ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে নজর দিন: সিপিডি

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩৮, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ২২:৪১, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে নজর দিন: সিপিডি

দেশকে পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠোন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ‘বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা বর্জন: সরকারি উদ্যোগ ও কতিপয় সুপারিশ’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ পরামর্শ দেওয়া হয়। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় মিডিয়া ব্রিফিংয়ে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। এ সময় সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন ।

সরকার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে সরে গিয়ে এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে উল্লেখ করে সিপিডি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে গেলে কয়লাভিত্তিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে সরে আসার যে উদ্দেশ্য তা বাস্তবায়ন হবে না। পরিবেশ দূষণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সরকারের এখনই নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে সরে এসে বিকল্প পদ্ধতি নেওয়ার জন্য একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ২২টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এসব প্রকল্প থেকে ২৩ হাজার ২৩৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা ছিল। এগুলোর নির্মাণ কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। এগুলোতে নতুন করে বিনিয়োগে যাওয়া হবে না, এটি সরকারের অভ্যন্তরীণ অবস্থান। এ রকম একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়কে আমরা বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই।

এ গবেষক বলেন, সরকারের পুরো ব্যাপারটিকে সাধুবাদ জানাতে পারতাম, যদি কয়লা থেকে এটিকে সম্পূর্ণভাবে ক্লিন এনার্জি যেটাকে আমরা বলি নবায়নযাগ্য জ্বালানিতে যাওয়ার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো।

তিনি বলেন, আমরা জানতে পেরেছি সরকারের ভেতরে এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনার কথা বলা হচ্ছে। এ জায়গাটাতে আমাদের যথেষ্ট আপত্তি রয়েছে। আপত্তি থাকার কারণ এর ফলে সরকারের পরিবেশ দূষণ থেকে সরে আসা অথবা ক্লিন এনার্জিতে যাওয়ার যে নীতিগত অবস্থান, সেটি এর মাধ্যমে প্রকাশ পায় না। সুতরাং সরকারের এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় কয়লার পরিবর্তে কীভাবে সৌরভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়া যায়।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিজ্ঞানী নই, তারপরও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি এলএনজির পরিবেশ দূষণের মাত্রা প্রায় কয়লার সমান। সুতরাং এটাকে পরিবেশ দূষণমুক্ত ভাবার সুযোগ নেই।

এক প্রশ্নের জবাবে ড.খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, প্রত্যাশিত বেসরকারি বিনিয়োগ না হওয়ার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন মাত্রাতিরিক্ত হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি বিনিয়োগের সহায়ক সরকারি যেসব বিনিয়োগ যেখানে বিদ্যুতের চাহিদা সৃষ্টি হবে, সেটিও সময় ধরে শেষ করা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সরকারের নীতি অবস্থানকে গুরুত্ব দেন। যখন তারা দেখতে পান সরকারের মাস্টারপ্ল্যানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রাধিকারের জায়গায় নেই, ও রকম একটি নীতিকাঠামোতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা কখনো উচ্চবিনিয়োগ প্রকল্প নিয়ে আসার বিষয়ে আগ্রহ দেখান না।

কয়লাভিত্তিক প্রকল্প থেকে সরে এলে ইতোমধ্যে এ খাতে যে বিনিয়োগ হয়েছে তা অপব্যবহার হবে কি-না? এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রকল্পগুলো বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। অনেকগুলোর জমি উন্নয়নের কাজ হয়েছে। আমরা মনে করি জমির উন্নয়ন হয়ে গেলে সেখানে খুব সহজে নবায়নযোগ্য জ্বালানির কাজ করা সম্ভব।

হাসনাত/এসএম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়