছে। পরবর্তীতে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারে রোগীর কোনো কাজ হচ্ছে না।’
কেআই
আরো পড়ুন